রাজ্যের খবর

আবেগকে মর্যাদা দুদেশের, ভাইয়ের শেষ ইচ্ছা পূরণে সহযোগিতা দুপারের রক্ষীদের

Cooperation of the two countries to fulfill the last wish of the brother

Truth of Bengal: ভাই এপার বাংলার বাসিন্দা, আর বোন ওপারে থাকেন। মৃত্যুর সময় ভাই ইচ্ছেপ্রকাশ করেন,তাঁর বোন যেন একবার এসে দেখা করেন। ভাইয়ের সেই শেষ ইচ্ছেপূরণ করল দুদেশের সীমান্ত রক্ষীরা। বিএসএফের কাছে সবকিছু জানার পর বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ এগিয়ে আসে। বিএসএফ সীমান্তে মাটিয়ারির শরিফুল মণ্ডলের দেহ নিয়ে যাওয়া হয়। সেসময়  ওপারে হাজির ছিলেন তাঁর বোন। শেষবারের মতো ভাইকে দেখতে পান বোন। কাঁটাতারের বেড়া সত্ত্বেও সম্পর্ক রক্ষায় দুদেশের রক্ষীরা এগিয়ে আসায় ইচ্ছেপূরণ হল শরিফুলের।

কাঁটাতার,সীমান্তরেখা, সবকিছুকে ছাপিয়ে ভাই-বোনের সম্পর্কই শেষকথা বলল। আর মানবিক কারণে মৃত ভাইয়ের শেষ ইচ্ছাকে সম্মান দিল দুই দেশের বাহিনী। উল্লেখ্য্, বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতির জন্য ওপার থেকে এপারে আসার সুযোগ পাননি বোন। তাই ভাই যখন অসুস্থ হয়ে পড়েন তখন তিনি শেষবারের মতো ইচ্ছে প্রকাশ করেন, যেন তাঁর বোন একবার তাঁকে দেখে যায়। কিন্তু এখনও ওপার থেকে এপারে আসার জন্য সমস্যা রয়েই গেছে। তাই দুইপারে মানুষের শিকড়ের সম্পর্ক বজায় রাখা সমস্যার হচ্ছে।

এরকমই এক পরিস্থিতির মুখোমুখি হন মাটিয়ারির শরিফুল মণ্ডল। তাঁর বোন বাংলাদেশে থাকলেও এপারে আসতে পারেননি। এমনকি পাসপোর্ট না মেলায় কোথায় যেন তাঁর বোনকে বেদনা বয়ে বেড়াতে হয়। তবে শরিফুলের শেষইচ্ছের কথা জানতে পেরে এদেশের সীমান্ত রক্ষীরা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়। তড়িঘড়ি তাঁর দেহ নিয়ে যাওয়া হয় সীমান্তে। সেখানে বোনকে তাঁর ভাইকে চাক্ষুষ দেখতে দেওয়ার সুযোগ করে দেওয়া হয়।

বিএসএফ সূত্রে খবর, মাটিয়ারীর পঞ্চায়েত সদস্য খোকন মন্ডল বিএসএফের ৩২ ব্যাটালিয়ন সীমান্ত ফাঁড়ির কোম্পানি কমান্ডারকে জানান যে শরিফুল মন্ডল মাটিয়ারী গ্রামের বাসিন্দা। তিনি বিএসএফের কাছে অনুরোধ করেন যে মৃত ভাইয়ের ইচ্ছা ছিল তার বোন মৃত্যুর পর যেন একবার যেন তাঁর বোন এসে দেখে যান। শরিফুলের পরিবারের সদস্য ও পঞ্চায়েত সদস্যের কথা শোনার পর কোম্পানি কমান্ডার মানবিক দিক দিয়ে বিবেচনা করে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।

বিএসএফের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে বিজিবিও মানবিক দৃষ্টিভঙ্গির কথা মাথায় রেখে এগিয়ে যায়। উভয় দেশের সীমান্ত নিরাপত্তা বাহিনী, মানবিক দিক বিবেচনা করে সেই ইচ্ছেপূরণ করে। শ্রী এ. কে. আর্য, ডিআইজি, দক্ষিণবঙ্গ সীমান্তের, বিএসএফের জনসংযোগ আধিকারিক সামাজিক ও মানবিক মূল্যবোধের প্রতি বাহিনীর প্রতিশ্রুতি তুলে ধরেন। তিনি জোর দেন, যে দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিএসএফ সদস্যরা দিনরাত সীমান্তে মোতায়েন রয়েছে এবং সীমান্ত জনগণের মানবিক সমস্যায় সর্বদা এগিয়ে আসে। তাই মানবিকতা ও সৌজন্যের এই নজির দেখে আপ্লুত সীমান্তের বাসিন্দারা।

Related Articles