
The Truth of Bengal: চারিদিকে ঘন জঙ্গলের মধ্যে একাধিক মন্দিরের সমারোহে গঠিত গ্রাম বীরভূমের গণপুর। গুণপুরে পাওয়া যায় নানা সমৃদ্ধশালী মন্দিরের নিদর্শন। এই গ্রামে প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ টির মত নিখুঁত কারুকার্য পূর্ণ মন্দির রয়েছে। বীরভূমে আর অন্য কোন গ্রামে এত মন্দির নেই। মধ্যযুগের শেষ পর্বে নির্মিত হয়েছিল এই গ্রাম। এই গ্রামে রয়েছে এক প্রাচীন কালী মন্দির। এক সময় গণপুর ছিল লোহা নিষ্কাশনের কেন্দ্র। সেই সময় এখানে থাকা চৌধুরী বংশ এই লোহা নিষ্কাশনের ব্যবসায় জনপ্রিয়তা লাভ করেন । লোক মুখে শোনা যায় দুর্ভিক্ষের সময় এই গ্রামে থাকা গ্রামবাসীদের খাওয়ারের জোগান দিতেন এই চৌধুরী বংশ। এই গ্রামের পূর্বদিকে ৭ টি পশ্চিমে ৫ টি এবং উত্তরে ৩ টি মন্দির শিব মন্দির ও একটি দোলমঞ্চ রয়েছে।
আনুমানিক ১৭৬৭ থেকে ১৭৭৯ সালের মধ্যে নির্মিত হয় মন্দিরগুলি। ১১৭৬ বগাব্দে নির্মিত হয়েছিল আরও এক মন্দিরের নাম বিষ্ণু মন্দির। এই আট চালা মন্দির মঙ্গল পরিবার নির্মিত করেন। ইটের তৈরি এই মন্দিরের নকশা দেখার মত। দেওালের গায়ে চিত্র নকশা দেখে মনে হবে কোন গল্প রচিত হয়েছে। দুর্গা মহিষাসুর মর্দিনীর গল্প, রাম রাবনের যুদ্ধ, কার্ত্তিক গণেশ, কৃষ্ণলীলা ও অন্যান্য দেব দেবী এবং যোদ্ধাদের প্রতিকৃতির অলংকরণ করা রয়েছে এখানে। এছাড়াও গ্রামের আরও ভিতরের দিকে রয়েছে আরও ছয়টি সাদা শিব মন্দির।
যা চৌধুরী বংশের আমলে নির্মিত হয়েছিল। এই শিব মন্দির গুলির স্থাপত্য ভাস্কর্য অনবদ্য। ফুল পাথরের শিব মন্দিরের পাশে রয়েছে অশ্বত্থ গাছ। তার তলায় কৃষ্ণ শিলামূর্তি রয়েছে। জায়গাটি ভৈরব তলা হিসাবে পরিচিত। ফুল পাথরের অসামান্য অলঙ্করণে গণপুরের সমস্ত মন্দিরের শোভা আরও বাড়িয়ে তুলেছে। এখানে গেলে দেখতে পাবেন একটি পিতলের রথ। এই গ্রামে যেতে গেলে আপনাকে যেতে হবে সিউড়ি। সিউড়ি থেকে ২৮ কিমি দূরে মোহম্মদ বাজার অন্তর্গত জঙ্গলে ঘেরা গ্রাম গণপুর। সিউড়ি থেকে গাড়ি করে পৌঁছে যান গণপুরে।