ব্যথা-বেদনাহীন শান্তির মৃত্যু! প্রথমবার ‘সুইসাইড পড’ ব্যবহার করে স্বেচ্ছামৃত্যু
Death of pain-free peace! Voluntary death using 'suicide pod' for the first time

Truth Of Bengal: এক মিনিটেরও কম সময়ে ব্যথা ও বেদনামুক্ত শান্তিপূর্ণ মৃত্যু দেওয়া এক যন্ত্র সুইজারল্যান্ডে প্রথমবারের মতো ব্যবহৃত হয়েছে। আর তারপরেই শুরু হয়েছে বিপত্তি! এই ঘটনায় সুইস পুলিশ চারজন ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে।
সুইজারল্যান্ড-জার্মানি সীমান্তের কাছে শ্যাফহাউসেন পুলিশ জানাচ্ছে, গত সোমবার একটি মাঠে ‘সুইসাইড পড’ স্থাপন করা হয়েছিল। সেই যন্ত্রটি প্রথমবারের মতো ব্যবহার করা হয়। ওই দিন, এক ৬৪ বছর বয়সী আমেরিকান মহিলা সেই যন্ত্রের সাহায্যে স্বেচ্ছামৃত্যু গ্রহণ করেন। এরপর, আত্মহত্যার প্ররোচনা ও সহায়তা দেওয়ার অভিযোগে চারজন গ্রেফতার হন, যাদের মধ্যে ওই যন্ত্রের সহ-নির্মাতা সংস্থার সহ-সভাপতি ফ্লোরিয়ান উইলেট, এক ডাচ সাংবাদিক, এবং দুই সুইস নাগরিক অন্তর্ভুক্ত। অভিযোগ অনুযায়ী, ওই মহিলার মৃত্যুর সময় শুধুমাত্র ফ্লোরিয়ান উপস্থিত ছিলেন।
সুইজারল্যান্ডের স্বাস্থ্য মন্ত্রী এলিজাবেথ বাউমে-শ্লেইডার সোমবার বলেছেন যে, এই যন্ত্রটি পণ্য সুরক্ষা আইনের আবশ্যিক শর্তাবলী পূরণ করে না এবং এতে নাইট্রোজেনের ব্যবহার আইনত অনুমোদিত নয়। অবশ্য, ‘সুইসাইড পড’ নির্মাতা সংস্থাটি এই অভিযোগ নাকচ করেছে, দাবি করেছে যে তাদের যন্ত্রের ব্যবহারের জন্য তারা আগেই আইনি অনুমতি পেয়েছিল।
আসুন জেনে নেওয়া যাক কি এই সুইসাইড পড?
কফিনের মতো দেখতে গোল আকৃতির এই যন্ত্রটির নাম সারকো পড ক্যাপসুল। এই যন্ত্রটির প্রাথমিক প্রটো টাইপ তৈরি করা হয় ২০১৯ সালে। ২০২১ সালে এটি ব্যবহারের ক্ষেত্রে আইনি ছাড়পত্র পায়। আদতে ছোট্ট ক্যাপসুল আকৃতির এই যন্ত্রটি আপনি বহন করতেও সক্ষম। আপনি প্রয়োজন অনুযায়ী সর্বত্রই নিয়ে যেতে পারবেন এই সারকোকে। মূল মেশিন থেকে এটিকে আলাদা করলে অনেকটা কফিনের মতো দেখতে লাগে। নিমেষে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়তে এই কফিনে একবার শুয়ে পড়লেই যথেষ্ট। কৃত্রিম উপায়ে অক্সিজেন এবং কার্বন-ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা রয়েছে এই যন্ত্রটিতে। আত্মহত্যা করতে ইচ্ছুক কোন ব্যক্তি এই কফিনে ঢুকে একটি নির্দিষ্ট বোতাম টিপলেই নাইট্রোজেনে ভরে যায় ক্যাপসুলটি। এর ফলে ক্যাপসুলের ভিতরে অক্সিজেনের পরিমাণ কমে আসায় প্রথমে অস্বস্তি বোধ করলেও ধীরে ধীরে জ্ঞান হারান ওই ব্যক্তি। এর কিছুক্ষণ পরেই হাইপোক্যাপনিয়া এবং হাইপোক্সিয়ায় মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন ওই ব্যক্তি।
অবাক হলেও সত্যি, সুইৎজ়ারল্যান্ডে নাগরিকদের আত্মহত্যার অধিকার আছে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, সেখানে আত্মহত্যা প্রায় নিয়মিত ঘটে এবং আইনত সহায়তা করা বৈধ। ২০২০ সালে প্রায় ১৩০০ জনকে এই ধরনের সহায়তা করা হয়েছে। অন্যদিকে, ভারতে স্বেচ্ছামৃত্যু, আত্মহত্যায় সহায়তা বা ইউথেনেশিয়া এখনও আইনত অপরাধ বলে গণ্য হয়।