কলকাতা

‘সুইটি’ কিংবা ‘বেবি’ সবসময়ই যৌনতাবাদী মন্তব্য নয়: কলকাতা হাইকোর্ট

The Truth Of Bengal: কর্মক্ষেত্রে মহিলাদের ‘সুইটি’ কিংবা ‘বেবি’ বলা মানেই তাঁকে যৌন হেনস্থা করা হচ্ছে কিংবা এতে কোনও প্রকার তাঁকে যৌনতা সম্পর্কিত মন্তব্য করা হচ্ছে এমনটা নয়! বলেই দাবী করছেন কলকাতা হাইকোর্ট। বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য দ্বারা একটি যৌন হেনস্থার অভিযোগে মামলা চলাকালীন এই কথাই তুলে ধরেন। তিনি এদিন এও বলেন যে, এভাবেই যদি কাজের জায়গায় ক্রমশ যৌন হেনস্থার মতো অভিযোগ গুলির ব্যবহার দিনের দিন ভুল ব্যবহারে বাড়তে থাকে, তবে মহিলাদের জন্য সমাজে আরও ভুল বার্তা যাবে সঙ্গে পুরুষ ও নারীর মধ্যে একটা সূক্ষ্ম কাঁচের দেওয়ালের উৎপত্তি হবে।

এদিন এক মহিলার দ্বার তাঁর অফিসের সিনিয়র (পুরুষ) এর প্রতি যৌন হেনস্থার অভিযোগের ভিত্তিতেই শুনানি চলাকালীন এই মন্তব্য সামনে নিয়ে আসেন বিচারপতি। মহিলাটির অভিযোগ ছিল, সিনিয়র তাঁকে ‘সুইটি’ ও ‘বেবি’র মতো শব্দ গুলির ব্যবহারে উত্ত্যক্ত করতেন এবং নানান ভাবে যৌন হেনস্থার শিকার শিকার হতেন। তাছাড়াও সিনিয়র এর কথা বার্তাও তাঁর কাছে যৌনতা সম্পর্কিত মনে হত। যদিও যে সিনিয়র এর বিরুদ্ধে এই অভিযোগ তিনি বিষয়টিকে অস্বীকার করেন এবং জানান যে, তিনি কখনওই তাঁর সঙ্গে মহিলা যেভাবে বিষয়টিকে ভাবছেন সেভাবে কথা বলেননি। এবং তিনি এও বলেন যে, যখন মহিলাটি তার কথা বলার ধরনের ওপর অস্বস্তি প্রকাশ করেন তারপর থেকে এই ধরনের শব্দ ব্যবহার বন্ধ করে দেন। সঙ্গে অফিসের অন্যান্য সহকর্মীরা পূর্বে অভিযোগকারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন, সেক্ষেত্রে সিনিয়র এর বিরুদ্ধে এই মামলাকে কেবল নিজেকে বাঁচানোর কৌশল হিসেবেই দেখেন বিচারক।

যদিও কিছু ক্ষেত্রে কখনও কোন পুরুষ এই শব্দ গুলি ব্যবহারে যৌন হেনস্থা ক্ষেত্রে ব্যবহার করে থাকেন তবে সব ক্ষেত্রেই যে এটি যৌন হেনস্থার জন্য ব্যবহার করা হবে এমনটা নয়। উল্লেখযোগ্যভাবে, আদালত এদিন নিজের উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যে POSH আইনের অপব্যবহার মহিলাদের সুরক্ষার পরিবর্তে তাদের বিরুদ্ধে কাজ করতে পারে। ঘটনার পেছনে সঠিক প্রমাণ যদি না থাকে বিচার একজন বিচারক নিরীহকে দোষী সাব্যস্ত করে দিতে পারেন। যা কার্যত ভারতের মতো দেশে উচিত নয়।

এদিন অভিযোগকারীর পক্ষে ছিলেন আইনজীবী প্রমিত বাগ ও আমানি কায়ান। কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ধীরাজ ত্রিবেদী এবং অরুণাভা গাঙ্গুলী।

Related Articles