lok sabha election 2024: মরুরাজ্য রাজস্থানে জোর লড়াইয়ে NDA বনাম INDIA
lok sabha election 2024: NDA Vs INDIA in fierce battle in desert Rajasthan

The Truth of Bengal: কেন্দ্রের সরকার ঠিক করতে সাত দফায় নেওয়া হবে দেশের মানুষের রায়। বিজেপি ও কংগ্রেসের মতো বড় দলগুলি তো আছেই, প্রতিটি রাজ্যে নিজেদের মতো করা ঘুঁটি সাজাচ্ছে আঞ্চলিক দলগুলিও। তবে রাজস্থান এমন একটি রাজ্য, যেখানে মূল লড়াই কংগ্রেস ও বিজেপির মধ্যে। কয়েকমাস আগে এই রাজ্যে হওয়া বিদাহ্নসভা নির্বাচনে পালাবদল হয়েছে। কংগ্রেসকে হারিয়ে ক্ষমতা দখল করেছে বিজেপি। তবে রাজ্য জয় করলেও খুব একটা স্বস্তিতে নেই বিজেপি। ভোট শতাংশের হিসেবে কংগ্রেসেরসঙ্গে বিজেপির ব্যবধান মাত্র ২। তাই আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেস ও বিজেপির মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হতে চলেছে। ভারতের সবচেয়ে দর্শনীয় রাজ্যগুলির মধ্যে অন্যতম হল রাজস্থান। এই রাজ্যটি সমৃদ্ধ সংস্কৃতি, রাজপ্রাসাদ, সুউচ্চ দুর্গ এবং গৌরবময় ইতিহাসের জন্য সুপরিচিত। রাজপুত সংস্কৃতির পীঠস্থান। একটা সময় রাজপুত যোদ্ধাদের ক্ষেত্র ছিল এই রাজস্থান। গোলাপী শহর থেকে প্রাসাদ, বিশাল দুর্গ, চকচকে বাজার এবং সুস্বাদু খাবার রয়েছে।
রাজস্থানের রাজধানী জয়পুরকেই বলা পিঙ্ক সিটি। হাওয়া মহল, সিটি প্যালেস, আম্বার ফোর্ট, জয়পুরের নাহারগড় দুর্গ, এবং জয়গড় দুর্গ। কী নেই এই রাজ্যে। সবদিক থেকে অত্যন্ত সমৃদ্ধ দেশের পশ্চিমের এই মরু রাজ্য। রাজস্থান উৎসব ও মেলার দেশ, হোলি, দীপাবলি, বিজয়াদশমী, বড়দিন ইত্যাদি জাতীয় উৎসব ছাড়াও দেব-দেবী, সাধুসন্তদের নিয়ে মাতামাতি হয়। রাজনৈতিক দিক থেকেও রাজস্থান কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। রাজস্থানে সাধারণত পাঁচ বছর অন্তর সরকার বদল হয়। এবার অশোক গেহলটকে সামনে রেখে সেই প্রথা ভাঙতে চেয়েছিল কংগ্রেস। শচীন পাইলটের সঙ্গে দ্বন্দ্বে কংগ্রেস হাইকমান্ড পাশে ছিল গেহলটের। কিন্তু, তাতে শেষ রক্ষা হয়নি। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে হওয়া বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসকে হারিয়ে রাজ্যের শাসক ক্ষমতা ফিরে পায় বিজেপি। অর্থাৎ ৫ বছর অন্তর পালা বদলের ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি হয়।
১৯৯৮ সাল থেকে কোনও রাজনৈতিক দল রাজস্থানে ক্ষমতা ধরে রাখতে পারেনি। তারপর থেকে রাজ্যটি কেবল দুই মুখ্যমন্ত্রীকে দেখেছে। কংগ্রেসের অশোক গেহলট এবং ভারতীয় জনতা পার্টির বসুন্ধরা রাজে সিন্ধিয়া। একবার গেহলট তো পরেরবার বসুন্ধরা— দু’জন পালা করে মুখ্যমন্ত্রীর পদ অলঙ্কৃত করে এসেছেন। রাজস্থানে এবার আর বসুন্ধরা রাজেকে মুখ্যমন্ত্রী করা হয়নি। বদলে বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী করেছে ভজনলাল শর্মাকে। বিধানসভা নির্বাচনে ১৯৯টি আসনের মধ্যে বিজেপি একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায় ১১৫টি আসন জিতে। অন্যদিকে কংগ্রেস পায় ৬৯টি আসন। তবে অনেকগুলি সিটের ব্যবধান থাকলেও বিজেপি ও কংগ্রেসের মধ্যে ভোটের শতাংশের ফারাক খুব একটা বেশি হয়নি। বিজেপি পায় ৪১.৭৮ শতাংশ ভোট। অন্যদিকে কংগ্রেস পায় ৩৯.৫২ শতাংশ ভোট। ব্যবধান মাত্র ২ শতাংশ। বিজেপি বনাম কংগ্রেসের মূল লড়াই হলেও ছোট দলগুলিও হাতে গোনা কয়েকটি আসন পায়। ভারত আদিবাসী পার্টি তিনটি এবং বহুজন সমাজ পার্টি দুটি আসন যেতে। রাষ্ট্রীয় লোকতান্ত্রিক দল এবং রাষ্ট্রীয় লোকদল একটি করে এবং নির্দল প্রার্থীরা আটটি আসনে জেতেন। বেশ কয়েকটি আসনে খুব অল্প মার্জিনে জেতেন বিজেপি প্রার্থীরা। বিরোধী ভোট সেখানে ভাগ না হলে বিজেপির অনুকূলে ফল ভাল হতো না।
২০১৯ সালের নির্বাচনে ২৫টি আসনের মধ্যে ২৪টি জিতেছিল বিজেপি।
একনজরে দেখে নেবো
২০১৯ সালের লোকসভার ফলাফল
রাজনৈতিক দল আসন প্রাপ্ত ভোট শতাংশ
বিজেপি ২৪ ৫৮.০৫
কংগ্রেস ০০ ৩৪.০২
আরএলপি ০০ ০২.০১
আগেরবার খুব ভাল ফল করলেও আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে খুব একটা স্বস্তিতে নেই বিজেপি। কারণ কয়েকমাস আগে হয়ে যাওয়া বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি অনেকগুলি বেশি আসন পেলেও কংগ্রেসের থেকে খুব বেশি বাড়াতে পারেনি ভোটের ব্যবধান। সেই সময় সদ্য গড়ে ওঠা ইন্ডিয়া জোটের খুব একটা প্রভাব পড়েনি। মূলত কংগ্রেসের একক প্রচেষ্টায় লড়ার কারণে অনেকগুলি আসনে ভোট ভাগ হয়ে গিয়েছিল। যার ফায়দা পেয়েছিল বিজেপি। লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেস ঐক্যবদ্ধ লড়াই দিতে পারলে ভাল ফল হতে পারে ইন্ডিয়া জোটের।