গঙ্গাসাগর মেলাকে জাতীয় মেলার স্বীকৃতি দেওয়া হোক
Gangasagar Mela should be recognized as a national fair

Truth of Bengal: কথায় আছে ‘সব তীর্থ বারবার গঙ্গাসাগর একবার’। পুণ্যস্নানের জন্য প্রতিবছর লাখ লাখ মানুষ গঙ্গাসাগর আসেন। মকর সংক্রান্তির সময় সেই গঙ্গাসাগর চত্বর হয়ে ওঠে কার্যত মিনি ভারতবর্ষ। ভিড় ও কৌলিন্যের নিরিখে গঙ্গাসাগর মেলার অবস্থান কুম্ভ মেলার ঠিক পরেই।
যে বছর কুম্ভমেলা থাকে না, সেই বছর গঙ্গাসাগরে ভিড় বেড়ে যায় কয়েক গুণ। এই গঙ্গাসাগর মেলায় পৌঁছনো একসময় কঠিন নয় কার্যত দুরূহ ছিল পুণ্যার্থীদের কাছে। তাও পুণ্যার্জনের টানে অনেক কষ্ট সহ্য করে গঙ্গাসাগর মেলা যেতেন গোটা দেশের পুণ্যার্থীরা। গঙ্গাসাগর মেলার সেই ছবি এখন অতীত।
রাজ্যের শাসন ক্ষমতায় আসার পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথম থেকেই উদ্যোগী হন গঙ্গাসাগর মেলার সার্বিক পরিস্থিতি বদলাতে। তাঁর সেই নিরলস চেষ্টায় আজ গঙ্গাসাগর মেলা ঝা চকচকে হয়েছে। আধুনিক ব্যবস্থাপনায় এখন আর খুব একটা কষ্ট সহ্য করতে হয় না পুণ্যার্থীদের।
এখন কলকাতা থেকে খুব সহজেই পৌঁছনো যায় সাগরদ্বীপে। এক দশক আগে যে গঙ্গাসাগরে রাত কাটানো ছিল কঠিনতম কাজ। উন্মুক্ত আকাশের নীচে হোগলা পাতার ঘরে রাত্রিযাপন। সেখানেই অস্থায়ী উনুনে রান্নাবান্না। হাড় কাঁপানো শীতে কার্যত জেরবার হয়ে যেতেন পুণ্যার্থীরা। বদল এসেছে এই চিত্রেও।
রাজ্য সরকার তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিকল্পনায় নতুন সাজে সেজে ওঠা গঙ্গাসাগর এখন আর শুধুমাত্র বাৎসরিক পুণ্যভূমি নয়। গোটা বছরের ছুটি কাটানোর আদর্শ জায়গা হয়ে উঠেছে। ‘সব তীর্থ বারবার গঙ্গাসাগর একবার’– এই কথাটি এখন অন্যভাবে বলা যায়। সব তীর্থ বারবার গঙ্গাসাগর বহুবার।
এখন এই কথা বললে বিন্দুমাত্র অত্যুক্তি হবে না। এত বড় একটি মেলা আয়োজনের পরিকাঠামো সহ যাবতীয় ব্যবস্থা করে থাকে রাজ্য সরকার। নতুন তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগত পুণ্যার্থীদের জন্য তীর্থকর মুকুব করে দিয়েছিলেন। যেটা সরকারের উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে।
সাগর মেলায় কোনও পয়সা দেয় না কেন্দ্রীয় সরকার। সব খরচ রাজ্য সরকার নিজে করে। জাতীয় মেলার স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি উঠলেও, সেই স্বীকৃতি দেয়নি কেন্দ্রীয় সরকার। কেন্দ্রের সরকার কুম্ভমেলা নিয়ে আগ্রহ দেখায়। সেখানে উপেক্ষিত গঙ্গাসাগর মেলা। যেখানে গোটা ভারতবর্ষ মিলিত হয়, সেই গঙ্গাসাগর মেলাকে কেন দেওয়া হবে হবে না জাতীয় মেলার স্বীকৃতি?