লাইফস্টাইল

চুলের যত্নে কুমড়োর দানা

Pumpkin seeds for hair care

The Truth of Bengal, Mou basu : স্বাস্থ্যোজ্জ্বল চুলের কামনা সবাই করে। স্বাস্থ্যোজ্জ্বল চুল পেতে বাজারচলতি রাসায়নিক নয়, ভরসা থাকুক প্রাকৃতিক উপাদানেই। সাধারণত, আমরা কুমড়োর দানা ফেলে দিই। কিন্তু জানেন কি?  এই ছোট্ট কুমড়োর দানাতেই লুকিয়ে রয়েছে স্বাস্থ্যোজ্জ্বল চুলের গোপন রহস্য।

  • কুমড়োর দানায় প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, বি, সি ও দস্তা, ক্যালশিয়াম, সেলেনিয়াম, লোহা, ম্যাগনেশিয়াম, ফসফরাসের মতো খনিজ পদার্থ পাওয়া যায় যা চুলের বৃদ্ধির জন্য জরুরি। স্কাল্পে সেবাম তৈরিতে ও তৈলাক্ত ভাব বজায় রাখতে সাহায্য করে দস্তা।
  • লোহা স্কাল্পে ও চুলের গোড়ায় অক্সিজেন পৌঁছে দেয়। ম্যাগনেশিয়াম চুলের গোড়া শক্ত করে।
  • এছাড়াও কুমড়োর দানায় বায়োটিন নামক পদার্থ মেলে যা চুলের গোড়া ফাটা রোধ করে।
  • কুমড়োর দানায় প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন পাওয়া যায় যা চুলের বৃদ্ধির জন্য জরুরি। প্রোটিন ক্ষতিগ্রস্ত চুলের জায়গায় চুলের গোড়া শক্ত করে নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে।
  • কুমড়োর দানায় প্রচুর পরিমাণে আর্জিনিন, লাইসিন, গ্লুটামিক অ্যাসিডের মতো অ্যামাইনো অ্যাসিড পাওয়া যায় যা চুলের ডগা ফেটে যাওয়া আটকায়।
  • কুমড়োর দানায় ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড পাওয়া যায় যা চুলের বৃদ্ধি ঘটায়।
  • কুমড়োর দানায় প্রচুর পরিমাণে দস্তা পাওয়া যায় যা খুশকি রোধ করতে সাহায্য করে। কুমড়োর দানার অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি গুণ থাকায় তা একদিকে যেমন খুশকি রোধ করে তেমনই অন্যদিকে মাথার স্কাল্পে রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়। চুলের গোড়া মজবুত হয়। ফ্যাটি অ্যাসিড মজুত থাকায় স্কাল্পে পুষ্টি জোগায় কুমড়োর দানা। চুলের আর্দ্রতা বজায় রাখতে সাহায্য করে।
  • কুমড়োর দানায় প্রচুর পরিমাণে দস্তা, তামা, ম্যাগনেশিয়াম, সেলেনিয়াম, ক্যালসিয়াম আর ভিটামিন এ, সি আর বি থাকে বলে চুলের পাতলা হয়ে যাওয়া আটকায়।
  • কুমড়োর দানায় প্রচুর পরিমাণে তামা পাওয়া যায়। তামা চুলের মেলানিনের নিঃসারণে সাহায্য করে। মেলানিনের মাত্রাই চুলের রঙ কেমন হবে, অকালে পেকে সাদা হয়ে যাবে কিনা চুল, এসব নিয়ন্ত্রণ করে। কুমড়োর দানা চুলের অকাল পক্কতা রোধ করে।
  • চুলে যে তেল লাগান তার সঙ্গে কয়েকটি কুমড়োর দানা ফেলে ফুটিয়ে ঠান্ডা করে মাথায় লাগান। চুলের রুক্ষ ভাব কমে গিয়ে চুল চকচকে স্বাস্থ্যোজ্জ্বল হয়ে উঠেছে।

শুধু চুলই নয় সার্বিকভাবে শরীর সুস্থ রাখতে ভীষণ ভাবে সাহায্য করে কুমড়োর দানা-

১) কুমড়োর দানায় প্রচুর পরিমাণে লোহা, প্রোটিন, দস্তা, ম্যাগনেশিয়াম, ক্যালশিয়াম, তামা, ফসফরাসের মতো একাধিক পুষ্টিকর উপাদান রয়েছে। এছাড়াও আন-স্যাচুরেটেড ফ্যাট, ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড, ভিটামিন বি ও বিটা ক্যারোটিন পাওয়া যায়। তাই নিয়মিত কুমড়োর দানা গুঁড়ো করে বা গোটা দানাই রান্না করে খেলে শরীরে দারুণ উপকার পাওয়া যায়।

২) বাতের ব্যথায় নিরাময় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে কুমড়োর দানা। এছাড়াও কুমড়োর দানায় প্রচুর পরিমাণে ক্যালশিয়াম, দস্তা ও ম্যাগনেশিয়াম থাকে বলে অস্টিওপরোসিসের মতো হাড়ের সমস্যা আটকায়।

৩) ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য দারুণ উপকারী কুমড়োর দানা। রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে কুমড়োর দানা। কুমড়োর দানা ফাইবারের বড়ো উৎস তাই এটি রক্তে শর্করার পরিমাণ কমায়। ওজন কমানোর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কুমড়োর দানা। খাইখাই ভাব কমায়। ওজন কমাতে সাহায্য করে।

৪) কুমড়োর দানা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে। ভাইরাস-ব্যাক্টেরিয়া ঘটিত সংক্রমণ আটকায়।

৫) কুমড়োর দানায় ট্রিপ্টোফ্যান নামক অ্যামাইনো অ্যাসিড পাওয়া যায় যা মেলাটোনিন ও সেরোটোনিন নামক সুখানুভূতি সৃষ্টিকারী হরমোনের নিঃসারণ বাড়িয়ে তোলে। একইসঙ্গে অবসাদ কাটিয়ে শরীর, মন তরতাজা করে তুলতে সাহায্য করে।

Related Articles