
The Truth of Bengal: এমন গান শুনে কী মনে হল? পাড়ার কোনও ফাংশনে স্টেজে সুরেলা কঠে গাইছেন কোনও শিল্পী? সুরেলা কন্ঠের গান ঠিকই, তবে ফাংশনের স্টেজে নয়। নিজের দোকানে চা বানাতে বানাতে এই ভাবে গান গেয়ে চলেন এই শিল্পী। একদিকে তৈরি হচ্ছে চা। আবার সেই চা দিতে হচ্ছে ক্রেতাদের। সেই সঙ্গে গান শুনিয়ে মাতিয়ে দিচ্ছেন চা দোকানি স্নিগ্ধা বিশ্বাস। বাঙালির চায়ের আড্ডায় ছোটখাটো বসে যাচ্ছে গানের জলসা। শিল্পীর কন্ঠে গান শুনতে শুনতে চা পান করেন ক্রেতারা।
চা পানের পাশাপাশি এমন গান শুনতে চাইলে আপনাকে কোনও অভিজাত চা স্টল কিংবা ক্যাফেতে যেতে হবে না। বর্ধমান শহরের বুকে ছোটনীলপুর মোড়ের একটি গলিতে আছে স্নিগ্ধা বিশ্বাসের ছোট্ট চায়ের দোকান। যিনি তাঁর পেশাকে জুড়ে নিয়েছেন নেশার সঙ্গে। চায়ের দাম নিলেও গান শোনানোর কোনও মূল্য নেন না এই শিল্পী। জীবন সংগ্রামে জীবিকার তাগিদে এবং অর্থনৈতিক সংকটের কারণে চা বিক্রি করতে শুরু করেন স্নিগ্ধাদেবী। তাঁর এই গানের তালিম মায়ের কাছ থেকে। ইচ্ছা থাকলেও খারাপ আর্থিক অবস্থার জন্য গানকে পেশা করতে পারেননি।
তাই আজ এই ভাবে তিনি বাঁচিয়ে রেখেছেন মনের সেই সুপ্ত বাসনা।এক ছেলে এবং এক মেয়েকে নিয়ে সংসার স্নিগ্ধাদেবীর। আর্থিক অবস্থা খারাপের জন্য মাঝপথে ছেলের পড়াশোনা বন্ধ করে দিতে হয়েছে। অনেক কষ্টে পড়াচ্ছেন মেয়েকে। স্নিগ্ধাদেবী চা বিক্রির সঙ্গে সঙ্গে ছোটখাটো মঞ্চে গান গেয়ে থাকেন। সেখান থেকে সামান্য কিছু পান। তবে মঞ্চে গান গেয়ে যত না তিনি বিখ্যাত, তার থেকে বেশি বিখ্যাত হয়েছেন চা দোকান চালাতে চালাতে গান গাওয়ায়। নিজের পাওয়া না পাওয়া দূরে সরিয়ে রেখে মনের আনন্দের গান গেয়ে চলেন স্নিগ্ধাদেবী। চা খেতে আসা ক্রেতারা বিস্মিত হন চা দোকানি শিল্পীর এমন প্রতিভা দেখে।
Free Access