কলকাতা

জট কাটাতে সদর্থক মুখ্যমন্ত্রী, অনশন তুলে কাজে চিকিৎসকরা

The chief minister is helpful in solving the problem, the doctors are on hunger strike

Truth Of Bengal: মুখ্যমন্ত্রীর সদর্থক ভূমিকায় কেটে গেলে চলতে থাকা জট। অনশন তুলে নিলেন আন্দোলনরত জুনিয়র চিকিৎসকদের একাংশ। মঙ্গলবার ধর্মতলা থেকে ধর্না মঞ্চ খুলে নেওয়া হয়েছে। কাজ ও পড়াশোনায় ফিরেছেন আন্দোলনরত জুনিয়র চিকিৎসকরা। শেষ হল একটা টানাপোড়েন। মুখ্যমন্ত্রীর সদর্থক পদক্ষেপেই যে সেটা সম্ভব হল, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। সবার প্রত্যাশা এবার সব কিছু স্বাভাবিক হয়ে যাক।

প্রথম থেকেই মুখ্যমন্ত্রী চেয়েছিলেন সহজ সমাধান। তাই অনেকগুলি দাবি মেনে নিয়ে নিয়েছিলেন তিনি। বাকি দাবি মানার আশ্বাস দিয়েছিলেন। তারপরও অনশন শুরু করেছিলেন জুনিয়র ডাক্তারদের একাংশ। সেই অনশনও তুলে নিয়ে কাজে ফেরার আহ্বান জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। শেষে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠকের পর মিলল সমাধানসূত্র। অনশন তুলে নিলেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। সোমবার নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ইতিবাচক বৈঠকের পর কেটে যায় জট। দশ দফা দাবি নিয়ে ধর্মতলায় অনশনে বসেছিলেন জুনিয়র ডাক্তাররা।

দাবি ছিল, সরকার দাবি না মানা পর্যন্ত অনশন চালিয়ে যাবেন তাঁরা। এই পরিস্থিতিতে প্রথমে তাঁদের সঙ্গে ফোনে দীর্ঘ কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। এরপর সোমবার বিকেলে জুনিয়র ডাক্তারদের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে নবান্নে ২ ঘণ্টার বেশি সময় বৈঠক করেন। অভিভাবক সুলভ ভঙ্গিতে প্রথমে অনেকক্ষণ তিনি কথা শোনেন জুনিয়র ডাক্তারদের। গোটা বৈঠক লাইভ স্ট্রিমিং করা হয়। সবাই দেখতে পান সেই বৈঠক। একে একে আন্দোলনরত চিকিৎসকরা নিজেদের দাবি পেশ করতে থাকেন। মুখ্যমন্ত্রী চিকিৎসকদের সব দাবিদাওয়া শোনেন। উভয় তরফের মধ্যে একটা সদর্থক আলোচনা হয়।

তারপর বৈঠক শেষে প্রশ্ন ছিল, জট কি কাটবে? উঠবে কি অনশন? মঙ্গলবার রাজ্যের সকল চিকিৎসক যে সর্বাত্মক ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন, তা কি শেষ পর্যন্ত হবে? এমনই নানা প্রশ্ন থাকলেও শেষ পর্যন্ত রাতে ধর্মতলায় চলতে থাকা অনশন তুলে নেন চিকিৎসকরা। প্রত্যাহার করা হয় সর্বাত্মক ধর্মঘটও। আলোচনায় শেষ পর্যন্ত খুলে যায় পথ। তবে কোনও পক্ষ অনমনীয় মনোভাব না দেখানোয় বৈঠকের নির্যাস হয় ইতিবাচক। নিজের বলায় সময় সবার আগে জুনিয়র ডাক্তারদের কাছে মুখ্যমন্ত্রী আবেদন করে বলেন, ধর্না-আন্দোলন তুলে নিয়ে কাজ ও পড়াশোনায় ফিরে যেতে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ঘরের দরজা বন্ধ করো, মনের দরজা নয়’।

এই একটা কথায় বোঝা যায়, তিনি রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান হতে পারেন, তবে সেই পরিচয়ের বাইরে তাঁর যে একটা মানবিক সত্তা আছে তা তিনি বুঝিয়ে দেন। অনশন চালানো ডাক্তাররা যে দাবি তোলেন, সেই দাবির প্রায় সবগুলি পূরণ হয়ে গিয়েছে। বাকি কাজ চলছে। দ্রুত শেষ হয়ে যাবে বলে আশা করা যায়। এমন অবস্থায় জেদ বজায় রেখে অনশন চালিয়ে যাওয়া কাম্য নয়। তাতে অনশনকারীদের যেমন ক্ষতি হচ্ছে, সেই সঙ্গে প্রভাব পড়ছে রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থায়। যা চলতে পারে না। নিজেদের দাবি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর খুশি চিকিৎসকরা ধর্মতলায় ফিরে তুলে নেন অনশন। শেষ হল একটা টানাপোড়েন। মুখ্যমন্ত্রীর সদর্থক পদক্ষেপেই যে সেটা সম্ভব হল, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।

Related Articles