কলকাতারাজ্যের খবর

পোলট্রি ক্ষেত্রে ভবিষ্যৎ-এর রূপরেখা নির্ধারণের উদ্দেশ্যে সেমিনার

Seminar to chart the future of poultry sector

Truth Of Bengal: কলকাতায় পোলট্রি সেমিনার এর আয়োজন করেছিল সিএলএফএমএ । ক্ষেত্রভিত্তিক রূপান্তরের ওপর আলোচনা পোলট্রি সেমিনারে সফলভাবে অনুষ্ঠিত হয়। আয়োজক ছিল কম্পাউন্ড লাইভস্টক ফিড ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন, সিএলএফএমএ। ভারতের প্রধান শহরগুলিতে এই ধরনের একগুচ্ছ আঞ্চলিক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।

এই সেমিনার একটি প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করে, ইন্ডাস্ট্রি লিডার, নীতি নির্ধারক ও বিশেষজ্ঞদের একত্র করেছে যাতে তাঁরা সম্মিলিতভাবে ভারতের পোলট্রি ক্ষেত্রের ভবিষ্যৎ রূপরেখা নির্ধারণ করতে পারেন। পোলট্রি চিত্র – সামনে যা আছে- থিমকে কেন্দ্রে রেখে আলোচনায় উঠে এসেছিল সাম্প্রতিক বিষয় যেমন। দীর্ঘস্থায়িত্ব, খাদ্য নিরাপত্তা এবং নীতি সংস্কার, সব বিষয়ই এই ক্ষেত্রের দীর্ঘমেয়াদি সাফল্য ও দীর্ঘমেয়াদি বৃদ্ধি নিশ্চিত করার জন্য আবশ্যক।

স্বাগত ভাষণে আলোচনার সুর বেঁধে দেন সিএলএফএমএ অব ইন্ডিয়ার ডেপুটি চেয়ারম্যান সুমিত সুরেখা। ভারতের খাদ্য ও পৌষ্টিক নিরাপত্তায় পোলট্রি ক্ষেত্রের গুরুত্বপূর্ণ অবদানের পাশাপাশি দেশের বৃহত্তর কৃষিজ অর্থনীতিতে এর গভীর সংহতির কথা উল্লেখ করেন তিনি। সংস্থার চেয়ারম্যান দিব্য কুমার গুলাটি উল্লেখ করেন সিএল এফএমএ অব ইন্ডিয়া দ্বারা ভারত জুড়ে অনুষ্ঠিত বিভিন্ন সেমিনার, কনফারেন্স, স্টুডেন্ট প্রোগ্রাম ও অন্যান্য যৌথ কার্যকলাপের কথা। তাঁর বক্তব্যে উদ্ভাবনের জরুরি প্রয়োজনীয়তা, নীতির সাযুজ্য এবং বৈচিত্র্যময় খাদ্য কৌশলের গুরুত্বে জোর দেওয়া হয় যা জোগান-পার্শ্ব চাপ, ক্রমবর্ধমান ইনপুট-খরচ এবং নিয়ামক বিধির অনিশ্চয়তা সামলাতে দরকার।

এই সেমিনারে বিশেষ একটি সেশনে নেতৃত্ব দেন অমিত সচদেব ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গ্রেইনস কাউন্সিলের রিস কেনেডি। বৈশ্বিক খাদ্য মজুত প্রবণতা সম্পর্কে তাঁরা মূল্যবান তথ্য প্রদান ও বিশ্লেষণ করেন এইসেঙ্গ মার্কিন জোয়ারকে উপস্থাপন করেন ভারতের পোলট্রি ইন্ডাস্ট্রির জন্য বিকল্প খাদ্যের উপকরণ রূপে। তাঁদের বিশ্লেষণে বৈচিত্র্যময় খাদ্যের উৎসের গুরুত্বের কথা উঠে আসে যা খরচ-সাশ্রয়ী ও দীর্ঘমেয়াদি স্থায়িত্ব নিশ্চিত করে।

বিশ্বকর্মা হ্যাচারির জেনারেল ম্যানেজার ড. হরিশ কুমার শেঠি ভারতের পোলট্রি ক্ষেত্রের বর্তমান পরিস্থিতির একটি ব্যাপক চিত্র উপস্থাপন করেন। এইসঙ্গে উল্লেখ করেন প্রধান চ্যালেঞ্জ এবং সুযোগ যা এই ক্ষেত্রের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে। তাঁর প্রেজেন্টেশনে ছিল বাজার প্রবণতা, নীতির ফাঁকফোকর এবং গোটা খাদ্য-শৃঙ্খল জুড়ে প্রযুক্তির প্রয়োগের প্রয়োজনীয়তার তীক্ষ্ণ বিশ্লেষণ।

সেমিনার পরিচালনা করেছেন দিব্য কুমার গুলাটি। সেমিনারের উপস্থিত ছিলেন শালিমার গ্রুপ এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর সমীর আগরওয়াল, ওয়েস্ট বেঙ্গল পোল্ট্রি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মদনমোহন মাইতি, কেপিএফবিএ- র প্রেসিডেন্ট নবীন পশুপারথি, সিএলএফএম অফ ইন্ডিয়া র প্রাক্তন চেয়ারম্যান নীরজ কুমার শ্রীবাস্তব,ডেপুটি চেয়ারম্যান সুমিত সুরেখা। আয়োজক সংস্থার চেয়ারম্যান দিব্য কুমার গুলাটি বলেছেন, ভারতের গবাদি পশু ও পোলট্রি শিল্প রয়েছে টার্নিং পয়েন্টে, ক্রমবিবর্তিত বাজারের চাহিদা, দীর্ঘস্থায়িত্বের ধারণা এবং বৈশ্বিক জোগান শৃঙ্খলের মোড় অনুযায়ী আকার নিচ্ছে।

আমরা স্বীকৃতি দিয়েছি যে শিল্প-ভিত্তিক আলোচনা লালন করা খুব গুরুত্বপূর্ণ – শুধু নিকটতম চ্যালেঞ্জ সামলানোই নয়, বরং দীর্ঘমেয়াদি, উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে। এরকম জ্ঞান-ভাগ করে নেওয়ার প্ল্যাটফর্ম হল আরও ব্যাপক ও ভবিষ্যৎমুখী ক্ষেত্র সৃষ্টি করার বৃহত্তর প্রচেষ্টার একটি অংশ। আমরা গোটা দেশে এরকম প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ, নিশ্চিত করছি যে এই শিল্পের অগ্রগণ্য কণ্ঠস্বর – খাদ্য ও পুষ্টি থেকে উৎপাদন ও নীতি – সবকিছু যেন একত্রিত হয়ে আরও শক্তিশালী, আরও স্বনির্ভর বাস্তুতন্ত্র গড়ে ওঠে ভারতের প্রোটিন অর্থনীতির জন্য।

নিয়ামক বিধির জটিলতা, বাজার অ্যাক্সেস করার বাধা, প্রযুক্তির বিঘ্ন এবং দীর্ঘস্থায়ী ও জলবায়ু-বান্ধব পোলট্রি অনুশীলনের জন্য বর্ধিত আবশ্যকতা আলোচনায় উঠে আসে। সংযুক্ত, সমাধান-চালিত ইন্ডাস্ট্রির কথা পুনরাবৃত্তি হয়েছে যাতে নীতি নির্ধারকদের জড়িত থেকে উদ্ভাবন করতে হবে এবং দ্রুত পরিবর্তন বৈশ্বিক চালচিত্রে এই ক্ষেত্রের প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক মনোভাব সুরক্ষিত করতে হবে।

বক্তা ও প্যানেলিস্টদের সংবর্ধনা জানানো হয়।সেমিনার এর শেষে আয়োজক সংস্থার পূর্বাঞ্চলের প্রেসিডেন্ট সমীর চোটাই ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। তিনি গুরুত্বপূর্ণ আলোচনায় সব অংশগ্রহণকারীর মূল্যবান অবদান এবং গোটা সেক্টর জুড়ে যৌথতার কথা উল্লেখ করেন। নির্ধারিত আলোচনা ও জ্ঞান ভাগ করার সূত্রে এবারের পোলট্রি সেমিনার শিল্পের অর্থপূর্ণ উন্নয়ন, স্টেকহোল্ডার অংশীদারিত্ব শক্তিশালী করা এবং ভারতে পোলট্রি ক্ষেত্রের জন্য দীর্ঘস্থায়ী বৃদ্ধির জন্য আয়োজক সিএলএফএমএ অব ইন্ডিয়ার প্রতিজ্ঞাবদ্ধতা পুনর্নিশ্চিত করেছে।

Related Articles