দেশ

ওয়াকফ সংশোধনী বিল: স্বচ্ছতা ও ন্যায়বিচারের পথে বিজেপির দৃঢ় পদক্ষেপ

Waqf Amendment Bill: BJP's firm step towards transparency and justice

Truth of Bengal: ওয়াকফ (সংশোধন) আইন, ২০২৫ নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ ও ডায়মন্ড হারবার, দিল্লি এবং তামিলনাড়ুর মতো বিরোধী-শাসিত রাজ্যে বিক্ষোভ দেখা দিয়েছে। তবে এই বিক্ষোভগুলোর পেছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে বলে মনে করছে কেন্দ্র, কারণ এগুলো মূলত ইন্ডিয়া জোটের দলগুলোর নেতৃত্বে পরিচালিত হচ্ছে — যেমন কংগ্রেস, তৃণমূল, ডিএমকে, সিপিআই(এম), আরজেডি, ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা এবং আম আদমি পার্টি (আপ)।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়েছে, এই আইনটি ধর্মীয় দানসম্পত্তির (ওয়াকফ) ক্ষেত্রে দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনা দূর করার একটি ঐতিহাসিক পদক্ষেপ। বিরোধীদের অভিযোগ সত্ত্বেও, এই আইন কোনো সম্প্রদায়কে লক্ষ্য করে নয় বরং স্বচ্ছতা, ন্যায্যতা এবং জনকল্যাণে ব্যবহৃত সম্পত্তির সঠিক ব্যবহারের জন্য তৈরি।

ওয়াকফ কী?

ওয়াকফ হল এমন এক ব্যবস্থা, যেখানে মুসলিমরা তাদের ব্যক্তিগত সম্পত্তি — স্থাবর বা অস্থাবর — ধর্মীয় বা সমাজসেবামূলক উদ্দেশ্যে দান করে থাকেন। বহু দশক ধরে এই ব্যবস্থার ওপর পর্যাপ্ত নজরদারি না থাকায় অনেক অনিয়ম, দুর্নীতি ও সম্পত্তি দখলের ঘটনা ঘটে এসেছে।

বড় পরিবর্তন: অনিয়ন্ত্রিত ক্ষমতার অবসান

আগের আইনের ৪০ নম্বর ধারা অনুযায়ী, ওয়াকফ বোর্ড যেকোনো জমিকে একতরফাভাবে ‘ওয়াকফ সম্পত্তি’ ঘোষণা করতে পারত। এই ক্ষমতার অপব্যবহার বহুবার হয়েছে। সংশোধিত আইনে এই ধারা বাতিল করা হয়েছে, ফলে এখন আর গোপনে বা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে জমি দখল করা যাবে না।

গভর্ন্যান্সে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা

ওয়াকফ বোর্ডগুলোর ক্ষমতা নিয়ন্ত্রিত করে নতুন আইন সুশাসনের পথ খুলে দিয়েছে। ডিজিটাল রেকর্ড, আর্থিক নিরীক্ষা ও স্বচ্ছ পরিচালনার মাধ্যমে পিছিয়ে পড়া মুসলিম সম্প্রদায় — বিশেষ করে পাশমন্দা মুসলিমরা — উপকৃত হবেন।

অন্তর্ভুক্তি মানেই হস্তক্ষেপ নয়

নতুন আইনে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় ওয়াকফ বোর্ডে অমুসলিম সদস্য এবং নারীদের অন্তর্ভুক্তির সুযোগ রাখা হয়েছে। কিছু বিরোধী এই পদক্ষেপকে মুসলিম সম্প্রদায়ের ওপর হস্তক্ষেপ বললেও সরকার বলছে, এটি প্রকৃত অর্থেই অংশগ্রহণমূলক ও গণতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন।

সরকারি জমির নিরাপত্তা ও আদিবাসীদের সুরক্ষা

নতুন আইন অনুযায়ী, সরকার তার জমি পুনরুদ্ধার করতে পারবে, যা আগে অবৈধভাবে ওয়াকফ সম্পত্তি হিসেবে দাবি করা হতো। এ ছাড়াও, আদিবাসী জমির ওপর কোনো ওয়াকফ দাবি আর করা যাবে না — এটি একটি সাহসী পদক্ষেপ যা তাদের অধিকার রক্ষা করবে।

ধর্মবিরোধী নয়, আধুনিকীকরণমূলক উদ্যোগ

এই আইন মুসলিমবিরোধী নয় — বরং এটি একটি ন্যায়বিচার, স্বচ্ছতা ও আধুনিকীকরণের দিকেই এগিয়ে যাওয়ার পদক্ষেপ। বিদেশি মডেল যেমন তুরস্ক ও কাতারের অনুপ্রেরণায় তৈরি এই সংস্কার ওয়াকফ ব্যবস্থাকে আরও কার্যকর ও জনবান্ধব করে তুলবে।

যেখানে একদিকে কিছু রাজনৈতিক দল এই আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলন চালাচ্ছে, সেখানে অন্যদিকে কেন্দ্র বলছে — এই আইন সব ধর্ম ও সম্প্রদায়ের জন্য সমানভাবে উপকারি হবে। “সবকা সাথ, সবকা বিকাশ” দর্শনের আলোকে তৈরি এই আইন ভারতকে আরও ন্যায়ভিত্তিক ও আধুনিক প্রশাসনের পথে নিয়ে যাবে।

Related Articles