Supreme Court: ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা সোনালি খাতুন ও শিশুকে ফিরিয়ে আনার নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের
প্রধান বিচারপতি সূর্যকান্তের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চের সামনে কেন্দ্র সরকার আশ্বাস দিয়েছে যে, সম্পূর্ণ মানবিকতার ভিত্তিতে সোনালি খাতুন ও তাঁর সন্তানকে দেশে ফিরিয়ে আনা হবে।
Truth of Bengal: মানবিকতার খাতিরে আইনকে কখনও কখনও নমনীয় হতে হয়—এই পর্যবেক্ষণ রেখে এক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। বাংলাদেশ থেকে নয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা সোনালি খাতুন এবং তাঁর আট বছরের শিশুকে অবিলম্বে ভারতে ফিরিয়ে আনার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রকে। সোনালির শ্বশুর, ভারতীয় নাগরিক ভোঁদু শেখের আইনি লড়াইয়ের ফলেই আজ এই রায় এসেছে। প্রধান বিচারপতি সূর্যকান্তের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চের সামনে কেন্দ্র সরকার আশ্বাস দিয়েছে যে, সম্পূর্ণ মানবিকতার ভিত্তিতে সোনালি খাতুন ও তাঁর সন্তানকে দেশে ফিরিয়ে আনা হবে। আদালত একইসঙ্গে নির্দেশ দিয়েছে যে, গর্ভাবস্থার কথা বিবেচনা করে সরকার যেন সোনালির জন্য বিনামূল্যে চিকিৎসার ব্যবস্থা করে এবং তাঁর ছেলের দেখাশোনার দায়িত্বও নেয়। সোনালির প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করতে এবং তাঁদের প্রয়োজনীয় সমস্ত সুবিধা প্রদানের জন্য কেন্দ্রকে নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত।
বিচারপতি জয়মালা বাগচী পর্যবেক্ষণ করেন, ভোঁদু শেখের ভারতীয় নাগরিকত্ব নিয়ে কোনো প্রশ্ন নেই। তাই সোনালি যদি তাঁর মেয়ে হন, তবে নাগরিকত্ব আইন অনুযায়ী সোনালি এবং তাঁর সন্তানও ভারতীয় নাগরিক হিসেবে গণ্য হবেন। ২০২৪ সালের শুরুর দিকে ভোঁদু শেখের মেয়ে সোনালি খাতুন, তাঁর স্বামী দানিশ শেখ এবং আট বছরের সন্তানকে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল। অন্য একটি ঘটনায়, অবৈধ বাংলাদেশি নাগরিক সন্দেহে দিল্লি পুলিশ আরও একটি পরিবার—সুইটি বিবি, তাঁর স্বামী এবং তাঁদের দুই সন্তানকে ২৫ জুন, ২০২৫ তারিখে আটক করে এবং ২৭ জুন সীমান্ত পার করে দেয়।সোনালি ও সুইটি বিবির স্বামীরা তাঁদের ভারতীয় নাগরিকত্বের দাবি জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। হাইকোর্ট ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ তারিখে এই বহিষ্কার প্রক্রিয়াকে ‘অবৈধ’ ঘোষণা করে এবং সাতজনকেই এক মাসের মধ্যে দেশে ফিরিয়ে আনার নির্দেশ দেয়।
কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে কেন্দ্র সরকার সুপ্রিম কোর্টে আপিল করে। গত ১ ডিসেম্বর মামলার শুনানির সময় সুপ্রিম কোর্ট সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতাকে সোনালি খাতুন ও তাঁর সন্তানকে ফিরিয়ে আনার বিষয়টি বিবেচনার জন্য বলে। বুধবার শুনানির সময় পশ্চিমবঙ্গের পক্ষে প্রবীণ আইনজীবী কপিল সিব্বল কেন্দ্রকে অনুরোধ করেন, বাকি ছয়জনকেও ফিরিয়ে আনার বিষয়ে নির্দেশ নিতে। তবে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা এর বিরোধিতা করে জানান, তাঁরা ‘বাংলাদেশি’ এবং তাদের নাগরিকত্ব নিয়ে কেন্দ্রের গুরুতর আপত্তি আছে। কেন্দ্র হাইকোর্টের সম্ভাব্য আদালত অবমাননার প্রক্রিয়া এড়াতে আজ সুপ্রিম কোর্টে দ্রুত শুনানির আবেদন করে এবং শীর্ষ আদালতকে অনুরোধ করে যেন হাইকোর্টের আদালত অবমাননার প্রক্রিয়ায় স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়, কারণ কেন্দ্র তাদের নাগরিকত্ব নিয়ে লড়াই চালিয়ে যেতে চায়। এখন শুধু সোনালি ও তাঁর সন্তানের ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়ার দিকেই সকলের নজর।






