৩২ বছর পর বিচার পেল আজমিরের ব্ল্যাকমেল ও ধর্ষণ মামলার ছয় দোষী
Six accused in Ajmir blackmail and rape case brought to trial after 32 years

Truth Of Bengal: আজমিরে ব্ল্যাকমেইল ও ধর্ষণ মামলায় ৬ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। ৩২ বছর পর বিচার পেল নির্যাতিতার পরিবার। আদালত বাকি সাত আসামির মধ্যে ৬ জনকে আজমিরের সবথেকে বড় যৌন কেলেঙ্কারি এবং ব্ল্যাকমেলের ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত করেছে। আদালত তাদের প্রত্যেককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য আদালত এর আগে ছয় জনকে দোষী সাব্যস্ত করেছিল।
Rajasthan: In Ajmer’s largest blackmail case, six accused, including Nafees Chishti and Naseem alias Tarzan, were found guilty by the Special POCSO Act Court. They blackmailed over 100 girls with obscene photos from 1992 pic.twitter.com/pqwkoPo1fk
— IANS (@ians_india) August 20, 2024
১৯৯২ সালে ১০০ টিরও বেশি কলেজছাত্রীকে গণধর্ষণ করা হয়েছিল এবং তাদের নগ্ন ছবি প্রচার করা হয়েছিল। এই ঘটনায় আলোড়ন পড়ে গিয়েছিল গোটা দেশজুড়ে। মামলায় মোট আসামি ছিলেন ১৮ জন। ৯ আগস্ট বাকি ছয়জনের সাজা ঘোষণা হলেও। মামলার শুনানি কুড়ি আগস্ট পর্যন্ত মুলতবি রাখা হয়।
প্রসিকিউশন বিভাগের ডেপুটি ডিরেক্টর বিক্রম সিং রাঠোর জানিয়েছেন, দরগাহ এলাকার বাসিন্দা নাফিস চিশতি, সেলিম চিশতি, সোহেল গনি, জামিল চিশতি এবং মুম্বাইয়ের বাসিন্দা ইকবাল ভাটি এবং এলাহাবাদের বিরুদ্ধে বিশেষ আদালতে চলমান POCSO মামলার মামলার রায়। এসেছেন নাসিম ওরফে টারজান। ১৯৯২ সালে, আনোয়ার চিশতি, ফারুক চিশতি, পারভেজ আনসারি, মইনুল্লাহ ওরফে পুত্তান এলাহাবাদী, ইশরাত ওরফে লালি, কৈলাশ সোনি, মহেশ লুধানি, শামশু চিশতি ওরফে মেনরাডোনা এবং নাসিম ওরফে টারজানকে অশ্লীল ছবি ব্ল্যাকমেইলের মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।
জামিন পাওয়ার পর টারজান পলাতক। এর পরে, এলাহাবাদের একটি মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হলে তার বিরুদ্ধে পৃথক শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। যেখানে বাকি আসামিদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন দায়রা আদালত ১৯৯৮ সালে। আপিলের পর হাইকোর্ট চার আসামির সাজা কমিয়ে ১০ বছর করেন। অপর চার আসামিকে খালাস দেওয়া হয়েছে। এই আদেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করা হলে আদালত আসামিদের সাজা বহাল রাখার সিদ্ধান্ত নেন।
আজমীরে, যুব কংগ্রেসের তৎকালীন সভাপতি ফারুক চিশতি, তার সহযোগী নাফীস চিশতি এবং তাদের দোসররা স্কুল ও কলেজের মেয়েদের শিকার করত। পার্টির নামে ছাত্রীদের খামারবাড়ি ও রেস্তোরাঁয় ডেকে নেশা করানো হবে, গণধর্ষণ করা হবে এবং তাদের অশ্লীল ছবি তোলা হবে। এসব অশ্লীল ছবির ভিত্তিতে মেয়েরা অন্য মেয়েদের নিয়ে আসতে বাধ্য হয়। তার মানে এক শিকার অন্য শিকারকে ফাঁসানোর জন্য ব্যবহার করা হয়েছিল।
মামলা নথিভুক্ত হওয়ার আগে কিছু মেয়ে সাহস করে পুলিশের কাছে গিয়ে জবানবন্দি দিয়েছিল, কিন্তু পুলিশ শুধু ওই ভিকটিমদের জবানবন্দি নিয়েছে এবং তাদের ছেড়ে দিয়েছে। পরে ওই ভুক্তভোগীরা হুমকি পেতে থাকে। তাই সে আর পুলিশের সামনে আসার সাহস সঞ্চয় করতে পারেনি। এরপর জনগণের বিব্রত হওয়ার ভয়ে কেউ এগিয়ে এসে পুলিশের কাছে অভিযোগ করতে রাজি হননি। পরে ১৮ জন ভুক্তভোগী আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে জবানবন্দি দেন।
১৯৯২ সালে, আজমিরের একটি রঙের ল্যাব থেকে কিছু অশ্লীল ছবি ফাঁস হয়েছিল এবং শহরে বিখ্যাত হয়েছিল। এরপর পুলিশ মামলা নথিভুক্ত করে অশ্লীল ছবির তদন্ত করে। তখন এই জঘন্য অপরাধ ও ষড়যন্ত্রের বহিঃপ্রকাশ ঘটে। অশ্লীল ছবি ব্ল্যাকমেইল কাণ্ডে শতাধিক মেয়েকে ধর্ষণ করা হয়েছে। আসামিদের গুন্ডামি ও উচ্চ সংযোগের কারণে মামলা হওয়ার পরও মেয়েরা কেউ এগিয়ে আসার সাহস দেখায়নি। এরপরই ছবির ভিত্তিতে নিহতদের খোঁজে তল্লাশি শুরু করে পুলিশ।
ধর্ষণ ও ব্ল্যাকমেইলের শিকার কিছু মেয়ে আত্মহত্যা করেছে। কেউ কেউ নীরব থেকে শহর ছেড়ে চলে গেলেও পুলিশ কিছু ভিকটিমদের জবানবন্দি রেকর্ড করে আদালতে চার্জশিট পেশ করে। অশ্লীল ছবি ব্ল্যাকমেল কেলেঙ্কারি এমন সময়ে প্রকাশ্যে এসেছে যখন অযোধ্যার রাম জন্মভূমি নিয়ে দেশজুড়ে রাজনীতি উত্তপ্ত। সাম্প্রদায়িক পরিবেশ ছিল। এরপর দাঙ্গার আশঙ্কায় মামলাটি পেন্ডিং রাখে আজমির পুলিশ। তৎকালীন ভৈরু সিং শেখাওয়াত সরকার এই মামলার তদন্ত সিআইডি সিবি-কে হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত নেয়। এরপর এ ঘটনায় থানায় মামলা করতে হয়।