
The Truth of Bengal: সুইগি, জোম্যাটো দিয়ে আনাতেই পারেন ধাধার নান বা কুলচার সঙ্গে চিকেন কড়াই বা ভর্তা। হাওড়া স্টেশনের যেমন বড় ঘড়ি, বালিগঞ্জ ফাঁড়ির মোড়ে তেমনই ধাবা। আইকনিক মিটিং প্লেস। কিন্তু হাওড়া স্টেশনের বড় ঘড়ির নীচে মিটিং আসলে যেমন একটা যাত্রার সূচনার কথা বলে, তেমনই বালিগঞ্জ ফাঁড়ির মোড়ে ধাবার সামনে দেখা হলেও একটা খাওয়া দাওয়া আর আড্ডার অনুষঙ্গ থাকে। রমণীয় পরিবেশে চমৎকার খাওয়া দাওয়া আর দিলখোলা আড্ডা। আসলে পাঞ্জাবি ধাবা বলেই বোধহয় বালিগঞ্জ ফাঁড়ির মোড়ের এই ইটারি বা ভোজনালয়ের সঙ্গে শিখ জীবনযাপনের দিলদার মেজাজের একটা প্রগাঢ় সম্পর্ক রয়েছে। যা রেস্তোরাঁর ভিতরে ঢুকলেই লস্যিতে চুমুক দিলেই শিরার ভিতর দিয়ে ঢুকে যায়। বালিগঞ্জ ধাবাকে কেন্দ্র করে এই যে স্মৃতিতে এত আলোড়ন, সেটাই বোধহয় এই রেস্তোরাঁর প্রধান ফিক্সড ডিপোজিট। সেই কারণেই করোনা কালের আগে যখন খবরের কাগজে সংবাদ বেরিয়েছিল যে এই রেস্তোরাঁর মালিকরা এবার এই ধাবা বন্ধ করে দিতে চান, তখন তুমুল হইচই শুরু হয়েছিল। এবং অনুরাগীদের আকুল আর্তিতে মালিকপক্ষ শুধু নিজেদের সিদ্ধান্ত বদলাননি, বালিগঞ্জ ধাবা রয়ে গিয়েছিল স্বমহিমায়।
অন্য অনেক পাঞ্জাবি ডিশ তো বটেই, এই ধাবাতে যে পাওয়া যায়। পাঞ্জাবের আইকনিক সর্সো কা শাগ আর মাকাই কি রোটিও। করোনা কালের দুর্ভোগ কাটিয়ে বালিগঞ্জ ধাবা আবার খাদ্যরসিকদের রসনা তৃপ্তি করছিল নিজস্ব মেজাজেই। ভোটপর্ব ঢোকার পরেই এই নতুন বিধিনিষেধ বা আংশিক লকডাউনের সময় বালিগঞ্জ ধাবা কীভাবে তার অনুরাগীদের কাছে চিকেন তন্দুরি আর গরমাগরম নান পৌঁছে দেয়, সেই দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। আগেরবারের মতো হয়তো জোম্যাটো বা সুইগির মতো ফুড ডেলিভারি অ্যাপই ভরসা হবে আমার মতো পেটুকদের।বালিগঞ্জ ধাবা থেকে কোন খাবার অর্ডার করতে চাইব? অবশ্যই পাঞ্জাবি নন ভেজ বা আমিষ ডিশ। কালের নিয়মে বালিগঞ্জ ধাবায় এখন চিনাদের অনুপ্রবেশ ঘটলেও, মানে চাউমিন বা ফ্রায়েড রাইস পাওয়া গেলেও আমার ভোট এখনও। পাঞ্জাবি ডিশ বা ইন্ডিয়ান ফুড-এর দিকে। তাই অর্ডার করতে গেলে চিকেন তন্দুরি বা কাবাব পছন্দের উপরের দিকে থাকবে।
আর অবশ্যই চিকেন ভর্তা বা কড়াই চিকেনের মতো কোনও পদ। রাজনীতিতে রগড়ে দেওয়াকে পছন্দ তো করি না, কিন্তু খাওয়ার ক্ষেত্রে রগরগে, ঝাল ঝাল রান্না তো চমৎকার, জীবনকে একেবারে রাঙিয়ে দিয়ে যায়। বালিগঞ্জ ধাবার ঝাল ঝাল ননভেজ পদের সঙ্গে নান ও চলতে পারে, আবার কুলচাও চমৎকার যুগলবন্দি। ওহ, আচ্ছা, বলে রাখা ভাল, এই ধাবার রুমালি রুটিও আমার বেশ পছন্দের। করোনা নামক এই অতিমারি আমাদের চারপাশের নাগরিক জীবন, সামাজিক জীবনকে এমনভাবে বদলে দিয়েছে যে আমরা স্বাভাবিক অনেক কিছুকেই ভুলতে বসেছি। বিধিনিষেধের এই ধূসর জীবনে সামান্যতম রং, সামান্যতম খুশি নিয়ে আসতে পারে ভাল খাবার আর ভাল খাবারের জন্য আবার নির্ভর করতে হবে সেই ফুড অ্যাপের উপরে। অতএব প্রতিদিনের কর্মব্যস্ততার তপ্ত আঁচে নিজেদের সেঁকার ফাঁকে যদি একটু ভাল খাবার চাখার শখ থাকে তাহলে জোম্যাটো বা সুইগি দিয়ে আনিয়ে নিতেই পারেন বালিগঞ্জ ধাবার পাঞ্জাবি খানা।