কোথা থেকে এল চন্দননগর নাম? জানুন ইতিহাস
Where did the name Chandannagar come from? Know the history

Truth Of Bengal: রাকেশ চক্রবর্তী: হুগলি জেলার গঙ্গা তীরবর্তী ঐতিহাসিক শহর চন্দননগর। একটা সময় এখানে উপনিবেশ স্থাপন করেছিল ফরাসিরা। ব্রিটিশ শাসন থেকে ভারত স্বাধীন হলেও চন্দননগর কিন্তু স্বাধীন হয়েছিল তার থেকে আরও কিছুটা সময় পড়ে। তবে তৎকালীন ফরাসডাঙ্গা থেকে বর্তমানের চন্দননগরের যে বিবর্তন তা কিন্তু আজও দৃশ্যমান। শুধু দৃশ্যমান নয় চন্দননগরের যে নাম সেই নাম নিয়েও রয়েছে নানা মতবিরোধ।
মূলত চন্দননগর নাম লেখা হলেও ইংরেজিতে লেখার সময় সেই নামের বানান বদলে যায় অদ্ভুত ভাবে। এখনও সেই ইংরেজি নামের বানানের নিদর্শন রয়েছে চন্দননগরের বিভিন্ন পুরাতন স্থাপত্যের গায়ে। যেমন চন্দননগর কোর্ট, স্ট্যান্ড ঘাট, বিভিন্ন স্কুল ও কলেজের গায়ে লিখে থাকা শহর চন্দননগরের নাম ইংরেজিতে উচ্চারণ করলে হয় ‘চন্দ্রের নগর’। তবে কিভাবে চন্দ্রের নগর থেকে চন্দননগর হয়ে উঠলো সেই নিয়ে রয়েছে বিস্তর ব্যাখ্যা।
অনেকে মনে করেন হুগলি নদী চন্দননগরের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়ার সময় সেখানে কিছুটা অর্ধচন্দ্রাকৃতি আকৃতি নেয় সেই থেকে এই এলাকার নাম হয়েছে নাকি চাঁদের নগর। আবার অনেকে মনে করেন একসময় এখানে নাকি চন্দনের ব্যবসা হতো সেই থেকে এলাকার নাম হয়েছে চন্দননগর। কিন্তু এই সমস্ত ব্যাখ্যাকে নস্যাৎ করেছেন স্থানীয় ইতিহাসবিদ ও চন্দননগর কলেজের অধ্যক্ষ দুজনেই।
এই বিষয়ে ইতিহাসবিদ ও অধ্যাপক বিশ্বনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় তিনি বলেন, চাঁদের নগর থেকে চন্দননগর বা চন্দনের ব্যবহার বৃদ্ধি থেকে চন্দননগরের নাম আসা এটা ভুল। তার কথা অনুযায়ী পুরাকালের যে ম্যাপ পাওয়া যায় তা কম করে ১৭০০ শতাব্দীর সময়কালের সেখানেও দেখা গেছে চন্দননগরের নাম। তার কথা অনুযায়ী চন্দননগর নামটি এসেছে দেবতা কেন্দ্রিক। যেমন কালী মন্দির থেকে জায়গার নাম হয়েছে কালীঘাট ঠিক তেমনি এই এলাকায় এক পুরাতন চন্ডী মন্দির রয়েছে। সেই চন্ডির মন্দির থেকে জায়গার নাম হয়েছিল চন্ডীর নগর। যা সাহেবরা উচ্চারণ করতে গিয়ে করে ফেলেছিলেন চান্দের নগর। পরবর্তীতে সেই চন্ডীর নগর নাম পরিবর্তিত হয়ে হয় চন্দননগর।
তবে এই নিয়ে আরেকটি মত পোষণ করেছেন চন্দননগর কলেজের অধ্যক্ষ ডক্টর দেবাশীষ সরকার তিনি জানান, ইংরেজির যে নামের বানান তাতে হয় চন্দননগর। এবং সেই নামের বানানি যখন ফরাসিরা লিখতেন তখন সেটি হয়ে যেত ‘চন্দ্রর নগর’ তবে এই পুরো নামের বিষয়টি ইংরেজি বানানের মধ্যেই সীমিত। বাংলায় বানান লিখতে গেলে পুরোটাই হয় চন্দননগর। তাই নামের ব্যাখ্যার বিভিন্ন দিক থাকলেও বাংলায় পুরোটাই চন্দননগর।