রাজ্যের খবর

“সিএএ আমরা হতে দেব না ” রানাঘাটের সভা থেকে বিজেপিকে ‘চ্যালেঞ্জ’ অভিষেকের

"We will not allow CAA" to launch 'challenge' to BJP from Ranaghat meeting

The Truth Of Bengal : নদিয়া, মাধব দেবনাথ :  “সিএএ অ্যাপ্লাই করার আগে আপনাকে বলতে হবে আমি বাংলাদেশী, আমি পাকিস্তানি অথবা আফগানিস্তানি। এরপর পরীক্ষা-নিরীক্ষা হবে। এনআরসি করে আপনাকে ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠিয়ে দেবে। ঠিক যেমনটা আসামে হয়েছে। আর আমরা থাকতে এটা হতে দেব না।” রবিবার নদীয়ার রানাঘাট লোকসভা কেন্দ্রের দত্তপুলিয়া গার্লস হাইস্কুলে প্রার্থীর সমর্থনে জনসভায় এসে বিজেপিকে আক্রমণ করলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।

আগামী ১৩ই মে নদীয়ার কৃষ্ণনগর এবং রানাঘাট লোকসভা কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ। দিন যত এগিয়ে আছে ততই বাড়ছে রাজনৈতিক উত্তাপ। বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতারা দিনরাত প্রচার করছেন। এবার রানাঘাট কেন্দ্রের লোকসভা ভোটে প্রার্থী হয়েছেন জগন্নাথ সরকার। তিনি গত 2019 এর লোকসভা ভোটে এই কেন্দ্র থেকে সব থেকে বেশি ব্যবধানে জয়লাভ করেছিলেন।

অন্যদিকে এবারের তৃণমূল প্রার্থী সদ্য বিজেপি থেকে আসা বিধায়ক মুকুটমনি অধিকারী। বিজেপি এবং তৃণমূলের দুটি প্রার্থী মতুয়া সম্প্রদায়ের। আর রানাঘাট লোকসভা কেন্দ্রের বেশ কিছু শতাংশ মতুয়ারা রয়েছে। সেই কারণে এবারের ফলাফল অনেকটা মতুয়া ভোটের উপর নির্ভর করবে। সেই কথা মাথায় রেখে দিন জনসভাতে এসে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এনআরসি নিয়ে বেশ কিছুক্ষণ বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন বিজেপি একটা জুমলা পার্টি। এরা মানুষকে ভাওতা দিয়ে ক্ষমতায় থাকতে চায়। এনআরসির নাম করে এরা আপনাকে বাংলাদেশী কিংবা পাকিস্তানি প্রমাণ করবে। এরপরই আপনাকে ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠিয়ে দেবে। আমি চ্যালেঞ্জ করছি বিজেপির নেতারা আগে সিএএ এপ্লাই করে দেখান।

অন্যদিকে জগন্নাথ সরকারকে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, “আমি চ্যালেঞ্জ করে বলছি জগন্নাথ সরকার কোথাও গত পাঁচ বছরে উন্নয়নমূলক আলোচনা করেননি। শুধু তাই নয় রানাঘাটবাসীর জন্য লোকসভায় তিনি কোন প্রশ্ন করেননি। শুধুমাত্র দিল্লীর তাবেদারি করে গেছেন। দিল্লি থেকে যা অর্ডার করা হয়েছে তিনি তাই শুনেছেন। আর এসি ঘরে বসে মানুষের মজা দেখেছেন।” এরপর শান্তিপুর এবং ফুলিয়ার তাঁত শিল্পীদের নিয়ে বিজেপিকে কটাক্ষ করেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “বিজেপি তাঁত শিল্পীদের জন্য কোন কাজ করেনি। আমরা কথা দিয়েছিলাম তাঁতিদের সমবায়ের সঙ্গে অন্তর্ভুক্ত করে বিভিন্ন প্রকল্পের আওতায় আনবো। আমরা সেই কাজ সম্পূর্ণ করেছি। আগামী দিনে এই প্রকল্পের মাধ্যমে তাঁতিরা আরো সাহায্য পাবে। লক্ষীর ভান্ডার থেকে শুরু করে বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে সরাসরি সাধারণ মানুষকে সাহায্য করছি। আর বিজেপির কাজ হল প্যান কার্ড আধার কার্ড লিংক করার নাম করে হাজার হাজার টাকা মানুষের কাছ থেকে তোলাবাজি করা। আমরা যত দিচ্ছি আর ওরা তত কেড়ে নিচ্ছে।”

আগামী নির্বাচনে রানাঘাট লোকসভার সাধারণ মানুষদের তিনি প্রার্থী মুকুটমনি অধিকারী কে জয়ী করার জন্য অনুরোধ করেন। যদিও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সভা মঞ্চে প্রবেশ করতেই বিজেপির এক আবারো বড়সড় ভাঙ্গন। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত থেকে দলীয় পতাকা তুলে নিলেন রানাঘাট ৩৩ নম্বর জেডপির বিজেপি নেত্রী পূর্ণিমা দত্ত। তিনি বলেন গত পাঁচটা বছর বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকার তাদের সাথে বেইমানি করেছেন, তাই বিজেপির প্রতি আস্থা হারিয়ে এবার তৃণমূলে যোগদান করলেন তিনি। যদিও জগন্নাথ সরকারকে কটাক্ষ করতে ছাড়লেন না সদ্য তৃণমূলে যোগদানকারী পূর্ণিমা দত্ত।

Related Articles