মকর সংক্রান্তিতে মাটির সুরে টুসু বন্দনা, লোকসংস্কৃতির ঐতিহ্য রক্ষার আন্তরিক প্রয়াস…
Tusu bandanas to the tune of earth on Makar Sankranti, a sincere effort to preserve the heritage of folk culture...

The Truth Of Bengal: মকর সংক্রান্তিতে মাটির সুরে টুসু বন্দনার চল রয়েছে বাংলায়। তুষ-মাটি আর রঙিন কাগজের অলংকরণে তৈরি লৌকিক দেবী টুসুকে কুমারী রূপে পুজোপাঠ করা হয়। আর এই টুসু তৈরি করা হয় , তুষ, মাটি এবং বিভিন্ন রঙিন কাগজ ও নানারকম অলংকরণ দিয়ে।এখন স্বচ্ছলতা বাড়ায় জঙ্গলমহলে টুসু উত্সবের চল বেড়েছে।হাইটেক যুগেও বাংলার এই লোকসংস্কৃতির ঐতিহ্য রক্ষার আন্তরিক প্রয়াস সবাইকে অভিভূত করছে।
টুসু, রাঢ় বঙ্গের উপজাতি বা জনজাতি প্রভাবিত এলাকার লোকসংস্কৃতির সঙ্গে ওতোপ্রতোভাবে জড়িত।মূলতঃ মকর পরব উপলক্ষে, অগ্রহারণ মাসের শেষ দিনে এই লৌকিক দেবীর আরাধনা শুরু হয়।শেষ হয়, পৌষ সংক্রান্তি বা মকর সংক্রান্তির পুণ্যলগ্নে।কথিত আছে, টুসু হল এক লৌকিক দেবী, যাকে কুমারী হিসেবে কল্পনা করা হয়। লোক-কাহিনী অনুযায়ী, টুসু শস্য দেবী। কেউ কেউ এরমধ্যে লক্ষীব্রতের ছায়া দেখতে পান। অনেকে মনে করেন ফসল ঘরে তোলার উত্সব টুসু।আর এই টুসু পরবে গাওয়া হয় টুসু গান। বড় মিঠে এ গান। বড় মিঠে এ সুর। লালমাটির নুড়ি-পাথুরে সন্ধ্যায় এ গান শরীরে আলাদা অনুভূতি জাগায়।
পৌষের ঠাণ্ডা আমেজ নিয়ে সারা পৌষ মাস ধরে টুসু আরাধনা করার পর পৌষ সংক্রান্তির আগের রাতে রাতভোর চলে টুসু গানের আসর। যাকে বলা হয় টুসুর জাগরণ। বাজার থেকে কাগজের তৈরি চৌডাল কিনে এনে তাকে সাজিয়ে জাগরন করা হয়। টুসুকে বিসর্জনের আগের রাতে চলে টুসু বন্দনা। কাগজ ও শোলা দিয়ে বানানো চৌডলকে সাজিয়ে তাকে গোল করে ঘিরে বসে নানা গান গেয়ে চলে টুসু গান। রাতভোর গানের পর এই চৌডালকে বিসর্জন দেওয়া হয় নদীতে বা পুকুরে।আগে জঙ্গলমহলে এই টুসুর এত পুজোপাঠের চল ছিল না।এখন আর্থিক সুদিন ফেরায় পুজোর রেওয়াজ বেড়েছে।মূলতঃতুষ, মাটি এবং বিভিন্ন রঙিন কাগজ ও নানারকম অলংকরণ দিয়ে টুসুকে সাজানো হয়।টুসু বেচে বিক্রেতাদের লক্ষীলাভ হচ্ছে।
Free Access