বিরল অস্ত্রোপচারের নজির গড়ল কল্যাণীর জেএনএম সরকারি হাসপাতাল
Kalyani's JNM Government Hospital set a precedent for rare surgery

The Truth of Bengal: বিরল অস্ত্রোপচারের নজির গড়ল কল্যাণীর জেএনএম সরকারি হাসপাতাল। সিটাস ইনভারসাস টোটালিস নামে জটিল রোগের অপারেশন করা হয়েছে এই সরকারি হাসপাতালে। এখন রোগী সুস্থ রয়েছেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন,গড়ে ১০লক্ষ মানুষের মধ্যে ১জনের কম মানুষের শরীরে এই রোগ দেখা যায়। জন্ম থেকে রোগীর বৃহদান্ত্র,লিভার সহ অন্যান্য অঙ্গ-প্রতঙ্গ উল্টোদিকে অবস্থান করায় সমস্যা হচ্ছিল। আশা করা হচ্ছে,রোগী সুস্থ হয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারবেন।
অনেকেই এই রোগের কথা শোনেননি।মেডিক্যাল সায়েন্সের ভাষায় বলা হয়,সায়েটাস ইনভারসাস টোটালিস।আসলে এই ধরণের রোগটি জন্ম থেকে দেখা যায়। শরীরের ভিতরের সমস্ত কিছুর মধ্যে কিছু ত্রুটি দেখা যায়। যেমন হৃৎপিণ্ড থাকার কথা মানুষের বুকের বাম দিকে। কিন্তু এই ক্ষেত্রে হৃৎপিণ্ড রয়েছে বুকের ডান দিকে! এমনকী, বৃহদান্ত্র, লিভার থেকে অন্যান্য অঙ্গ-প্রতঙ্গ উল্টোদিকে অবস্থান করে। বিরল শারীরিক গঠনযুক্ত এই রোগীর বাড়ি নদীয়ার চাকদায়। বছর ৬২-এর আরতি গুহচৌধুরীর পেটেব্যথাও রক্তাল্পতার মতো রোগ ছিল।প্রাথমিক পরীক্ষা-নিরীক্ষায় শল্য চিকিত্সক পিকে মোহন্ত রোগীর শরীরের বিরল গঠনের কথা বুঝে যান। প্রায় আড়াই ঘন্টার চেষ্টায় ৭সদস্যের মেডিক্যাল টিম অসম্ভবকে সম্ভব করেছেন। বৃহদান্ত্রের ক্যান্সারের বিরল অস্ত্রোপচার সত্যিই ঝুঁকির।তবুও চিকিৎসকেরা জানান, অত্যন্ত যত্নের সঙ্গে বিরল রোগের এই অস্ত্রোপচার করেছেন। সরকারি হাসপাতালের চিকিত্সকদের হাতযশ দেখে মুগ্ধ রোগীর পরিবার।সবাই বলছেন,চিকিত্সকরাই হলেন দেবদূত,তাঁরাই আসলে ভগবান।জীবন ফিরিয়ে দিয়ে এই ইশ্বররূপী চিকিত্সকরা এখন জীবন-দেবতা হয়ে উঠেছেন।
তাঁর শরীরের বৃহদান্ত্রের ক্যান্সার অস্ত্রোপচার করে নজির গড়লেন কল্যাণী কলেজ অফ মেডিসিন অ্যান্ড জেএনএম হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের স্পেশাল টিম। অস্ত্রোপচারের পর বর্তমানে সুস্থ রয়েছেন ওই রোগী। বিনাব্যয়ে সরকারি হাসপাতালে এই চিকিৎসা পেয়ে খুশি রোগী ও তাঁর পরিবার। চিকিৎসকেরা আরও জানিয়েছেন, একজন বিরলপ্রায় রোগিণীর জন্য এই অস্ত্রোপচার ছিল অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। আপাতত তিনি সুস্থ ও স্থিতিশীল রয়েছেন।
বর্তমানে কলকাতার সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের মতোই জেলা হাসপাতালের পরিকাঠামো উন্নত করা হয়েছে।অত্যাধুনিক পরিষেবা মিলছে।সেখানে এখন যেভাবে জটিলও কঠিন রোগের চিকিত্সা থেকে অপারেশন হচ্ছে তাতে আর ভেলোর বা চেন্নাই যাওয়ার দরকার পড়ছে না বলে রোগীর পরিজনরা বলছেন।স্বাস্থ্যসাথী কার্ড থাকায় ব্যয়বহুল চিকিত্সাও অতি সহজে মিলছে।সবকিছু ছাপিয়ে সরকারি হাসপাতালের চিকিত্সকদের দায়িত্ব,কর্তব্যও নিষ্ঠার সঙ্গে রোগ সারানো বা অপারেশন করার তাগিদ সবমহলের কাছেই যে দরাজ প্রশংসা আদায় করে নিচ্ছে তা এককথায় বলাই যায়।চিকিত্সকদের সাধুবাদ জানাচ্ছেন চাকদার রোগীর পরিবার-পরিজন থেকে রোগী কল্যাণ সমিতির সদস্যরাও।