রাজ্যের খবর

চোখে কালো কাপড়, অকথ্য গালিগালাজ! পাক বন্দিদশায় পূর্ণমের বিভীষিকা

Black cloth over eyes, unspeakable abuse! Poornam's horror in Pakistani captivity

 

Truth Of Bengal: রাকেশ চক্রবর্তী, হুগলি: হুগলির বাসিন্দা ও বিএসএফ জওয়ান পূর্ণম কুমার সাউয়ের জীবনের ২২টি দিন যেন ভয়ঙ্কর দুঃস্বপ্ন হয়ে রয়ে গেল। কাশ্মীরের পহেলগাঁওতে সন্ত্রাসবাদী হামলার পরদিন, সীমান্তে টহলের সময় ভুল করে পাক ভূখণ্ডে ঢুকে পড়েন তিনি। এরপরই পাক রেঞ্জার্সের হাতে বন্দি হন পূর্ণম, আর শুরু হয় এক বন্দিদশার নারকীয় অধ্যায়।

পাক সেনার হেফাজতে টানা ২২ দিন চোখ কালো কাপড়ে বাঁধা অবস্থায় কাটাতে হয় তাঁকে। চোখের পাতা এক করতে পর্যন্ত দেওয়া হয়নি। যদিও শারীরিকভাবে অত্যাচার করা হয়নি, মানসিক নির্যাতন ছিল চরম পর্যায়ে। অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ, অব্যাহত মানসিক চাপ, জায়গা পরিবর্তন করে বারবার নতুন পরিবেশে স্থানান্তর — সব মিলিয়ে এক ভয়াবহ অভিজ্ঞতা।

পূর্ণম জানিয়েছেন, তাঁকে মোট তিনটি ভিন্ন জায়গায় রাখা হয়েছিল। তার মধ্যে একটি এয়ারবেসও থাকতে পারে বলে অনুমান করছেন তিনি, কারণ সেখানে তিনি বিমান ওঠানামার শব্দ শুনেছিলেন। কিছু সময়ের জন্য তাঁকে গারদেও বন্দি করে রাখা হয়েছিল।

পাক সেনা পূর্ণমের কাছ থেকে সীমান্তে বিএসএফের মোতায়েন পদ্ধতি, বিভিন্ন অফিসারের তথ্য ও ফোন নম্বর জানার চেষ্টা করে। তবে পূর্ণমের কাছে ফোন না থাকায় তেমন কোনও তথ্য পাচার সম্ভব হয়নি।

দুই দেশের দফায় দফায় কূটনৈতিক আলোচনার পর, অবশেষে বুধবার সকালে পূর্ণমকে ভারতের হাতে তুলে দেয় পাকিস্তান। ফিরেই তাঁর শারীরিক পরীক্ষা করা হয় এবং শুরু হয় বিএসএফের অভ্যন্তরীণ তদন্ত ও জিজ্ঞাসাবাদ। সেখানেই ধীরে ধীরে উঠে আসছে পাক সেনার হাতে তাঁর বন্দিদশার নির্মম অভিজ্ঞতা।

এই ঘটনার পর ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্যদের নিরাপত্তা ও প্রশিক্ষণ পদ্ধতি নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। পূর্ণমের অদম্য মানসিক শক্তির জন্যই তিনি তথ্য গোপন রেখে দেশের প্রতি তাঁর কর্তব্য পালনে সফল হয়েছেন বলে মনে করছে বিএসএফ।

Related Articles