রাজ্যের খবর

দশমীর পর থেকে গ্রামে আমিষ রান্না বন্ধ, অন্যরকম লক্ষ্মীপুজোয় মাতে ভাণ্ডারা গ্রাম

Lakshmi pujo 2023

The Truth of Bengal: ঘরে ঘরে চলছে ধনদেবীর আরাধনা। তবে একটু ব্যতিক্রমী লক্ষ্মীপুজো হয় উত্তর দিনাজপুর জেলার কালিয়াগঞ্জের পূর্ব ভাণ্ডার গ্রামে। এই গ্রামে দশমীর পরের দিন থেকে গ্রামের কোনও বাড়িতে আমিষ রান্না হয় না। কেন এই নিয়ম? এলাকার মানুষ জানিয়েছেন, আজ থেকে ২৯ বছর আগে লক্ষ্মীপুজোকে কেন্দ্র করে গ্রামে বাউল উৎসব চলছিল। সেই সময় গ্রামের কৃষক নরেশ চন্দ্র বর্মন জমিতে চাষ করার সময় তাঁর লাঙলের ফলায় আটকে যায় একটি পাথর।  পাথরটি পরিষ্কার করলে দেখা যায় তাতে খোদাই করা আছে লক্ষ্মী-নারায়ণের মূর্তি। খবর পেয়ে আসেন কালিয়াগঞ্জ থানা, জেলা প্রশাসন ও প্রত্নতাত্ত্বিকরা।

মূর্তিটির পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর জানা যায় সেটি কষ্টিপাথরের মূর্তি। প্রশাসনের তরফ থেকে মূর্তিটিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হলে গ্রামবাসীদের বাঁধার মুখে পড়ে ফিরে যেতে হয়। এরপর পূর্ব ভাণ্ডার গ্রামের বাসিন্দারা একটি মন্দির বানিয়ে মূর্তিটির পূজো শুরু করেন ২৯ বছর আগে। সারা বছর নিয়ম নিষ্ঠার সঙ্গে দু’বেলা করে পুজো করলেও কোজাগরী লক্ষ্মী পুজোর দিনটিতে মহাসমারোহে পূজোর আয়োজন করা হয় এখানে। প্রতিবছর লক্ষ্মীপুজোর দিন গ্রামের মহিলারা কোনও মতো বাড়ির পুজো সেরে সন্ধ্যার মধ্যে লক্ষ্মী-নারায়ণ পূজো মণ্ডপে এসে হাজির হন।

কারণ মন্দিরে পুজো না করলে তাদের পুজো সম্পূর্ণ হয় না। পুজোয় গ্রামের সমস্ত মহিলা উপোস থাকেন। তার আগে কয়েকদিন গ্রামে আমিষ রান্না বন্ধ হয়ে যায়।পুজোকে কেন্দ্র করে এই গ্রামে আসে হাজার হাজার মানুষ। বিশাল মেলা বসে। তিন দিন তিন রাত ধরে চলে বাউল গানের আসর। তিন দিন পর  মহাপ্রভুর ভোগ দিয়ে মেলা ভাঙা হয়। লক্ষ্মীপুজোকে কেন্দ্র করে এই ভাণ্ডারা গ্রামে থাকে উৎসবের মেজাজ।

Free Access

Related Articles