কলকাতারাজ্যের খবর
ধর্ষণ রোধে ফাঁসির আইন চেয়ে বিধানসভায় আসছে বিল, বড় পদক্ষেপ মমতার
A bill is coming to the assembly asking for a death penalty law to prevent rape, Mamata's big step

Truth Of Bengal : আজ রাজ্যজুড়ে বনধের ডাক দিয়েছিল বিজেপি। মোট ১২ ঘণ্টা বনধটি চলবে বলে জানিয়েছিলেন বিজেপির একাধিক নেতৃত্বরা। ছাত্রদের ওপর পুলিশের অত্যাচারের দাবিতে এই বনধের ডাক দেওয়া হয়েছে বলে দাবি তাদের। এই বনধ সফল করতে সকাল থেকে তৎপর হয়েছে বিজেপি। বেলা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বিক্ষিপ্ত অশান্তির খবরও মেলে। সেই আবহে ধর্মতলার মেয়ো রোডে চলছিল তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সমাবেশ। সেই সমাবেশের প্রধান বক্তা হলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
- সকাল সকাল বাংলার মানুষকে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি বার্তা দেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একইসঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি লেখেন, ‘‘আজকের দিনটি আরজি করের বোনটির জন্য উত্সর্গ করছি। তাঁকে হারানোর জন্য আমরা দারুণভাবে মর্মাহত হয়েছি।তাঁর অকাল মৃত্যুর জন্য সমবেদনা জানাচ্ছি। একইসঙ্গে তিনি পাশবিক অত্যাচারের নিন্দাও করেছেন। দ্রুত ন্যায়বিচার চেয়ে সরব মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই অবস্থায় আরজি কর কাণ্ডের সুবিচার চেয়ে তৃণমূলের শীর্ষ নেতারা সমাবেশ থেকে কী বক্তব্য পেশ করেন তার দিকে তাকিয়ে সব মহল”।
- বুধবার প্রায় সকাল ১১:৪৪ নাগাদ টিএমসিপির প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে মেয়ো রোডে সমাবেশে উপস্থিত হন তৃণমূল সুপ্রিমো।
- আরজি কর-কাণ্ডে বিজেপির ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, ‘‘আসল আন্দোলনের মুখ ঘোরানোর চেষ্টা করছে বিজেপি। আজকে জেনেশুনে বনধ ডেকেছে। ওদের বডি চাই। আমরা বিচার চাই, দোষী ব্যক্তির শাস্তি চাই। আর ওরা আসল আন্দোলনে জল ঢেলে দিয়েছে। বাংলাকে বদনাম করার খেলায় নেমেছে। আমি তাদের ধিক্কার জানাই।’’
- এরপর মমতা বলেন, ‘‘কীসের বনধ। যদি বনধ করতে হয় তবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে বনধ করো। যিনি আজ পর্যন্ত শুধু এজেন্সি লাগিয়ে মাুষের উপর অত্যাচার করা ছাড়া কিছুই করেননি।’’
- পুলিশের প্রশংসায় পঞ্চমুখ মমতা। তার কথায়, ‘‘আমি কালকের জন্য পুলিশকে স্যালুট জানাই। সংযত থেকেছে। নিজের রক্ত দিয়েছে। কিন্তু বিজেপির চক্রান্তের ফাঁদে পা দেয়নি।’’
- মমতা বলেন, ‘‘আমি আইনজীবীদের বলব কোর্টে বিজেপিকে ছেড়ে দেবেন না। মানুষ যাতে কোর্টে গিয়ে বিচার পায়, সেটাই দেখবেন।’’
- টিএমসিপির সভা থেকে মমতা বলেন, ‘‘যা ঘটেছে, তা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। কিন্তু তার পরে কী অ্যাকশন যাতে দেরি না হয়, কোনও ভুল ত্রুটি না হয় সেটাই দেখার। আমরা চেয়েছিলাম সাত দিনের মধ্যে ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টের মাধ্যমে ব্যবস্থা করে দিতাম।’’
- মমতা বলেন, ‘‘আজকে যাঁরা কামদুনির কথা বলেন, তাঁদের বলি কামদুনির ঘটনাতেও আমরা ফাঁসি চেয়েছিলাম। হাই কোর্টের রায়ে দু’জনের যাবজ্জীবন হয়েছিল। অনেক চোর-ডাকাতকে এখন ছেড়ে দেওয়া হয়। আমার কাছে অনেক ফাইল আসে, বলা হয় ১০-১২ বছর কেটে গেছে ছেড়ে দেওয়া হোক। কেন অত্যাচারীদের ছেড়ে দেওয়া হবে? ধর্ষকদের কেন ছাড়া হবে? এটা কী সের নিয়ম। প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে সতর্ক করলাম ন্যায় সংহতি নিয়ে। কী সের প্রয়োজন ছিল ন্যায় সংহতির।’’
- মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আগামী সপ্তাহে স্পিকারকে বলে বিধানসভায় বিশেষ অধিবেশন ডাকব। আগামী ১০ দিনের মধ্যে ‘ধর্ষকের ফাঁসি চাই’ এই বিল এনে পাশ করে রাজ্যপালের কাছে পাঠাব।’’
- সভা থেকে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে আক্রমণ করে মমতা বলেন, ‘‘আমি জানি রাজাবাবু কিছু করবেন না। যদি তিনি (বিলে সই) না করেন , তবে মেয়েরা রাজভবনে গিয়ে বসে থাকবে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকবে। এই বিল সই করতে হবে। রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠিয়ে দিয়ে দায়িত্ব সারলে হবে না। আপনার রাজভবনের এক জন মহিলা কর্মীকে নির্যাতন করেন। সেই মেয়েটা বিচার পায়নি।’’
- মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘কাল (মঙ্গলবার) কার এসেছিল? ছাত্রছাত্রীরা তোমাদের কারও সঙ্গে নেই। শুভ সমাজ নেই। বাংলার লোক হলে কি নবান্ন, রাজভবন চিনত না? আমি তো কাল দেখলাম রাজভবনের দক্ষিণ গেটেও ঢিল মেরেছে। এরা কারা? এরা কোথা থেকে এসেছে? কেউ যদি মনে করেন বাইরে থেকে এসে বাংলাকে অশান্ত করবেন, তাঁরা মনে রাখবেন বাংলা অচল হয় না।’’
- মমতা বলেন, ‘‘কাল যাঁরা যাঁরা হামলা করেছেন, তাঁদের খুঁজে বার করা হবে। আমি চাই সকলের শাস্তি হোক। কোর্ট কী করবে আমি জানি না। তবে মানুষ শাস্তি দেবে। আমি মানুষকে এ কথা বলব না যে, আইন হাতে তুলে নিন।’’