অ্যাডভেঞ্চার চান? পুজোর ছুটিতে জঙ্গলে নাইট সাফারি করবেন ভাবছেন? হাতের নাগালে ৬টি অভয়ারণ্যে
Tourisam of Madhya Pradesh

The Truth of Bengal,Mou Basu: আলোর বেণুর বেজে উঠতে আর হাতে গোনা কয়েকটি দিন বাকি। ভ্রমণ প্রিয় বাঙালির সর্বদাই পায়ের তলায় সর্ষে। পুজোর ছুটিতে অনেকেই ব্যাক্স প্যাঁটরা গুছিয়ে বেড়ানোর পরিকল্পনা অনেক আগে থেকেই করে ফেলেছেন। আপনি কি অ্যাডভেঞ্চারপ্রিয়? জীবনে রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতার সাক্ষী থাকতে গতে বাঁধা রুটিনে না চলে এবারের ছুটিতে জঙ্গলে নাইট সাফারির সুযোগ নিতে পারেন। জঙ্গল সাফারি মূলত দিনের বেলায় হয়। রাতের অন্ধকারে কখনো জঙ্গলে ঘুরে বেড়ানোর কথা ভেবেছেন? বন্যপ্রাণীর ভয় থাকে ঠিকই কিন্তু রাতে জঙ্গল সাফারি আরো রোমাঞ্চকর। যাঁরা বন্যপ্রাণী ভালোবাসেন, রাতের অন্ধকারে জীবজন্তুর কার্যকলাপ দেখতে নাইট সাফারি করতে পারেন ৬ অভয়ারণ্যে –
১) কানহা ন্যাশনাল পার্ক – মধ্য প্রদেশের সাতপুরা পর্বত শ্রেণির মাইকাল রেঞ্জের পাদদেশে অবস্থিত ৯৪০ বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বিস্তৃত কানহা ন্যাশনাল পার্ক ভারতের অন্যতম সেরা অভয়ারণ্য। মুক্কি বাফার জোনে নাইট সাফারি করা যায় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত। অক্টোবরের মাঝামাঝি থেকে জুন পর্যন্ত বেড়ানোর মরসুম। তবে বেড়ানোর সেরা সময় নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হলে রাতে বাঘমামার দর্শন হতেই পারে।
২) পেঞ্চ ন্যাশনাল পার্ক: মধ্য প্রদেশের সেওনি আর ছিন্দওয়াড়া জেলায় অবস্থিত এই পেঞ্চ ন্যাশনাল পার্ক। ৭৫৮ বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বিস্তৃত এই জঙ্গলে বহু বিরল প্রজাতির গাছপালা, পশুপাখি দেখতে পাওয়া যায়। দিনের বেলার মতোই নাইট সাফারিও খুবই জনপ্রিয় পেঞ্চের জঙ্গলে। খাওয়াসা বাফার জোন ও কর্মাঝিরি গেটের কাছে টিকাড়ি বাফার জোনে নাইট সাফারি করা যায় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত। অক্টোবরের মাঝামাঝি থেকে জুন পর্যন্ত বেড়ানোর মরসুম। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হলে রাতে বেঙ্গল টাইগার, নেকড়ে, হায়না, বন্য শূকর, বুনো কুকুরের দর্শন হতে পারে।
৩) বাঘ দর্শনের সেরা ঠিকানা মধ্য প্রদেশের বান্ধবগড় জাতীয় উদ্যান। এই জঙ্গলে প্রায় ৩৭ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী, ২৫০ প্রজাতির পাখি ও ৮০ রকমের প্রজাপতি ও সরীসৃপের দেখা মেলে। এছাড়াও বাঘের দর্শন পেতে একবার বান্ধবগড়ে সাফারি করা প্রয়োজন। দিনের বেলার জিপ ও হাতির পিঠে চেপে সাফারির মতোই নাইট সাফারিও জনপ্রিয় বান্ধবগড় জাতীয় উদ্যানে। রাতের অন্ধকারে ঝিঁঝি পোকার ডাক ও জোনাকির আলোয় জঙ্গল সাফারি এক অন্য রকম অভিজ্ঞতা। পারিসি আর পাচপেড়ি বাফার জোনে নাইট সাফারি করা যায় সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা থেকে রাত সাড়ে ৯টার মধ্যে। অক্টোবরের মাঝামাঝি থেকে জুন পর্যন্ত বেড়ানোর মরসুম। তবে বেড়ানোর সেরা সময় এপ্রিল ও মে মাস। স্লথ বিয়ার, চিতাবাঘ, বেঙ্গল টাইগার, এশিয়াটিক শেয়ালের মতো বন্যপ্রাণী দেখা যায় রাতের অন্ধকারে।
৪) মহারাষ্ট্রের তাদোবা-আন্ধারি ন্যাশনাল পার্কে বাঘ, স্লথ বিয়ার ছাড়াও ১৯০ রকম প্রজাতির পাখি, ৭০ রকম প্রজাতির প্রজাপতি, বিভিন্ন রকমের সরীসৃপের দেখা মেলে। মহারাষ্ট্রের চন্দ্রপুর জেলায় ১৭২৭ বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বিস্তৃত এই জঙ্গল। সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত নাইট সাফারি করা যায়। অক্টোবরের মাঝামাঝি থেকে জুন পর্যন্ত বেড়ানোর মরসুম। তবে বেড়ানোর সেরা সময় এপ্রিল ও মে মাস।
৫) মধ্য প্রদেশের হোশাঙ্গাবাদ জেলায় অবস্থিত সাতপুরা ন্যাশনাল পার্ক। Rhesus monkey, giant squirrel, flying squirrel, leaf-nosed bat এর মতো বিরল প্রজাতির বন্য প্রাণীর বাস এই জঙ্গলে। বহু বিরল প্রজাতির গাছপালা, পশুপাখি, সরীসৃপের দেখা মেলে এই জঙ্গলে। বিকেল সাড়ে ৫টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত নাইট সাফারি করা যায় পারসাপানি ও সেহেরা বাফার জোনে। অক্টোবর থেকে জুন পর্যন্ত বেড়ানোর মরসুম।
৬) বন্যপ্রাণী ও পাখিপ্রেমীদের স্বর্গরাজ্য হল মধ্য প্রদেশের পান্না ন্যাশনাল পার্ক। পান্না আর ছত্তরপুর জেলায় ৫৪৩ বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বিস্তৃত এই জঙ্গলে বাঘ ছাড়াও ঘরিয়াল ও শকুনের দেখা মেলে। ভারতে যে ৯ প্রজাতির শকুন দেখতে পাওয়া যায় তারমধ্যে ৭ প্রজাতির শকুন দেখতে পাওয়া যায় এই জঙ্গলে। ২০০ রকমের পাখি ছাড়াও বহু স্তন্যপায়ী প্রাণী ও সরীসৃপের দেখা মেলে। জিন্না আর আকোলা বাফার জোনে সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত নাইট সাফারি করা যায়। অক্টোবর থেকে জুন পর্যন্ত বেড়ানোর মরসুম।