ভ্রমণ

এবারের উইকেন্ডের ডেস্টিনেশন কল্যাণেশ্বরী মন্দির

Tourism of West Bengal

The Truth of Bengal: বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ। শুরু হয়েছে পুজোর মরশুমও। আর দুর্গা পুজো পার হলেই আসতে চলেছে রোশনাইয়ের উৎসব- কালি পুজো। আর আজ আপনাদের যেই জায়গার বর্ননা দেব, সেখানে গত ৫০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে জাঁকজমকের সহিত মা কল্যাণেশ্বরী দেবীর পুজো হয়ে আসছে। বাংলার পশ্চিম বর্ধমান জেলার এই পর্যটন কেন্দ্রে সারা বছরজুড়ে ভক্তদের সমাগম লেগেই থাকে। হ্যাংলা পাহাড়ে ৫০০ বছরের প্রাচীন কল্যাণেশ্বরী মাতার মন্দির।

কথিত আছে, কুষাণদের তাড়া খেয়ে হরিগুপ্ত পালিয়ে এসে রাজ্য গড়েন হ্যাংলা পাহাড়ে। মন্দিরও গড়েন। তবে, এখনকার মন্দিরটি পঞ্চকোটের রাজার তৈরি। অতীতে নরবলির প্রথা ছিল। কৃত্রিম গুহামুখে অষ্ট ধাতুর মূর্তি দেবীর। আর অন্দরে সোনার তৈরি দেবীর মূল মূর্তি রয়েছে। মন্দির চত্বরেই রয়েছে চতুর্দশ শিব মন্দির। শ্রীরামকৃষ্ণ মন্দির তৈরি হয়েছে কল্যাণেশ্বরী মন্দিরের প্রবেশপথে। অপরদিকে, আরও একটি কাহিনীর প্রচলন রয়েছে। সবনপুরের চারপাশে ছিল গ্রাম। সেখানে নাকি সারাদিন ধান থেকে চাল ও চিড়ে তৈরি করা হত। ঢেকির আওয়াজে দেবী কল্যাণেশ্বরী বিরক্ত হয়ে কাশিপুর রাজাকে স্বপ্নাদেশ দিয়ে বলেন, তাঁকে অন্যত্র স্থানান্তরিত করতে।

দেবীর স্বপ্নাদেশ পেয়ে রাজা নিকটবর্তী একটি জঙ্গলে দেবীর মন্দির স্থানান্তরিত করেন। পরে এই জঙ্গলকে ঘিরে সিদ্ধপীঠ গড়ে ওঠে। এই মন্দিরটিই আজ কল্যাণেশ্বরী মন্দির নামে পরিচিত। যদিও, এত প্রচলিত কাহিনীর অস্তিত্ব থাকলেও, বছর বছর অমাবশ্যার পুণ্যলগ্ন ছাড়াও সর্বক্ষণই দর্শনার্থীদের ভিড় লেগেই থাকে। অপরদিকে,কল্যাণেশ্বরী মন্দিরের পাশ দিয়েই গিয়েছে বরাকর নদ। এই নদের উপরেই তৈরি হয়েছে মাইথন ব্যারাজ। গড়ে উঠেছে দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন।

১৯৫৭ সালে এই ব্যারেজে তৈরির পরিকল্পনা করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু। যারা মন্দির দর্শন করতে আসবেন, তাদের জন্য রয়েছে আরও ব্যবস্থাও। এখানে গড়ে তোলা হয়েছে সবুজ দ্বীপ, সুলেমান পার্ক, আনন্দ দ্বীপ, গোল্ডেন জুবলি পার্ক, হিরণ পার্ক, ভান্ডার পাহাড় শিব মন্দির প্রভৃতি স্থানও। তবে এখানে পৌঁছতে গেলে আপনি সড়কপথে ১৯ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে আসতে পারেন। আর নাহলে কলকাতা থেকে ট্রেনে চেপে আসানসোলে নেমে ২০ কিমি পথ গাড়িতে করে এসে আপনি গন্তব্যে পৌঁছতে পারেন। পর্যটন কেন্দ্রের নিকটবর্তী একাধিক হোটেলও রয়েছে থাকার জন্য। আর সব মিলিয়ে, উইকেন্ডে যদি হাওয়া বদল করতে চান তাহলে ঘুরে আসুন বাংলার অসামান্য এই ট্যুরিস্ট স্পট থেকে।

Free Access

Related Articles