ফের এভারেস্টের শৃঙ্গ জয়ের উদ্দেশে ঘর ছাড়লেন রুম্পা
Rumpa leaves home to conquer Mount Everest again

Truth Of Bengal: সুদীপ্ত ভট্টাচার্যঃ পৃথিবীর সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে যুগ যুগ ধরে। যার পরতে পরতে রয়েছে নানা রহস্য। বরফের সুন্দর ভাস্কর্যের মাঝেও যেখানে একটি ভুল মানেই মৃত্যুর হাতছানি। তবুও সেই বরফঘেরা সর্বোচ্চ শৃঙ্গ ছোঁয়ার আনন্দে মাতোয়ারা হয়ে ওঠেন সারা বিশ্বের পর্বতারোহীরা। ব্যতিক্রম নন বাঙালিরাও।
এর আগে বহু বাঙালি পবর্তারোহী মাউন্ট এভারেস্টের শৃঙ্গ জয় করেছেন। বসন্ত সিংহরায়, দেবাশিস বিশ্বাস, পিয়ালী বসাক, ছন্দা গায়েনের পর এবার পৃথিবীর উচ্চতম শৃঙ্গ জয়ের লক্ষ্যে সোমবার রওনা দিলেন নদিয়ার তরুণ পর্বতারোহী পেশায়া শিক্ষিকা রুম্পা দাস।
রুম্পার সঙ্গে পর্বতের ভালবাসার সম্পর্কও বহুদিনের। যেহেতু রুম্পা ছোট থেকেই ভালবাসতেন এই সুন্দর প্রকৃতিকে। পাহাড়ও প্রকৃতিরই অঙ্গ। সেই কারণেই পাহাড়ের প্রতি তাঁর ভালবাসা। রুম্পা ছোট থেকেই পাহাড়ে উঠতে পছন্দ করতেন। সেই লক্ষ্যেই ট্রেকিং শুরু করেছিলেন। তবে এখানেই থেমে থাকা নয়, রুম্পার লক্ষ্য ছিল আরও বহু দূর।
কাজেই এবার সেই লক্ষ্যে জয়ের উদ্দেশ্য নিয়েই ভরতি হওয়া কৃষ্ণননগর মাউন্টিরায়িং ইন্সটিটিউট (ম্যাক)-এ। পর্বত আরোহণের রক ক্লাইম্বিং কোর্সে ভরতি হয়ে পাহাড়ের আরও ভালবাসা গাঢ় হয় রুম্পার। এরপর ভারতবর্ষের সেরা মাউন্টেরিয়াং ইন্সটিটউট থেকে বিভিন্ন অ্যাডভান্স কোর্স সম্পূর্ণ করেন রুম্পা।
মাউন্ট এভারেস্ট, নেপালিদের কাছে সাগরমাথা নামে খ্যাত। এবার সেই শৃঙ্গ জয় করতে ৩১ মার্চ কাঠমান্ডুর উদ্দেশে রওনা দিলেন রুম্পা। মিথিলা এক্সপ্রেসে রক্সৌল পৌঁছে সেখান থেকে কাঠমান্ডু। তারপর সেখান থেকে লুকলা। এই স্থান থেকেই এভারেস্ট জয়ের লক্ষ্যে ট্রেকিং শুরু করবেন তিনি।
পেশায় শিক্ষিকা রুম্পা এর আগেও এভারেস্টের টানে ছুটে গিয়েছিলেন তারই পদতলে। সালটা ছিল ২০২১। মহামারি করোনা তখন থাবা বসিয়েছে গোটা বিশ্বে। সেই সময় এভারেস্টের শিখর জয়ের টানে তাঁরই কোলে উপস্থিত ছিলেন রুম্পা। এমনকি ক্যাম্প টুতেও পৌঁছে গিয়েছিলেন। হলে কি হবে, সেখানেও করোনা পিছু ছাড়েনি রুম্পার। কোভিডে আক্রান্ত হয়েই এভারেস্টের ২ নম্বর ক্যাম্প থেকে ফিরে আসতে হয়েছিল তাঁকে। কিন্তু ভেঙে পড়েননি রুম্পা। প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, এবার হল না ঠিক কথাই, এর পর আমি আসব। তোমার শিখর স্পর্শ করার জন্য।
রুম্পা শুধু একজন পর্বতারোহীই নন। পেশায় একজন শিক্ষিকা এবং সমাজসেবীও বটে। শিক্ষিকার মত গুরু দায়িত্ব সামলে পর্বতারোহণের এত উৎসাহের পিছনে রয়েছে রুম্পারই অগণিত ছাত্র-ছাত্রীরা। তাঁদের ভালবাসাকে পাথেয় করেই রুম্পা এগিয়ে চলেন প্রতিনিয়ত। ছাত্র-ছাত্রীদের সম্বন্ধে বলতে গিয়ে রুম্পা আবেগঘন গলায় বলেন, ‘ওরাই আমার সব।
আমি যখনই যে কোনও অভিযানে যাই না কেন, ওরা আমার সঙ্গেই যায়। আমি শারীরীকভাবে গেলেও, মানসিকভাবে ওরা আমার সঙ্গেই থাকে। ওদের ভালবাসাকে সম্বল করেই আজ ফের আমি ছুটে চলেছি সাগরমাথা শৃঙ্গ জয়ের উদ্দেশে।’ আপনি সফল হয়ে সুস্থ অবস্থায় ঘরে ফিরে আসুন রুম্পা। এই প্রার্থনা আমরাও করি। বাঙালি মহিলা পর্বতারোণকারী হিসাবে ফের মাউন্ট এভারেস্টের শৃঙ্গ আপনি জয় করে ফের পর্বতারোহণে নতুন ইতিহাস রচনা করুন আমরা সর্বদাই সেটাই প্রার্থনা করি।