খেলা

ছেলে ভিগ্নেশের জন্য গর্বিত পেশায় অটোচালক পিতা সুনীল

Auto driver father Sunil is proud of his son Vignesh

Truth Of Bengal: সুদীপ্ত ভট্টাচার্য: দক্ষিণ ভারতের অন্যতম রাজ্য কেরল। সেই রাজ্যের একটা জেলা মল্লপুরুম। দক্ষিণ ভারতের অঙ্গ রাজ্যের এই অখ্যাত জেলাটিই আজ রাতারাতি হয়ে স্থান করে নিয়েছে ভারতীয় ক্রিকেটের মানচিত্রে। এর পিছনের কারণ একটাই। সেটা হল রবিবার আইপিএল-র ম্যাচে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের হয়ে দুরন্ত খেলা স্পিনার ভিগ্নেশ পুথুরের অসামান্য বোলিং।

কথায় আছে, প্রতিভা যাঁর আছে, তাঁকে আটকায় সাধ্য কার! ভিগ্নেশের ক্ষেত্রেও এই কথাটা প্রযোজ্য। ক্রিকেট বড় লোকের খেলা বলে পরিচিত। তাই পেশায় অটোচালক সুনীল কুমার তাঁর ছেলেকে বড় ক্রিকেটার বানাবেন এই স্বপ্ন কখনও দেখেছিলেন কি না জানা নেই। কিন্তু ভিগ্নেশ সেই স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করে ক্রিকেটের মেগা মঞ্চে প্রথম ম্যাচেই নজর কেড়েছেন।

নিজস্ব চিত্র

মঙ্গলবার বিকাল গড়িয়ে তখন সবেমাত্র সন্ধ্যা নামতে শুরু করেছে। সারাদিনের ক্লান্ত শরীর নিয়ে সেই সময় সবেমাত্র বাড়ি ফিরেছেন মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের স্পিনার ভিগ্নেশের বাবা সুনীল কুমার। দিনভর হারভাঙা খাঁটুনি। কাজেই দিনের শেষে শরীর আর চলে না। ঘরে ফিরে অবসন্ন শীররে বিশ্রাম নিতে নিতেই যখন ভিগ্নেশের সম্বন্ধে জানতে চাওয়া হলে গর্বিত বাবা বলেন, ‘ভিগ্নেশ আমার গর্ব, আমার অহঙ্কার।

ছোটবেলা থেকেই কঠিন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ওর ক্রিকেট খেলা শুরু। আজ সাফল্য পেতে শুরু করেছে। তবে মনে রাখতে হবে এখানেই যেন থেমে না থাকে। আরও অনেক দূর যেতে হবে। ওকে জাতীয় দলের জার্সি গায়ে দেখতে চাই। সেদিনই স্বপ্ন পূরণ হবে আমাদের সকলের।’

কথা কথা বলতে বলতে সুনীল যে বেশ আপ্লুত হয়ে পড়ছিলেন তা ভালই বোঝা যাচ্ছিল। সব শেষে সুনীলের আবেদন, ‘এখনই ভিগ্নেশকে নিয়ে অতিরিক্ত কিছু লিখবেন না। যাতে ওর খেলায় প্রভাব না পড়ে।’

বলেই সুনীলবাবু ফোন ধরিয়ে দিলেন পাঁশে থাকা ভিগ্নেশের ছোটবেলার কোচ বিজয়কুমারকে। প্রিয় ছাত্র প্রথম ম্যাচে ভাল পারফরম্যান্স করলেও এখনই ভিগ্নেশকে নিয়ে মাতামাতি না পসন্দ বিজয়বাবুর-ও। তিনি শুধু বলেন, ‘আজকে ওর পারফরম্যান্স দেখে সবাই ভিগ্নেশকে নিয়ে মাতামাতি করছে। এটা ঠিক নয়। এখন ওকে আরও অনেকদূর যেতে হবে। সবে শুরু করেছে পথ চলা।

কাজেই ভিগ্নেশের মাথাটা ঠিক রাখা এই সময় খুব জরুরি। ভিগ্নেশের প্রতি আমার একটাই আবেদন, চেন্নাই ম্যাচ ভুলে যাও। সামনের দিকে এগোও। আরও ভাল খেলার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করো। জাতীয় দলের হয়ে তোমাকে আমরা দেখতে চাই। সেদিন-ই স্বপ্ন পূরণ হবে। মনে রাখবে খেলতে না পারলে কেউ পুছবে না।’

ছেলের জন্য গর্বিত মা কেপি বিন্দু-ও। গৃহবধু হলেও ছেলের খেলার পিছনে যাবতীয় নজর রাখতেন তিনিও। তাই ছেলের পারফরম্যান্সে তিনিও খুব খুশি। তবে ভিগ্নেশের বাবা ও কোচের কথাকে সমর্থন করে সবার কাছে আগামী দিনে ভিগ্নেশ যাতে আরও ভাল খেলতে পারে, সেইজন্য আশীর্বাদ প্রার্থনা করলেন তিনি।

Related Articles