চুমু শুধু ভালোবাসা, সুখানুভূতিই জাগায় না, জানেন কি চুমু দূর করে মানসিক উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠাও
Kisses not only evoke love and happiness, but do you know that kisses also remove mental anxiety and worry?

Truth Of Bengal : মৌ বসু : চলছে ভালোবাসার সপ্তাহ। ভালোবাসার মানুষরা তাঁদের প্রিয়জনের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশের জন্য বিভিন্ন দিন উদযাপন করছে। কারোর প্রতি ভালোবাসা প্রকাশের অন্যতম মাধ্যম হল চুম্বন। চুমুর মাধ্যমে বোঝা যায় প্রেমিক যুগলের মধ্যে সততা, বিশ্বস্ততা। প্রেমের সম্পর্কে অজস্র কথা যা প্রকাশ করতে পারে না তা সহজ ভাবে বুঝিয়ে দিতে পারে একটি আলতো চুমু। প্রতি বছর ১৩ ফেব্রুয়ারি মহাসমারোহে পালন করা হয় কিস ডে বা চুম্বন দিবস।
কতটা স্বাস্থ্যকর চুমু?
১) চুমুর মাধ্যমে অক্সিটোসিন, সেরোটোনিন আর ডোপামিন নামক ফিল গুড হরমোনের নিঃসরণ হয় যা মনকে চাঙ্গা রাখে, উৎফুল্ল করে, বন্ধন দৃঢ় করে।
২) চুমু খেলে অক্সিটোসিন হরমোনের নিঃসরণ বাড়ে যা একদিকে যেমন সম্পর্ককে মজবুত ও দৃঢ় করে তোলে তেমনই মনের আত্মতুষ্টি ও আত্মতৃপ্তি বাড়ায়। যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দীর্ঘমেয়াদি সম্পর্কের ক্ষেত্রে।
৩) চুমু স্ট্রেস হরমোন কর্টিসলের নিঃসরণ কমায়। আত্মবিশ্বাস জোগায়। অক্সিটোসিন হরমোন মনের উদ্বেগ ও অবসাদ দূর করে। তাই চুমু উদ্বেগ কমায়, রিল্যাক্স করতে সাহায্য করে।
৪) চুমু রক্তনালিকে নরম করে। রক্তচাপ স্বাভাবিক করে। মাথার যন্ত্রণা কমায়। স্ট্রেস থেকে মাথার যন্ত্রণা হয়। চুমু খাওয়ার সময় আপনার হৃৎস্পন্দনের হার বেড়ে যায়। রক্তনালি প্রসারিত হয়। রক্ত সঞ্চালন বাড়ে।
৫) গবেষণায় দেখা গেছে চুমু খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। চুমু খেলে মুখে লালা নিঃসরণ হয় যা দাঁত থেকে প্লাক পরিষ্কার করে। ভালো ব্যাক্টেরিয়ার সংস্পর্শে আনে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
৬) চুমু প্রতি মিনিটে ২-৩ ক্যালরি ঝরাতে সাহায্য করে। বিপাকক্রিয়া দ্রুত হয়। হৃৎস্পন্দনের হার বেড়ে যায় বলে অক্সিজেনের প্রবাহ দ্রুত গতিতে হয়। ক্যালরি বেশি পরিমাণে ঝরে।
৭) গবেষণায় দেখা গেছে, চুমু খেলে প্রেমিক যুগলের টোটাল সেরাম কোলেস্টেরল মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে। ক্রনিক রোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে চুমু। চুমু খেলে মুখের ফেশিয়াল মাসল বা পেশি মজবুত হয়। স্যালাইভা বা জিভের লালা তৈরিতে সাহায্য করে চুমু দাঁতে ক্যাভিটিজ হওয়া রোধ করে।
জানেন কি বিভিন্ন কায়দার চুমুর আছে বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা—
১) কপালে আলতো চুমু সম্পর্কে গভীরতা এবং নির্ভরতা বোঝায়।
২) কানে চুমু বোঝায় আপনি প্রেম সম্পর্কে কতটা প্যাশনেট।
৩) ঘাড়ে চুমু খাওয়া বোঝায় প্রেমিক বা প্রেমিকা খুবই রোম্যান্টিক।
৪) গালে চুমু ইঙ্গিত দেয় বন্ধুত্বের।
৫) কাঁধে চুমু বুঝিয়ে দেবে আপনার প্রিয়জনকে আপনি কতটা চান।
৬) সবচেয়ে প্যাশনেট ভঙ্গিতে চুমু হল লিপ টু লিপ কিস বা ওষ্ঠ চুম্বন। প্রেমের সম্পর্ককে অন্য উচ্চতায় পৌঁছে দেয়। গভীর মানসিক একাত্মতাকে নির্দেশ করে।
চুমুর রয়েছে কিছু ক্ষতিকর দিকও, জানেন কী তা
১) চুমু নিয়ে করা বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে চুমু খেলে ব্যাক্টেরিয়া আদান-প্রদান হয়। কিন্তু চুম খেলে আক্রান্ত ব্যক্তির শরীর থেকে হারপিস ভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে পারে।
২) এছাড়া চুমুর মাধ্যমে সিফিলিস রোগ সংক্রমণ হতে পারে। ট্রেপোনেমা প্যালিডাম নামক ব্যাক্টেরিয়ার সংক্রমণে এই রোগ হয়। চুমু বা অনিয়ন্ত্রিত যৌনক্রিয়ার ফলে এই সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে। এই রোগে ব্যথাহীন ফোস্কা ফুটে ওঠে।
তাই অসুস্থ হলে চুমু খাবেন না। ওরাল হাইজিন ভালো করে বজায় রাখুন। সর্দি, কাশি, মুখে আলসার বা ঘা হলে চুমু খাবেন না।