লাইফস্টাইল

রান্নার স্বাদের গুণ বাড়ায়, সাথে রয়েছে ওষধিগুণ “জায়ফল”

Lifestyle

The Truth of Bengal: সারা পৃথিবীতে খ্যাতি ভারতীয় রান্নায় ব্যবহৃত বিভিন্ন মশলার। এই মশলা শুধু রান্নার স্বাদই বাড়ায় না, ওষুধিগুণেও এসব মশলা অনন্য। এমনই এক অসাধারণ মশলা হল জায়ফল। ইংরেজিতে জায়ফলকে বলা হয় নাটমেগ (Nutmeg)। সুগন্ধি জায়ফলের বৈজ্ঞানিক নাম Myristica fragnans। ভারতে তামিলনাড়ু, কর্ণাটক, কেরালায় চাষ করা হয় জায়ফল। এছাড়াও মালয়েশিয়া, চিন, ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জ, তাইওয়ান, লাতিন আমেরিকা ও শ্রীলঙ্কাতেও চাষ করা হয় এই মশলার। তলপেটে অনেক সময় খ্যাঁচ লেগে গিয়ে তীব্র ব্যথা অনুভব হয়। সেক্ষেত্রে ম্যাজিকের মতো কাজ করে জায়ফল। জায়ফলের গুঁড়ো তলপেটের ক্র্যাম্প (খিমচে ধরা) দূর করে। জায়ফলে ইউজেনল অয়েল থাকায় দাঁতের ব্যথা কমায়। তাই আর্য়ূবেদ টুথপেষ্টে থাকে জায়ফল। জায়ফলের গুঁড়ো গ্যাস থেকে হওয়া ব্যথা, ডায়রিয়া, বমি বমি ভাব কমায়। সুগন্ধি ও ওষধিগুণে সমৃদ্ধ জায়ফল হজমের গণ্ডগোল, কোষ্ঠকাঠিন্য ও আলসারের সমস্যাও আটকায়। মস্তিষ্কের স্নায়ুকে স্টিমিউলেট করতে পারে জায়ফল। এমনকী, গ্রিক, রোমানরাও জায়ফলকে ব্রেন টনিক হিসাবে ব্যবহার করত। জায়ফল স্টিমিউল্যান্ট আর সিডেটিভ হিসাবে কাজ করে বলে মানসিক অবসাদ ও দুশ্চিন্তা কমাতে সাহায্য করে।

সেক্সুয়াল হেল্থ ভালো রাখে জায়ফল। লিভার ও কিডনি থেকে টক্সিন দূর করে জায়ফল। শরীর থেকে দূষিত পদার্থ বের করে স্বাস্থ্য ভালো রাখে জায়ফল। দাঁতে হওয়া ডেন্টাল ক্যাভিটিজ, মাড়ির রোগের জন্য দায়ী ক্ষতিকারক ব্যাক্টেরিয়াকে মারতে সক্ষম অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল গুণসম্পন্ন জায়ফল। মুখের দুর্গন্ধ দূর করে জায়ফল। অ্যান্টিমাইক্রোবায়াল ও অ্যান্টিইনফ্লেমটরি গুণসম্পন্ন জায়ফল ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখতেও দারুণ উপকারী। জায়ফল গুঁড়ো ত্বকের ঔজ্জ্বল্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। ধুলোবালি, ময়লা জমে ত্বকের বন্ধ হওয়া মুখ খুলে দিয়ে ব্রণ, মেচেতা আটকায় জায়ফল। জায়ফলে থাকা এসেন্সিয়াল অয়েলের রিজুভিনেটিং গুণ থাকায় অকালে ত্বকের বুড়িয়ে যাওয়া আটকায়। তাই রাতারাতি ত্বকের ঔজ্জ্বল্য ফিরে পেতে অল্প পরিমাণে জায়ফল গুঁড়ো, অল্প দুধ আর এক টেবিল চামচ অ্যালোভেরা জেল মিশিয়ে একটা মিশ্রণ বানিয়ে মুখে, হাতে-পায়ে লাগিয়ে রাখুন। মিনিট দশেক পর জলে ধুয়ে ফেলুন।

গুরুত্বপূর্ণ তথ্য: জায়ফলে পাওয়া যায় পটাসিয়াম, তামা, ম্যাঙ্গানিজ, ক্যালসিয়াম, দস্তা, লোহা, ম্যাগনেসিয়ামের মতো খনিজ পদার্থের পাশাপাশি ফলিক অ্যাসিড, ভিটামিন সি, নায়াসিন, রাইবোফ্ল্যাভিন, ভিটামিন এ আর ক্রিপ্টোজ্যানথিন, বিটা ক্যারোটিনের মতো ফ্ল্যাভোনয়েড অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস। দস্তা, ক্যালসিয়াম, কপার, ম্যাঙ্গানিজ যেমন বোন মিনারেল ডেনসিটি ভালো রাখে তেমনই লোহা রক্তে লোহিত কণিকার মাত্রা বাড়ায়। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট স্বাস্থ্যের জন্যও খুব উপকারী। এছাড়া জায়ফলে পাওয়া যায় ডায়াটারি ফাইবার, সায়ানিডিনের মতো প্ল্যান্ট পিগমেন্ট, ফেনিলোপ্রোপানয়েডস, টারপিনসের মতো এসেন্সিয়াল অয়েল, ফেরুলিক, ক্যাফেইক অ্যাসিডের মতো ফেনোলিক কম্পাউন্ড। অল্প পরিমাণে জায়ফল গুঁড়ো ব্যবহার করবেন। বেশি পরিমাণে করলে হীতে বিপরীত অর্থাৎ উপকারের চেয়ে অপকার হবে। কেন না, জায়ফলে পাওয়া যায় মিরিস্টিসিন আর সাফ্রোল নামে এক ধরনের পদার্থ যা হ্যালুসিনেশন তৈরি করতে পারে।

Related Articles