‘রাক্ষুসে’ টিউমারের জটিল অস্ত্রোপচার, তিন বছরের শিশুর প্রাণ বাঁচাল এসএসকেএম
SSKM Docs remove large tumor

The Truth of Bengal: দক্ষিণ ২৪ পরগনার মথুরাপুরের বাসিন্দা দীপশিখা হালদার। বয়স মাত্র তিন মাস। জন্মের পর থেকে তেমন কিছু খেতে পারছিল না। যা খাচ্ছিল, তার অধিকাংশ বমি হয়ে যাচ্ছিল। কমে যাচ্ছিল ওজন। স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে দেখানো হয়েছিল, কিন্তু তেমন কোনও সূত্র মেলেনি। শিশুর ওজন দেখা যাচ্ছিল কমে যাচ্ছে। এরপরেই তাঁকে নিয়ে আসা হয় এসএসকেএম হাসপাতালে। শুরু হয় পরীক্ষা নিরিক্ষা। তাতেই চোখ কপালে ওঠে চিকিৎসকদের।
একটি প্রকাণ্ড রাক্ষুসে টিউমার বাসা জমিয়েছে পেটে। তার চাপে কিনডি নেমে গিয়েছিল কুঁকচির কাছে। এমনকী টিউমারের একটি অংশ চাপ সৃষ্টি করেছিল খাদ্যনালীতে। চিকিৎসকদের ভাষায় এই বিরল টিউমারের পোশাকি নাম রেট্রোপেরিটোনিয়াল টেরাটোমা। টেরাটন, এই গ্রিক শব্দের অর্থ রাক্ষস। তার থেকেই এই টিউমারের নামকরণ টেরাটোমা।
চিকিৎসকদের মতে, এই টিউমারের কারণে, শিশুর পেটে কোনও খাবার যাচ্ছিল না। যার স্বাভাবিক ওজন হওয়ার কথা চার থেকে সাত কেজির মধ্যে, সেখানে শিশুটির ওজন ছিল মেরেকেটে তিন কেজি। অপারেশনের পর, যে টিউমারটি বেরিয়েছে, তার ওজন দেড় কেজি।
চিকিৎসকদের দাবি, এই টিউমার যেমন বিরল তেমনই এতো ছোট শিশুর অরাপেশন করাও ছিল যথেষ্ট ঝুঁকিপূর্ণ। এই অস্ত্রোপচারের দায়িত্বে ছিলেন এসএসকেএম হাসপাতালের শিশুশল্য বিভাগের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর ডা. সুজয় পাল। অপারেশন টিমে ছিলেন ডা. অনীক চৌধুরি, ডা. সাবির আহমেদ। অ্যানাস্থেশিয়ার দায়িত্বে ছিলেন ডা. সঙ্গীতা মণ্ডল।
ডা. সুজয় পাল জানান, টিউমারটি ছিল পেটের ভিতর রেট্রোপেরিটোনিয়াম অংশে। সাধারণত এই ধরনের মাংসপিণ্ড ওভারি বা ডিম্বাশয়ে দেখা যায়। কিন্তু রেট্রোপেরিটোনিয়াম অংশে চোখে পড়ে না সচরাচর। মাংসপিণ্ডটি এমন একটা জায়গা দখল করেছিল, যার জেরেই খেতে পারতন না। তার ফলেই স্বাভাবিক বৃদ্ধি হার থেমে গিয়েছিল। পেটটিও ফুলে থাকত সবসময়। এই টিউমারের ফলে, শিশুটিতে শ্বাসকষ্টতেও ভুগতে হচ্ছিল। চিকিৎসকদের দাবি, এই ধরণের টিউমার আসলে জার্ম সেল থেকে তৈরি হয়। অস্ত্রোপচারের পর শিশুটি আপাতত সম্পূর্ণ সুস্থ।