জেআইএস-এর উদ্ভাবনীমূলক কাজে উৎসাহ ও স্বীকৃতি
Encouragement and recognition for JIS's innovative work

Truth Of Bengal: রাহুল চট্টোপাধ্যায়: তাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলির ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতের নতুন উদ্যোগপতি হিসাবে গড়ে তোলার প্রচেষ্টার কর্মসূচির অঙ্গ হিসাবে জেআইএস গ্রুপ আয়োজন করেছিল আইডিয়াজ্যাম অনুষ্ঠানের।
কলকাতার ধনধান্য প্রেক্ষাগৃহে আয়োজিত ওই অনুষ্ঠান বাস্তব-বিশ্বের ব্যবসায়িক অন্তর্দৃষ্টি দিয়ে পড়ুয়া ভবিষ্যতের উদ্যোক্তাদের প্রবলভাবে অনুপ্রাণিত করে শার্ক ট্যাঙ্ক থেকে স্টার্টআপ এরিনা পর্যন্ত গেম-চেঞ্জিং ইনসাইট প্রকাশ অনুষ্ঠান হয়ে ওঠে।
জেআইএস গ্রুপ অত্যন্ত সফলভাবে আইডিয়া-ও-মিটার এর আয়োজন করে চলেছে যার এবছরের সর্বশেষ সংস্করণ আইডিয়াজ্যাম- সরল চিন্তাভাবনা, বড় সমাধান। এই অনুষ্ঠানে ব্যবসায়িক জগতের কিছু প্রখ্যাত ব্যক্তি একত্রিত হয়েছিলেন, যার মধ্যে ছিলেন বোট এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং সিএমও আমান গুপ্ত, কনটেন্ট কোম্পানির পরামর্শদাতা মনীশ পান্ডে, ড্রাইভারস ফর মি-এর সহ- প্রতিষ্ঠাতা এবং সিইও রাজর্ষি নাগ এবং আয়োজক জে আইএস গ্রুপের ডিরেক্টর জসপ্রীত কৌর। এই সফল উদ্যোক্তারা উদারভাবে তাদের অমূল্য অন্তর্দৃষ্টি এবং অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিয়েছিলেন অনুষ্ঠানে উপস্থিত পড়ুয়াদের সঙ্গে, যা উদীয়মান উদ্যোক্তাদের ব্যবহারিক জ্ঞান অর্জন এবং উদ্যোক্তার বাস্তব-বিশ্বের প্রয়োগগুলি অন্বেষণ করার একটি বিরল সুযোগ প্রদান করেছিল।
অংশগ্রহণকারীদের চিন্তা-উদ্দীপক আলোচনায় অংশগ্রহণ, শিল্পের অগ্রগামীদের কাছ থেকে ব্যবহারিক অন্তর্দৃষ্টি এবং সরাসরি অভিজ্ঞতা অর্জনের একটি অনন্য সুযোগ ছিল। তত্ত্বের বাইরে গিয়ে অনুষ্ঠানটি বাস্তব বিশ্বের চ্যালেঞ্জ এবং উদ্যোক্তা সাফল্যের জন্য অপরিহার্য কৌশলগুলি অন্বেষণ করে, ব্র্যান্ড গঠন, ব্যবসায়িক বৃদ্ধির জন্য ডিজিটাল সামগ্রীর ব্যবহার, কৌশলগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং বর্তমান প্রতিযোগিতামূলক পরিস্থিতিতে নেতৃত্বের ক্রমবর্ধমান ভূমিকার মতো বিষয়গুলি অন্তর্ভুক্ত করে।
শিল্প জগৎ এর নেতৃত্বরা উদারভাবে তাদের দক্ষতা- অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেন, ব্যবসায়িক জটিলতাগুলি নেভিগেট করার এবং বাস্তব জীবনের পরিস্থিতিতে উদ্যোক্তা নীতিগুলি প্রয়োগ করার জন্য অমূল্য নির্দেশনা প্রদান করেন। অন্তর্দৃষ্টিপূর্ণ অধিবেশনের পাশাপাশি, অংশগ্রহণকারীরা নেটওয়ার্কিং সুযোগগুলিতে অংশগ্রহণ করেন, সমমনা সহকর্মী এবং শিল্প বিশেষজ্ঞদের সাথে অর্থপূর্ণ সংযোগকে উৎসাহিত করেন। উদ্ভাবনের জন্য একটি অনুঘটক হিসেবে কাজ করে ওই অনুষ্ঠানটি সম্ভাব্য ধারণাগুলিকে আলোকিত করে।
শিক্ষার্থীরা তথ্য-চালিত কৌশল ব্যবহার করে নবায়নযোগ্য শক্তি, স্থায়িত্ব, স্বাস্থ্যসেবা, অটোমেশন এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ক্ষেত্রে উদ্ভাবনী সমাধান প্রদর্শন করেছে। জেআইএস গ্রুপের ডিরেক্টর জসপ্রীত কৌর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উদ্যোক্তাদের উৎসাহিত করার ক্ষেত্রে কাঠামোগত উদ্ভাবনের উপর জোর দেন। আইডিয়া-ও-মিটার প্ল্যাটফর্মটি এই ধারণাগুলিকে পরিমার্জন করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে, অতিথি এবং বিচারকদের কাছ থেকে প্রশংসা অর্জন করেছে যারা আজকের প্রযুক্তি-চালিত বিশ্বে উদ্যোক্তা মানসিকতার গুরুত্বের উপর জোর দিয়েছিলেন।
আইডিয়াজ্যাম ২০২৫ গবেষণা, উদ্ভাবন এবং প্রযুক্তি-চালিত সমস্যা সমাধানের প্রতি জেআইএস গ্রুপের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে, যা ভবিষ্যতের উদ্যোক্তা উদ্যোগের পথ প্রশস্ত করে। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে, জেআইএস গ্রুপের ডিরেক্টর জসপ্রীত কৌর ইভেন্টের প্রভাব সম্পর্কে উৎসাহ প্রকাশ করে বলেন, আইডিয়াজ্যাম তাত্ত্বিক জ্ঞান এবং ব্যবহারিক প্রয়োগের মধ্যে ব্যবধান পূরণ করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছিল। সফল উদ্যোক্তাদের একত্রিত করে, এমন একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করার লক্ষ্য ছিল যা শুধুমাত্র শিক্ষার্থীদের নয় বরং পরবর্তী প্রজন্মের ব্যবসায়ী , উদ্যোগিদের অনুপ্রাণিত এবং ক্ষমতায়িত করবে।
সফল উদ্যোগপতিদের ভাগ করা অন্তর্দৃষ্টি নিঃসন্দেহে উচ্চাকাঙ্ক্ষী উদ্যোক্তাদের আগামী র সাফল্যের যাত্রায় তাদের পথ দেখাবে। পরবর্তী উদ্ভাবনী মূলক কিছু করার জন্য উৎসাহ প্রদান করবে। তিনি বলেন জে আই এস গ্রুপ ও জে আইএস বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে বর্তমান পড়ুয়াদের ভবিষ্যতে কিছু করতে চাওয়া বা স্বপ্ন দেখা আগামীর শিল্পদ্যোগীদের সবসময় নতুন কিছু উদ্ভাবনী মূলক অভিনব বিষয় তৈরি করার জন্য উৎসাহ প্রদান করা হয় এবং কিছু অর্থ সহায়তাও করা হয়ে থাকে গবেষণার জন্য।
ড্রাইভারস্ ফর মি এর সহ প্রতিষ্ঠাতা তথা সিইও ২৭ বছরের ঝকঝকে তরুণ, রাজর্ষি নাগ বলছিলেন কিভাবে ডাইভারস ফর মি এর সূচনা হলো। তিনি তখন ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ ম্যানেজমেন্ট, আই ই এম এর শিক্ষার্থী। তাদের ফাইনাল ইয়ারের পরীক্ষা চলাকালীন তার এক সহপাঠীর সময়মতো গাড়ির চালক না পাওয়ার কারণে পরীক্ষা কেন্দ্রে আসতে দেরি হয়ে যায় ,সে পরীক্ষায় বসতে না পারার কারণে তার এক বছর নষ্ট হয়ে যায়। সেই থেকেই তার আরো এক সহপাঠী র সঙ্গে কথাবার্তা এবং চিন্তা করতে করতে এই ধরনের গাড়ির চালক পাওয়ার অ্যাপ এর কথা মাথায় আসে ,সেই থেকে তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু করতে থাকেন।
তারপরেই শুরু হয় ড্রাইভারস ফর মি — এই অ্যাপ। এই অ্যাপের মাধ্যমে ইচ্ছুক যেকোনো গাড়ির মালিক এবং গাড়ির চালক পরস্পরের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করতে পারেন। প্রথমে এই অ্যাপের রেজিস্ট্রেশন করতে হবে ।তারপরে যে কোন গ্রাহকের চাহিদা অনুসারে তাদের গাড়ি চালকের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করিয়ে দেয়া হয়। এই মুহূর্তে তারা অত্যন্ত সফলতার সঙ্গে কলকাতা ,দিল্লি এনসিআর, হায়দ্রাবাদ এবং বেঙ্গালুরুতে তাদের এই কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছেন , উত্তরোত্তর তাদের গ্রাহক সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
তাদের সঙ্গে যুক্ত যে সকল গাড়ির চালকরা আছেন তাদের সমস্ত তথ্যপঞ্জি তাদের চালক হিসেবে বিভিন্ন রেকর্ড, যথেষ্ট পরীক্ষা নিরীক্ষা করে তবেই তাদের নথিভুক্ত চালকের স্বীকৃতি দেওয়া হয়। সব সময় চেষ্টা করা হয় যে গাড়ির মালিক যারা চালক চাইছেন তাদের নিকটবর্তী এবং ভালো ব্যবহারসম্পন্ন দক্ষ গাড়ি চালককেই যোগাযোগ করিয়ে দিতে ।
ন্যূনতম তিন বা পাঁচ ঘণ্টা থেকে ১৫ দিন পর্যন্ত গাড়ির চালকের ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়। পাঠভবন স্কুলের ওই প্রাক্তনী দক্ষিণ কলকাতার বাসিন্দা রাজর্ষি নাগ এখন বছরের বেশিরভাগ বেঙ্গালুরু -হায়দ্রাবাদেই থাকেন।
ওখানে কাজের সম্ভাবনা অনেক বেশি। তিনি বলছিলেন পরবর্তীকালে তাদের ভাবনায় রয়েছে গাড়ি সংক্রান্ত সমস্ত ধরনের পরিষেবা প্রদান করা। যেমন গাড়ির বীমা, গাড়ির মেরামতির সংক্রান্ত বিভিন্ন পরিষেবা ,মোটর ভেহিকেল রেজিস্ট্রেশন সহ ইত্যাদি খুঁটিনাটি। একটা গাড়ি থাকলে তাকে রক্ষণাবেক্ষণ করার জন্য যা যা প্রয়োজনীয় তার সব কিছু পরিষেবা প্রদান। পরবর্তীকালে তাদের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ শহরেও পরিষেবা দেওয়ার ভাবনা রয়েছে বলে জানালেন ড্রাইভার ফর মি এর সহ প্রতিষ্ঠাতা তথা সিইও রাজর্ষি নাগ। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অভিনব- উদ্ভাবনী মূলক কাজের জন্য পড়ুয়ারদের পুরস্কার প্রদান করা হয়।