
The Truth of Bengal,Mou Basu: প্রতি বছরই নিত্য নতুন কিছু অভিনব থিম করে শহরবাসীকে চমকে দেয় বেহালার বড়িশা ক্লাব। এবছরও থিমে চমক লাগাতে প্রস্তুত বেহালার বড়িশা ক্লাব। সৃষ্টি ও ধ্বংসের খেলাকেই বড়িশা ক্লাবের পুজো মণ্ডপে ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে। বড়িশা ক্লাবের থিম এবার ভাঙাগড়া।পুজো কমিটির কর্মকর্তা অনিমেষ চক্রবর্তী জানান, মানুষের জীবনচক্রই হোক বা প্রকৃতির রূপ পরিবর্তন – নিরন্তর ভাঙাগড়ার খেলা। নদীর একপাড় ভাঙলে অন্যদিকে পাড় গজিয়ে ওঠে। তৈরি হয় নতুন জনপদ। দাবানলে জঙ্গল পুড়ে খাক হয়ে যায়।
বৃষ্টি হলে ফের নতুন প্রাণ জেগে ওঠে। জন্ম হয় গাছগাছালির। চারপাশে দেখা যায় সবুজের সমারোহ। ধ্বংস্তূপে মাথা তোলে কিশলয়। অনাবৃষ্টিতে খরার ভ্রুকুটি যেমন দেখা যায় তেমনই আবার অতিবৃষ্টি নিয়ে আসে প্লাবন। বন্যার জল নেমে গিয়ে রেখে যায় পলি। পলিমাটি খুবই উর্বর হয়। এগুলি প্রকৃতির স্বাভাবিক লীলাখেলা। কিন্তু মানুষ যখন হিংসায় উন্মুক্ত হয়ে নিজের সৃষ্টিকেই ধ্বংস করতে উদ্যত হয়। তখন তার ফল হয় খুব মারাত্মক। এ হল এক সর্বনাশের নেশা। হাতের সামনে যা আছে সেটাই ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়ার রোখ চেপে যায়।
এই ধ্বংসলীলার কাছে ভূমিকম্প, প্লাবন এসব তুচ্ছ। মানুষের আক্রোশ যে কতটা ভয়াবহ সেটা আমরা বুঝিয়েছি মণ্ডপের সামনে থাকা শিরচ্ছেদ হওয়া বুদ্ধ মূর্তির মাধ্যমে। বুদ্ধদেব শান্তির প্রতীক। রবি ঠাকুর লিখেছিলেন, ‘কর ত্রাণ মহাপ্রাণ আনো অমৃত বাণী।’মানুষ হানাহানির লড়াইয়ে সেই মহাপ্রাণকেও রেহাই দেয়নি। কিন্তু এর পরেও জীবনচক্র নিজের মতো ঘুরে চলেছে। ধ্বংসলীলা থেকে বাঁচতে মানুষের একমাত্র আশাভরসা এই খেলার যিনি নিয়ন্ত্রক সেই মহামায়া। নতুন প্রাণের আহ্বানে সাড়া দিয়েছেন মা। মায়ের মূর্তি ঘিরে তাই বীজ থেকে মাথা তুলেছে নতুন গাছ। সেই সৃষ্টি ও ধ্বংসের খেলাকেই মণ্ডপে ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে। আমাদের থিম এবার ভাঙাগড়া। থিম শিল্পী রিন্টু দাস।”
Free Access