প্রতীক্ষার অবসান, অবশেষে সন্দ্বীপে চালু হলো প্রথম ফেরি সার্ভিস
First ferry service resumes in Sandwip

Truth of Bengal: দীর্ঘ ৫০ বছরের প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে বাংলাদেশে সন্দ্বীপবাসীর জন্য অবশেষে চালু হলো প্রথম ফেরি সার্ভিস। প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস এ দিনটিকে ঐতিহাসিক উল্লেখ করে বলেছেন, “এতোদিন নিরাপদ যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকা সত্যিই লজ্জার। অবশেষে আমরা এই লজ্জা থেকে মুক্ত হলাম।”
সোমবার দুপুরে সন্দ্বীপ উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে আয়োজিত এক সমাবেশে তিনি ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে বলেন, “সন্দ্বীপ বাংলাদেশের অন্যতম উপকূলীয় দ্বীপ, অথচ এতদিন এর বাসিন্দাদের কাদা-পানি মাড়িয়ে ডিঙি নৌকা ও ছোট বোটে সমুদ্র পার হতে হতো। আজ সেই দুর্ভোগের অবসান হলো।”
সোমবার সকাল ৯টায় চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বাঁশবাড়িয়া থেকে প্রথম ফেরি ছেড়ে যায় সন্দ্বীপের গুপ্তছড়ার উদ্দেশে। এক ঘণ্টার যাত্রা শেষে ফেরিটি দ্বীপে পৌঁছালে ঘাটে অপেক্ষমাণ হাজারো মানুষ উল্লাসে সেটিকে স্বাগত জানায়। এই যোগাযোগব্যবস্থা শুধুমাত্র সন্দ্বীপ নয়, পুরো চট্টগ্রামের জন্যও এক নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, “স্বাধীনতার মাসে এ সুখবর দিতে পেরে আমি আনন্দিত। সন্দ্বীপের এই অগ্রযাত্রা নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।”
সমাবেশে নৌপরিবহন উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন ফেরিঘাটের নাম শহীদ মাহমুদুর রহমান সৈকত ও শহীদ সাইমুন হোসেন মাহিনের নামে করার প্রস্তাব দেন। তিনি বলেন, “দেশের সার্বিক উন্নয়ন তখনই সফল হবে, যখন প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের জন্যও নিরাপদ যোগাযোগ নিশ্চিত হবে। সন্দ্বীপে ফেরি চালুর আগে এখানে নৌঘাট দখলমুক্ত করতে হয়েছে, যা ছিল একটি কঠিন চ্যালেঞ্জ।”
সড়ক উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান জানান, “প্রধান উপদেষ্টার আন্তরিক উদ্যোগের কারণেই এই প্রকল্প বাস্তবায়ন সম্ভব হয়েছে।” তিনি বলেন, “গত আগস্টে আমি তাকে সন্দ্বীপের নারীদের কাদা মাটির মধ্য দিয়ে পারাপারের চিত্র দেখাই। তিনি তখনই বলেন, ‘এটা হতে পারে না, অবশ্যই সমাধান করতে হবে।’ কিন্তু এটি ছিল একটি কঠিন প্রকল্প, কারণ বাংলাদেশে সামুদ্রিক ফেরি চলাচলের অভিজ্ঞতা নেই।”
সন্দ্বীপবাসীর জন্য এই ফেরি শুধু একটি যানবাহন নয়, বরং এটি নতুন জীবনের প্রতীক। ব্যবসা-বাণিজ্য, চিকিৎসা, শিক্ষা এবং দৈনন্দিন যাতায়াত এখন আরও সহজ হবে। দীর্ঘদিনের প্রতীক্ষার পর সন্দ্বীপের মানুষ আজ সত্যিই নতুন ভোরের সূচনা দেখল।