সংসদে পেশ ‘এক দেশ এক ভোট’ বিল, পক্ষে ভোট ২৬৯, বিপক্ষে ১৯৮
'One Nation, One Vote' bill presented in Parliament, votes 269 in favor, 198 against

Truth Of Bengal: লোকসভায় পেশ হল ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’ বিল। বিল পেশের পক্ষে ভোট পড়ে ২৬৯টি, বিপক্ষে ভোট পড়ে ১৯৮টি। পাশাপাশি ধ্বনি ভোটও হয় লোকসভায়। সরকার পক্ষের আনা এই বিলের প্রতিবাদে তুমুল বিক্ষোভ ইন্ডিয়া জোটের। এক জোট বেঁধে বিরোধীরা সরব হয় এই বিল নিয়ে। বিরোধীদের বক্তব্য, একনায়কতন্ত্রের পথ প্রশস্ত করতে এই বিল আনা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার মন্ত্রিসভায় পাস হওয়া বিলটি সংসদে তোলার কথা ছিল সোমবার। কিন্তু, একদিন পিছিয়ে বিলটি মঙ্গলবার বিলটি পেশ করা হয়।
কেন্দ্রের শাসক দল চায়, এক দেশ এক ভোট। অর্থাৎ গোটা দেশে একসঙ্গে হবে লোকসভা ও বিধানসভার নির্বাচন। সেই নীতি কার্যকরের লক্ষ্যে গত বছরের ১ সেপ্টেম্বর প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের নেতৃত্বাধীন একটি কমিটি গড়েছিল নরেন্দ্র মোদি সরকার। রাষ্ট্রপতির কাছে সেই কমিটির ১৮ হাজার পাতার রিপোর্ট জমা পড়েছে অনেক আগেই। দেশে একসঙ্গে লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচন করতে সংবিধানের শেষ পাঁচটি অনুচ্ছেদ সংশোধনের সুপারিশ করা হয়েছে এই রিপোর্টে। এবার এই নীতি বিল আকারে পেশ হল সংসদে।
দুই কক্ষে এই পাস করিয়ে আইন করে আগামী ২০২৯ সালে এক দেশ এক ভোট নীতি কার্যকর করতে চায় কেন্দ্র। কেন এই ভাবনা? এই প্রসঙ্গে কেন্দ্রের যুক্তি ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’ হলে খরচ কমবে অনেকটাই। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে খরচ হয়েছিল ৬০ হাজার কোটি টাকা। সেই টাকায় সেরে নেওয়া যাবে বিধানসভা ভোটও। নির্বাচনী আচরণবিধির জন্য থমকে থাকবে না উন্নয়ন। প্রশাসনিক দক্ষতা ও কার্যক্ষমতাও বাড়বে অনেকাংশে। এছাড়াও আর অনেক যুক্তি তুলে ধরা হয়েছে কেন্দ্রের তরফে।
তবে এই বিল নিয়ে তৃণমূল, সিপিএম, কংগ্রেস-সহ বিরোধী দলগুলি গোড়া থেকেই আপত্তি করে আসছে। বিরোধীদের অভিযোগ, রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক ক্ষমতায় নিজেদের একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করতে ‘এক দেশ, এক ভোট’ আনতে চায় কেন্দ্রের শাসক দল। যা যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো এবং সংসদীয় গণতান্ত্রিক ভাবনার পরিপন্থী।
গত বৃহস্পতিবার ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’ নীতির ছাড়পত্র দেয় কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। তারপর মঙ্গলবার বিল হিসেবে পেশ করা হয় সংসদে। বৃহস্পতিবার এই নীতি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সভার ছাড়পত্র পাওয়ার পর ফের একবার সরব হয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর বিরোধী এক দেশ, এক নির্বাচন বিল। বুলডোজ করে বিলটিতে অনুমোদন দিয়েছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। এই বিলের তীব্র বিরোধিতা করা হবে। দিল্লির স্বৈরতন্ত্রের সামনে মাথা নত করা হবে না। কেন্দ্রের শাসক দল চাইছে বিলটি পাস করাতে। অন্যদিকে বিরোধীরা একযোগে এই বিলের বিরুদ্ধে লড়াই চালাচ্ছে।