
The Truth of Bengal: বাংলার ঐতিহ্যের আঁতুরঘরে রয়েছে মিষ্টি।সৌজন্য বিনিময় থেকে শুভ কাজ সবেতেই মিষ্টি লাগে।রূপোলি পর্দাতেও সুরের ছন্দে ধরা দেয় এই মিষ্টির কথা।সোনার খাঁচা সিনেমায় অর্পণা সেন,সুরেলা কন্ঠে বলেন, বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে অনুসঙ্গ হিসেবে মিষ্টির কথা বলেন।শোনা যায়, মিষ্টি মিষ্টি মিষ্টি,এ কোন অপরূপ সৃষ্টি। সাহিত্যেও মিষ্টি শব্দটির নানামুখী ব্যবহার এতো বেশি হয়েছে যে শব্দের দিক থেকে ‘মিষ্টি’ বলতে যা বোঝায় তা সাহিত্যের পাতা থেকে খুঁটে খুঁটে বের করে তুলে ধরতে দীর্ঘ সাধনা ও গবেষণা প্রয়োজন৷মিষ্টি খুব প্রিয় ছিল রবীন্দ্রনাথের। কবির জন্য প্রায়ই নানা ধরনের মিষ্টি তৈরি করতেন মৃণালিনী দেবী। চিঁড়ের পুলি, দইয়ের মালপো, পাকা আমের মিঠাই ইত্যাদি।
কবিপুত্র রথীন্দ্রনাথ লিখেছেন, “বাবার ফরমাশ মতো নতুন ধরনের মিষ্টি মাকে প্রায়ই করতে হত। সাধারণ গজার একটা নতুন সংস্করণ একবার তৈরি হল। তার নাম দেওয়া হল ‘পরিবন্ধ’।শুধু পরিবারের অনুষ্ঠানেই নয়,ভোজনরসিক বাঙালির নানা কাজে এই মিষ্টির ডাক পড়ে। দেদার খাওয়ার শেষে শেষপাতে মিষ্টি ছাড়া চলে না। বাংলায় কত না হরেক মিষ্টি আছে।বাংলার মিষ্টিকে দুভাগে ভাগ করেছেন সুকুমার সেন।প্রথমভাগে রয়েছে একেক উপাদানে তৈরি মিষ্টি।এই মিষ্টিতে গুড় বা চিনির সঙ্গে কিছু মেশানো হয় না।যেমন গুড় বা চিনির নাড়ু,পাটালি,খাজা।আর দ্বিতীয় ভাগে রয়েছে সন্দেশ,মণ্ডা,রসগোল্লা,রসমালাই,মতিচুর লাড্ডু। যাঁরা রসিকজন তাঁরা নানান এই মিষ্টির সম্ভার দেখে বলছেন,ঘ্রাণেণ অর্ধং ভজন্তী।
অর্থাত্ গন্ধেই যেন পেট ভরে যায় মিষ্টিপ্রিয়দের।যাঁদের সুগার রয়েছে তাঁরাও এখন সুগারফ্রি মিষ্টি খাচ্ছেন।মুখের মিষ্টি মনের সম্পর্ককেও আলাদা ছোঁয়া দিচ্ছে। রাবড়ি, দইয়ের মতোই বাঙালির আহারের বাহার বাড়ায় আরও কিছু মিষ্টি।যাঁদের তালিকা বলে শেষ করা যাবে না।একএকটি জায়গার মিষ্টির বিশেষত্ব রয়েছে আলাদা। যাঁরা বহরমপুরের ছানাবড়া তৈরি করছেন তাঁরা এই মিষ্টির অভিনবত্বের কথা তুলে ধরলেন আমাদের কাছে। এখানেই শেষ নয়, বাঙালির রকমারি মিষ্টির সম্ভারের তালিকায় রয়েছে,শান্তিপুরের নিখুঁতি,মালদহের কানসাট,গুপ্তিপাড়ার গুপো সন্দেশ,আলিপুরদুয়ারের কমলাভোগ,পশ্চিমমেদিনীপুরের মুগের জিলিপি, বা বিষ্ণপুরের মতিচুরের লাড্ডু।তবে সনাতন মিষ্টি সংস্কৃতির ধারক –বাহকরা বলছেন,খাঁটি ছানা টেস্টি মিষ্টির বিকল্প আর কিছু নেই।