
Truth Of Bengal: সঞ্জয় ব্যানার্জী: শিবপুজো সবথেকে সহজতম পুজো। কিছু সামান্য ব্রত পালনের মধ্যেই শিবের পুজো সমাপন হয়। শিবপুজোয় এত অল্প দ্রব্যের প্রয়োজন হয় তা অন্য কোন দেব-দেবীর পুজোয় লাগে না। আমরা জানি শিবের অনেক নামের মধ্যে এক নাম আশুতোষ। এই আশুতোষ নামের অর্থ হচ্ছে তিনি খুব অল্পতেই সন্তুষ্ট। ভোলানাথ যাঁকে অল্পতেই ভোলানো সম্ভব। অর্থাৎ তিনি সাদামাটা একজন মানুষ। যিনি ভোলাভালা, আশুতোষ।
এই শিবরাত্রি ব্রত পালনের প্রধান সময় হচ্ছে রাত। সারারাত শিবের পুজো হয়। চার প্রহরে শিবের চারটি রূপের পুজো হয়। এই চার রূপের পুজোয় লাগে চার প্রহরের রাত। ভক্তগণ এই চার প্রহরে চার উপকরণ দিয়ে দেবাদিদেব মহাদেবের পুজো নিবেদন করেন। চারটি দ্রব্যের দ্বারা চারপ্রহরের পুজো হয়।
প্রথম প্রহরের পুজোয় মহাদেবের প্রথম রূপের পুজো করা হয়। সমগ্র চার প্রহরের পুজোয় লাগে যথাক্রমে দুধ, দধি অর্থাৎ দই, ঘৃত বা ঘি আর মধু। যে সব শিবভক্ত শিবের পুজো করেন তাঁদের কিছু নিয়ম পালন করতে হয়। শিবপুজো বা শিব চতুর্দশী ব্রত পালনের প্রধান হচ্ছে সংযম। এই পুজোয় ভক্তকে সারাদিন উপবাস থাকতে হয়। পবিত্র গঙ্গাস্নান করে সংযম থেকে সারারাত জেগে চারপ্রহরের শিববাসর করতে হয়। এই শিববাসর হচ্ছে শিবের সঙ্গে রাতজাগা। শিবের সঙ্গে বাসর জাগা। এই পুজো পুরুষ ও নারী উভয়েই করতে পারেন। পুজোর উপকরণে লাগে বিল্লপত্র বা বেলপাতা ও সামান্য ভাল গন্ধযুক্ত কামিনী আতপ চাল।
তিনি একটি বেল পাতাতেই তুষ্ট। চারপ্রহরের পুজো সমাপ্ত হলে ভক্তরা প্রথম খাবেন শরবত যা বেলের বা লস্যিও হতে পারে। কখনই গাঁজা, মদ এইসব উত্তেজক পানীয় নয়। ব্রত পালনের দিন অর্থাৎ শেষের দিন আতপ চালের খিচুড়ি ভোগ প্রসাদ হিসাবে খাওয়া।
অনেক রাজ্যে নিয়ম আছে, শিবপুজোর আগে দিন পুরুষ ভক্তগণ ক্ষৌরকর্ম পালন করেন। মাথার চুল ফেলে দিয়ে টিকি রেখে মুণ্ডন মস্তকে গঙ্গার জল বা পবিত্র নদীর জলে স্নান করে পুজোয় বসেন। ওঁ নমঃ শিবায় শান্তায়। এই মহামন্ত্রে মহাদেবের পুজো হয়।
মহাদেব হচ্ছেন পরম বৈষ্ণব। তিনি শান্ত ও ধীর। আমাদের শেষ গতি দেবাদিদেব মহাদেবের আশ্রয়স্থল। সব বিপদ থেকে ভক্তকে তিনি রক্ষা করেন তাই তিনি বিপদভজ্ঞক। তাঁর সাঙ্গপাঙ্গো হচ্ছে ভূত-প্রেত। মানুষের মৃত্যুর সময় তাঁরই দূতেরা এসে আমাদের এই মায়াময় জগৎ থেকে উদ্ধার করে সেই ভূতনাথের পদপ্রান্তে পরম শান্তির জন্য নিয়ে যান।