Bengali Muse: বাঙালি কবিতা-গানে প্রেয়সীকে খোঁজে
রবীন্দ্র পরবর্তীতে জীবনানন্দের কবিতায় বনলতা সেন বা অরুণিমা সান্যাল এক প্রতীকী চির ভাস্বর প্রেমিকা চরিত্র হয়ে উঠেছে।
বিশ্বজিৎ ঘোষ: রবীন্দ্রনাথ বাংলা সাহিত্য এবং গানের জগতে একটা যুগ। তবে তাঁর কবিতায় নারীচরিত্র মিথ হয়ে ওঠেনি। তবে রাণু কিংবা লাবণ্য, বিনোদিনী অন্য লেখনিতে মিথ হয়ে উঠেছে। কিন্তু কাব্য সমগ্র ‘মানসী’ এবং গানে ওগো বিদেশিনি এক একটা প্রতীক হয়ে উঠেছে। কিন্তু নিজের মানসপ্রিয়ার মতো হয়ে ওঠেনি। রবীন্দ্র পরবর্তীতে জীবনানন্দের কবিতায় বনলতা সেন বা অরুণিমা সান্যাল এক প্রতীকী চির ভাস্বর প্রেমিকা চরিত্র হয়ে উঠেছে। এবং ধীরে ধীরে এই বনলতা সেন এবং অরুণিমা সান্যাল কবিতার চরিত্র থেকে, সাহিত্যের প্রাঙ্গণ থেকে ব্যক্তিগত চরিত্রের দখলে চলে গেল। প্রেমিক-প্রেমিকার পত্রালাপে উঠে আসতো এই নামে সম্বোধন। ‘তুমি আমার বনলতা বা অরুণিমা সান্যাল’। বা ‘ইতি তোমার বনলতা বা অরুণিমা’। সময় যত এগিয়েছে কবি থেকে সাধারণ মানুষ এই চরিত্রগুলিকে আরও রক্ত মাংসের, নিজেদের মতো করে পেতে চেয়েছে (Bengali Muse)।
আরও পরুনঃ Weather Update: ঘূর্ণাবর্ত-অক্ষরেখার যুগল প্রভাবে রাজ্যজুড়ে বৃষ্টি, উত্তরে জারি সতর্কতা
বাংলা সাহিত্যের সব্যসাচী বুদ্ধদেব বসুর ‘তিথিডোর’ উপন্যাসের তিথি নাম একসময় বাঙালির ঘরের চরিত্র হয়ে ওঠার চল দেখা গিয়েছিল। তবু মন ভরছিল না।’কল্লোল’, ‘কালিকলম’-এর পরে ‘কৃত্তিবাস’ এর আমলে আর এক প্রেয়সী বাংলা সাহিত্যের রাজত্বে বহুদিন রাজকন্যা হয়ে থাকলো। কবি সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের কবিতার চরিত্র মনের পর্দা থেকে চোখের পর্দায় উঠে এল। প্রেমিকার নাম থেকে, গৃহনিলয়ের নাম থেকে চলচ্চিত্রের নাম পর্যন্ত যে নামে হল তা হল ‘নীরা’। নীরা তুই হারিয়ে যাস না, অনবদ্য নীরা, হঠাৎ নীলার জন্য কখন যেন একাত্ম হয়ে গেছে বাঙালির সঙ্গে। প্রায় সমসাময়িক না হলেও একটু পরের দিকে নীরা যে কখন তার প্রেয়সী থেকে ঘনিষ্ঠ প্রিয়া হয়ে উঠল বা ভেতর বাঙালি গিন্নি পাগলি হয়ে উঠল, তা বোধহয় সময়ের কালবেলারই খেলা (Bengali Muse)।
Truth of Bengal fb page: https://www.facebook.com/share/1ADtx3ZZeU/
শুধু কবিতা বা গান নয় ‘কালবেলা’ উপন্যাসের মাধবীলতা দীর্ঘদিন ধরে ভিক্টোরিয়া, আলিপুর জু বা পার্কের ঘুরে বেড়ানোর বহু প্রেমিকার সঙ্গে আত্তীকৃত হয়ে গেছে। সেই সত্তরের দশকের মুক্তির ফোয়ারা থেকে নব্বইয়ের দশকে টেলিফোনের ওপারে উঠে এল বেলা নামে। সঙ্গে এলো এক অসম্ভব মিলে যাওয়া টেলিফোন নম্বর। বেলা মানেই নিঃসঙ্গতার প্রেম। তবে একেবারে কৈশোর বয়সের জন্য গায়ক অঞ্জন দত্ত তুলে আনলেন আর এক চরিত্র ‘রঞ্জনা’। পরবর্তীতে গায়ক নচিকেতা সেই রঞ্জনা তুলে আনলেন ‘নীলাঞ্জনাতে’। একটু বয়স বাড়লে তা হয়ে গেল ‘পৌলমী’ বা ‘রাজশ্রীতে’। তবে এখানেই থেমে নেই, সোলো সং থেকে ব্যান্ডের গানে ‘ফসিলস’-এর দৌলতে তা কখনও হয়ে যায় আবার সেই ‘মানসী’ থেকে ‘তিলোত্তমাতে’। এই ভাবে বাঙালি চিরদিন কবিতা আর গানে তার প্রেয়সীকে খুঁজে বেড়ায় (Bengali Muse)।





