সম্পাদকীয়

ইচ্ছা শক্তি ও মনের জোরে অনন্য নজির

A unique example of willpower and strength of mind

Truth Of Bengal: ইচ্ছা থাকলে উপায় হয়। ইচ্ছা থাকলেই হবেনা। তার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।আর সেই চেষ্টা যদি আন্তরিক হয় তাহলে, সাফল্য অধরা থাকে না। অদম্য ইচ্ছাশক্তি আর মনের জোর থাকলে কী হতে পারে তা আবারও একবার করে দেখালেন নদিয়ার শান্তিপুরের ৬৪ বছরের বিশ্বনাথ প্রামাণিক। এই বয়সে তিনি পাস করেছেন এমএ।

ছোটবেলা থেকেই অনেক প্রতিকূলতার মধ্যে দিয়ে তাঁকে বড় হতে হয়েছে। নবম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনার পর আর্থিক কারণে বন্ধ করতে হয়েছিল পড়াশোনা। এরপর ২০১৬ সালে রবীন্দ্রমুক্ত বিদ্যালয় থেকে তিনি উচ্চমাধ্যমিক পাস করেছিলেন। অবিবাহিত জীবনে সংসারের বোঝা ছিল মাথায়। সেই কারণে সারাদিন চাষবাস করে তার ফাঁকে সময় বের করে পড়ে ফেলতেন একের পর এক বই। সংসারের খুঁটিনাটি সমস্ত কিছু সামলেও তিনি অদম্য ইচ্ছা শক্তি থেকে কখনও পিছিয়ে যাননি। কখনও প্রখর রোদ কখনও আবার প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যেও চাষের কাজ সামলে লাগাতার পড়াশোনাচালিয়েগিয়েছেন। হঠাৎ বিশ্বনাথবাবুর ইচ্ছা হয় এমএ পাস করবেন।

সেই ইচ্ছা বাস্তবায়িত করতে শান্তিপুর কলেজ স্টাডি সেন্টার নেতাজি সুভাষ মুক্ত বিদ্যালয়ের পরিচালক শিক্ষকদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। শুরু হয় পড়াশোনা। সব কাজ সামলে চালিয়ে যেতে থাকেন পড়াশোনা।পরীক্ষার পর দেখা যায়, বাংলা বিভাগে ৬৬ শতাংশ নম্বর পেয়ে এমএ-তে টপার হয়েছেন তিনি।আজ কাল নানা অজুহাত দেখিয়ে অনেকে পড়াশোনা ছেড়ে দিচ্ছে। বিশেষ করে উচ্ছমাধ্যমিক পাস করার পর উচ্চশিক্ষায় যাওয়ার প্রবণতা কমে যাচ্ছে। তাঁদের কাছে একেবারে আদর্শ বিশ্বনাথ বাবু।

সামর্থ্য না থাকলেও তাঁর ইচ্ছা ছিল। সেই সঙ্গে ছিল চেষ্টা।কঠোর অধ্যাবসায় দিয়ে আজ তিনি বৃদ্ধ বয়সে পাস করেছেন এমএ।এখন এই ডিগ্রি তাঁর পেশাগত কোনও কাজে লাগবে না। সেটা তিনি ভাল করে জানতেন। তাও স্বপ্ন ছিল তিনি এমএ পাস করবেন।সেই স্বপ্ন বাস্তবায়িত করেছেন আজ। বিশ্বনাথ বাবুর এই কীর্তি সত্যিই অনন্য নজির হয়ে গিয়েছে। তাই এলাকায় এখন সবার মুখে মুখে ফিরছে তাঁর নাম। বিশ্বনাথ বাবু এমএ পাস করে নিজের ইচ্ছা পূরণ করেছেন যেমন, তেমনই অন্য অনেকের কাছে অনুপ্রেরণা হয়ে দাঁড়িয়েছেন।

Related Articles