
Truth of Bengal: আকাশে –বাতাসে বিষণ্ণতার সুর।মর্ত্য থেকে কৈলাসে পাড়ি দিয়েছেন উমা। শাস্ত্র মেনে অনেকেই শনিবার বিসর্জন করেন। বাবুঘাটে হয় বনেদি বাড়ির প্রতিমা নিরঞ্জন। গঙ্গার অন্যান্য ঘাটেও বাড়ির পুজোর প্রতিমা বিসর্জন করা হয়। সিঁদুর খেলায় মাতেন এও স্ত্রীরা। বিষাদ বুকে নিয়ে সবার একটাই প্রার্থনা,আসছে বছর আবার এসো মা।
দুর্গার বিদায় বেলায় সবার চোখে জল।মন খারাপ নিয়েই ঘরের মেয়েকে বিদায় দিতে বাধ্য হন ভক্তরা।শাস্ত্র মতে,শনিবার দশমী।আর যাঁরা শাস্ত্রও ধর্মীয় রীতি মেনে চলেন,তাঁরা সময়ক্ষণ মেনে মাকে বিসর্জন করেন।বিশেষ করে বনেদি বাড়ির পুজোর আয়োজকরা শনিবারই মৃন্ময়ীকে গঙ্গায় বিসর্জন দেন।৪দিন চুটিয়ে আনন্দ করার পর বিদায় বেলায় সবার মন ছিল ভারাক্রান্ত।যেন ঘরের মেয়ের বাপের বাড়ি ছেড়ে যাওয়ার বিষাদ।
সেইমতো বাবুঘাট সহ অন্যান্য ঘাটে দেখা যায়,বিষাদ গ্রাস করেছে বিসর্জনকারীদের মধ্যে।শাস্ত্রীয় রীতি বলে,এই সময়ে দেবী নিজের বাপের বাড়িতে আসেন। দশমীর দিন তিনি আবার স্বামীর কাছে কৈলাসে ফিরে যান। দেবী যখন বাপের বাড়ি আসেন, তখনই তাঁর পুজো করা হয়। মর্ত্যলোকে দেবীর আরাধনার জন্য মূর্তি গড়া হয়। সেই মাটিক মূর্তিতে প্রাণ প্রতিষ্ঠা করা হয় পৌরাণিক রীতি মেনে।বিশ্বাস করা হয় দেবী তাতে অধিষ্ঠিত হন।
দশমীর দিন এই মাটির অবয়ব ত্যাগ করে তিনি ফিরে যান কৈলাসে স্বামীর কাছে। তখন মায়ের মাটির দেহ যেন প্রাণহীন হয়ে পড়ে।পরম্পরা মেনেই প্রাণের ঠাকুরকে তাই যখন গঙ্গা বা নদীতে বিসর্জন করা হয়, তখন যেন মর্ত্যের মায়েদের মন শূন্য হয়ে পড়ে।অনেকেই দিকশূন্যপুরের দিকে তাকিয়ে,বিষাদ অনুভব করেন।বিসর্জনের রীতি মেনে সিঁদুর খেলা আলাদা মাত্রা যোগ করে।
হাওড়া-কলকাতা শহরে ১৬টি ঘাটে নিরঞ্জনের জন্য নিরাপত্তা নজরদারি বাড়ানো হয়।প্রতিবারই গঙ্গা দূষণ রুখতে প্রতিমা পরার সঙ্গে সঙ্গে তা তুলে ফেলা হয়।যাতে ঠাকুরের রং বা সাজসজ্জা কোনও দূষণ না ছড়ায়।সেইমতো এবারও ক্রেনে করে প্রতিমা গঙ্গা থেকে তোলার ব্যবস্থা করেছে পুরপ্রশাসন। কলকাতা পুলিশ অঘটন রুখতে ঘাটে ঘাটে বাড়তি নজরদারি বহাল করে। চার দিনের পুজো এবার তিনদিনেই শেষ হওয়ায় অনেকের মনে আক্ষেপ রয়েছে।
তবে বারোয়ারি পুজো কমিটি বা শহরের বড় পুজো কমিটির আয়োজকরা ৪দিনই রীতি মেনে দেবী আরাধনায় মেতে রয়েছে।রাজ্য সরকারের তরফে জানা গেছে,বিশ্বজনীন উত্সবকে বিশ্ববাসীর দরবারে আলাদাভাবে তুলে ধরতে পুজো কার্নিভ্যালের আয়োজন করা হয়েছে।আগামী মঙ্গলবার অর্থাত্ ১৫অক্টোবর সময় বেঁধে প্রতিমা প্রদর্শনীর জন্য বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে বাংলার সরকার। ১৫ অক্টোবর নিরঞ্জনের সময়সীমা শেষ হচ্ছে।






