অফবিট

হেঁটে চলে বেড়ায় গাছ, কোথায় আছে এমন গাছ জানেন?

Big trees are walking around

The Truth of Bengal,Mou Basu: দিব্যি হেঁটে চলে বেড়াচ্ছে আস্ত বড়ো বড়ো গাছ। ভাবছেন আজগুবি গল্প শুনিয়ে রসিকতা করছি? আজ্ঞে না। হেঁটে চলে বেড়ায় আস্ত গাছ! এ কোনো রূপকথার গল্প নয়। ঘোর বাস্তবেই দেখা যায় এমন অভিনব গাছ। নাম তার ‘ওয়াকিং পাম ট্রি’। বৈজ্ঞানিক নাম Socratea exorrhiza। লাতিন আমেরিকার রেন ফরেস্টে দেখা মেলে ওয়াকিং পাম ট্রি’র। এটি এক প্রকারের পাম গাছ। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এই গাছ যত বড় হতে থাকে ততই এর ওয়াকিং বা কিছুটা হেঁটে চলার ক্ষমতা বাড়ে। এই মুভমেন্ট করার ক্ষমতা এই ওয়াকিং পাম গাছকে অন্য গাছের থেকে কিছুটা দূরে বীজ ছড়াতে ও নিজের বৃদ্ধি ঘটাতে সাহায্য করে।

কীভাবে হাঁটে ওয়াকিং পাম ট্রি?

উদ্ভিদবিদদের মতে, পাম গাছের গোড়ায় এরিয়াল রুট বা বাইরে বেরনো শেকড় দেখা যায়। এই শেকড় গাছের মুভমেন্ট বা নড়াচড়ার সময় স্টেবিলিটি বা স্থিতাবস্থা দান করে। বিশেষ এই শেকড় গাছের পা হিসাবে কাজ করে। বছরে কয়েক মিটার হাঁটতে পারে ওয়াকিং পাম ট্রি। এই বিশেষ রকমের শেকড় নড়াচড়ার সময় গাছকে বেশি করে সাহায্য করে যাতে গাছটি তাড়াতাড়ি নড়াচড়া করতে পারে। আবার বিশেষ শেকড় (এরিয়াল রুট) যখন অনেক লম্বা হয়ে যায় তখন তা নিজে থেকেই মাথার ডগায় ভেঙে পড়ে অন্য শেকড়কে বাড়তে সাহায্য করতে।
কত দূর হাঁটতে পারে ওয়াকিং পাম ট্রি?
কোনো কোনো গাছ বছরে ২০ মিটার পর্যন্ত আবার কোনো গাছ বছরে এক মিটার দূর পর্যন্ত এগোতে পারে। তাই অনেক সময় দেখা যায় যেখানে এই গাছের চারা বেরিয়েছিল সেখান থেকে বড়ো হওয়ার পর ১০০ মিটার দূরে আছে ওয়াকিং পাম ট্রি।

অন্য যে কোনো গাছের মতোই এই গাছের বেড়ে ওঠার পেছনেও বৃষ্টির জলের বড়ো ভূমিকা রয়েছে। আবহাওয়া কেমন রয়েছে তার ওপর নির্ভর করে এক একটা ওয়াকিং পাম ট্রি কত দূর হেঁটে হেঁটে এগোবে। কোনো কোনো গাছ কয়েক সপ্তাহে একবার আবার কোনো গাছ কয়েক মাসে একবার ধীরেসুস্থে এগোয়।

২৫ মিটার পর্যন্ত উচ্চতা হয় এই গাছের। একেবারে মগডালে পাতার তৈরি চুড়ো দেখা যায়। ৪ মিটার পর্যন্ত দৈর্ঘ্য হতে পারে পাতার। তবে গাছের গুঁড়ি সরু হয়, ব্যাস হয় ১৫-২০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত। রেন ফরেস্টের জীববৈচিত্র্যের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ওয়াকিং পাম ট্রি। এই গাছের পাতা খায় স্লথ ভাল্লুক, বাঁদর। গাছের গুঁড়িতে আশ্রয় নিয়ে বাঁচে প্রচুর পোকামাকড়, অমেরুদণ্ডী প্রাণী। পাতা দিয়ে বাস্কেট, ম্যাট্রেস, বাড়ির ছাউনি তৈরি করা হয়। কাঠ বাড়িঘর তৈরি ও জ্বালানির কাজে লাগে।