
The Truth of Bengal,Mou Basu: পোশাকি নামে ‘ক্যানো ক্রিস্টালস’। কেউ তাকে ডাকে লিকুইড রেনবো কেউ আবার বলে মেল্টেড রেনবো বলে। পাঁচ রঙা নদী কুলকুল করে বয়ে চলেছে কলম্বিয়ার সেরানিয়া ডে লা মাকারেনা ন্যাশনাল পার্কের মধ্যে দিয়ে। নির্দিষ্ট আলো পড়লে নদীর জলের ওপর ও নির্দিষ্ট জলের অবস্থায় স্পষ্ট করে জলের আলাদা আলাদা রঙ দেখা যায়। কখনো তা উজ্জ্বল সবুজ কখনো বা হলুদ, লাল, বেগুনি। কখনো আবার নদীর জলের রঙ দাঁড়ায় উজ্জ্বল নীল, হট পিঙ্ক, কমলা বা ডিপ মেরুন। এ নয় কোন ম্যাজিক না জাদু। এ ঘোরতর বাস্তব। এমনই অত্যাশ্চর্য নদী রয়েছে সুদূর লাতিন আমেরিকার কলম্বিয়ায়।বিশেষজ্ঞদের মতে, Macarenia clavigera নামক এক ধরনের বিরল জলজ উদ্ভিদ জন্মায় নদীর জলে। এটা কোনো শ্যাওলা নয়। এই জলজ উদ্ভিদের কারনে নদীর জল হয় এমন রঙিন। আলাদা আলাদা আলো পড়লে ও জলের অবস্থান আলাদা হলে একইসময় একইসঙ্গে নদীর জলের রঙ আলাদা দেখা যায়। এ নদী একেবারে স্বচ্ছতোয়া। নদীর জল এতটাই পরিষ্কার যে খুব ভালো করে দেখা যায় নদীর তলায় থাকা নুড়ি, পাথর, মাছ, জলজ উদ্ভিদ।
quartzite পাথরের কোলে জন্মায় ওই জলজ উদ্ভিদ। সূর্যের আলোয় খুব ভালো করে আলাদা আলাদা রঙ দেখা যায়। সবচেয়ে ভালো ভাবে নদীর আলাদা আলাদা রঙ দেখা যায় জুলাই থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত।জীবন্ত ক্যালাইডোস্কোপ বা রঙিন ক্যানভাসের মতো এই নদী সম্পর্কে স্থানীয় বাসিন্দাদের মত, আদতে স্বর্গের এই নদী পাঁচ রঙা হয়ে কুলকুল করে বয়ে চলেছে মর্ত্যে। বছরে সব সময় নয় খুব কম সময়ের জন্য দেখা যায় এই পাঁচ রঙা নদী।প্রত্যন্ত এলাকায় অবস্থিত এই নদী। বছরের বেশির ভাগ সময় নদীর তলদেশে দেখা যায় ঘন সবুজ রঙের জলজ উদ্ভিদ। বর্ষার সময় নদীর জলস্তর বাড়ে। সূর্যের আলো পৌঁছোয় নদীর তলদেশে। জলজ উদ্ভিদ, শ্যাওলা সব গরম হয়ে যায়। ভালো ভাবে ফুটে ওঠে তারা, বেড়ে উঠতে থাকে।
টকটকে লাল রঙের হয় বিরল প্রজাতির জলজ উদ্ভিদ Macarenia clavigera। তা হয় সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বরের মধ্যে।বিরল প্রজাতির এই জলজ উদ্ভিদের বৈজ্ঞানিক নাম হল Macarenia clavigera। এই জায়গা ছাড়া আর কোথাও দেখা যায় না এই জলজ উদ্ভিদকে। কতটা পরিমাণ সূর্যের আলো পৌঁছোচ্ছে আর অক্সিজেন কতটা পাচ্ছে তার ওপর রঙ বদলায় জলজ উদ্ভিদ।জীববৈচিত্র্যের অনন্য উদাহরণ হল কলম্বিয়ার সিয়েরা ডে লা মাকারেনা ন্যাশনাল পার্ক। কলম্বিয়ার বোগোটা শহর থেকে ১৭০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত এই পার্ক। আন্দিজ পর্বতমালা, আমাজনের জঙ্গল আর সবুজ লানোস উপত্যকা দিয়ে ঘেরা এই ন্যাশনাল পার্ক। বহু বছর জঙ্গি উপদ্রবের কারণে বন্ধ ছিল পার্ক। ২০০৯ সালে পুনরায় খোলা হয়।
Free Access