রাজ্যের খবর

অবহেলিত ফসলের জয়গান! হিঙ্গলগঞ্জে নারীদের অভিনব রান্না প্রতিযোগিতা

A celebration of neglected crops! Women's innovative cooking competition in Hingalganj

Truth of Bengal: মণ্টু সাহাজী, বসিরহাট: আধুনিক খাদ্যাভ্যাস ও বাজারমুখী কৃষির দাপটে যখন ঐতিহ্যবাহী দেশীয় শাকসবজি ও ফসল হারিয়ে যেতে বসেছে, ঠিক তখনই এক নজিরবিহীন পদক্ষেপ নিলেন সুন্দরবনের নারীরা। বসিরহাট মহকুমার হিঙ্গলগঞ্জ ব্লকের ৯ নম্বর স্যান্ডেলের বিল হাটে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হলো এক ব্যতিক্রমী ও প্রশংসনীয় রান্না প্রতিযোগিতা, যার মূল উপজীব্য ছিল অবহেলিত দেশীয় ফসলের গুণাগুণ ও ব্যবহারিক গুরুত্ব তুলে ধরা।

এই প্রতিযোগিতায় সুন্দরবনের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অংশগ্রহণ করেন গৃহিণী ও স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যারা। তাঁদের হাতে তৈরি পদগুলির মধ্যেই ছিল হারিয়ে যাওয়া ফসলের স্বাদ ও ঐতিহ্য — সজনে পাতার পুঁই চচ্চড়ি, খাম আলুর ঝোল, নোটে শাকের পিঠে, কচু শাক দিয়ে মাছ বা নিরামিষ ঝোল, ইত্যাদি।

এই প্রতিযোগিতার বিশেষত্ব ছিল, প্রতিটি অংশগ্রহণকারী শুধু রান্নাই করেননি, বরং প্রতিটি পদ পরিবেশনের সময় তার পুষ্টিগুণ, ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক প্রাসঙ্গিকতা তুলে ধরেছেন উপস্থিত দর্শক ও বিচারকদের সামনে। এতে প্রতিযোগিতাটি কেবল এক রান্নার আসর হয়ে থাকেনি, রূপ নিয়েছে এক সচেতনতামূলক প্রচেষ্টায়, যা ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে দেশীয় খাদ্যের গুরুত্ব বোঝাতে পারে।

উদ্যোক্তাদের মধ্যে ছিলেন শাহরুপ আলী, রিজু দে, অনির্বাণ ব্যানার্জি সহ একাধিক সমাজসচেতন মানুষ, যাঁরা জানান — এ ধরনের উদ্যোগ শুধু স্বাস্থ্য সচেতনতা বাড়ায় না, বরং খাদ্য নিরাপত্তা, কৃষি বৈচিত্র্য ও সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকারের রক্ষাতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

এই প্রতিযোগিতা ছিল এক নিঃশব্দ প্রতিবাদ — ফাস্ট ফুড ও রেস্তোরাঁ সংস্কৃতির বিরুদ্ধে, এবং একই সঙ্গে ছিল এক উজ্জ্বল বার্তা —“ফিরে চল দেশীয় শিকড়ে, সুস্বাদু ও স্বাস্থ্যকর জীবনধারার পথে।”

 

 

Related Articles