রাজ্যের খবর

রুক্ষকই ভক্ষক! সরকারি নিয়মকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বেআইনিভাবে নদীর চড় থেকে কাটা হচ্ছে ম্যানগ্রোভ

The rough is the eater! Mangroves are being illegally cut from the riverbanks, ignoring government regulations.

Truth of Bengal:  লাগাতার সরকারি প্রচারের পাশাপাশি বন দফতরের কড়া নজরদারি রয়েছে। কিন্তু সে সবের পরেও রক্ষা পাচ্ছে না সুন্দরবন। ধ্বংস করে ফেলা হচ্ছে ম্যানগ্রোভ অরণ্য। কেটে ফেলা হচ্ছে বিঘের পর বিঘে জমির গাছ। বিভিন্ন সময়ে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের হাত থেকে সুন্দরবনের প্রান্তিক এলাকার মানুষদের বুক চিতিয়ে রক্ষা করে আসছে সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ।  ম্যানগ্রোভ ধ্বংস করে তৈরি করা হচ্ছে কংক্রিট এর বাড়ি ও পুকুর। রাজ্যের মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ বাঁচানোর জন্য একাধিক পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে সুন্দরবনের উপকূল তীরবর্তী এলাকাগুলোতে রাজ্য সরকার ও বনদপ্তরের পক্ষ থেকে ম্যানগ্রোভ লাগানো হচ্ছে।

সরকারি নির্দেশকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বেআইনিভাবে নদীর চরে ম্যানগ্রোভ ধ্বংস করে কংক্রিটের বাড়ি নির্মাণ ও পুকুর খননের অভিযোগ উঠেছে রাজ্য পুলিশের এক হোমগার্ডের বিরুদ্ধে। মূলত আইনের রুক্ষকই নিজের স্বার্থে নির্বিচারে কাটছে ম্যানগ্রোভ। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার অন্তর্গত গঙ্গাসাগরের বঙ্কিমনগর এর চেমাগুড়ি বাজার সংলগ্ন বটতলা নদীর চর থেকে রাজ্য পুলিশের এক হোমগার্ড ম্যানগ্রোভ কেটে তৈরি করছে নিজের বাড়ি এবং পুকুর। গ্রামবাসীদের অভিযোগ পুলিশ কর্মীকে এই ম্যানগ্রোভ নিধন কর্মযজ্ঞের থেকে বিরত রাখার জন্য স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনকে জানিয়েও কোনো রকম সূরা হয়নি। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে এই ম্যানগ্রোভ নিধন কর্মযজ্ঞে শামিল বারুইপুর জেলা পুলিশের হোমগার্ড তপন মাইতি। স্থানীয়দের অভিযোগ, নদীর চড় থেকে বেআইনিভাবে ম্যানগ্রোভ কাটার জন্য তপন মাইতি কে বারবার বাধা দিয়েছে এলাকাবাসীরা কিন্তু তপন মাইতি এলাকাবাসীদের কোন বাঁধাকে তোয়াক্কা না করে দিনের পর দিন নদীর চর থেকে ম্যানগ্রোভ কেটে নিয়ে তৈরি করছে বাড়ি এবং পুকুর।

ম্যানগ্রোভ বাঁচানোর জন্য এলাকাবাসীরা গণ স্বাক্ষরের মাধ্যমে স্থানীয় প্রশাসন ও বন দপ্তরকে জানিয়েছে কিন্তু কোন সূরা হয়নি। এ বিষয়ে এক এলাকাবাসী বিশ্বজিৎ জানা বলেন, বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের পর বন দপ্তরের পক্ষ থেকে ও রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে নদী ভাঙ্গনের হাত থেকে এলাকাবাসীদের কে রক্ষা করার জন্য ম্যানগ্রোভ লাগানো হয়েছে। কিন্তু রাজ্য পুলিশের কর্মী তপন মাইতি নির্বিচারে ম্যানগ্রোভ ধ্বংস করে পুকুর খনন করছে এবং বাড়ি তৈরি করছে। আমরা বারবার প্রশাসনকে জানিয়েছি বনদপ্তরের আধিকারিকেরা এলাকা পরিদর্শন করে গিয়েছে। কিন্তু ম্যানগ্রোভ নিধন কর্মযজ্ঞ আটকানো যায়নি। এমনকি রাজ্য পুলিশের কর্মী তপন মাইতি গ্রামবাসীদের কে হুমকি দিয়েছে এমনকি মিথ্যা কে সে ফাঁসানোর হুমকি দেয়। আমরা চাই অবিলম্বে এই নির্বিচারে ম্যানগ্রোভ নিধন আটকানো।

গঙ্গাসাগর বকখালি ডেভেলপমেন্ট অথোরিটি ভাইস চেয়ারম্যান তথা দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলা পরিষদের সদস্য সন্দীপ পাত্র বলেন, “গ্রামবাসীদের অভিযোগ আমরা ইতিমধ্যে পেয়েছি আমরা এ বিষয়ে রাজ্যের সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী তথা সাগর বিধানসভার বিধায়ক বঙ্কিমচন্দ্র হাজরাকে জানিয়েছি। এমনকি বারুইপুর পুলিশ জেলার পুলিশ সুপারকেও এ বিষয়ে জানানো হয়েছে। বনদপ্তর কেউ আমরা জানিয়েছি। রাজ্যের মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেখানে নদী ভাঙ্গন রোধ করার জন্য সুন্দরবন উপকূল তীরবর্তী এলাকায় ম্যানগ্রোভ লাগানোর বার্তা দিচ্ছে সেখানে নিজ বিচারে ম্যানগ্রোভ কাটা আমরা কোনভাবেই  বরদাস্ত করবো না অভিযুক্ত পুলিশকর্মীর বিরুদ্ধে আইন আনুক ব্যবস্থারও আশ্বাস দিয়েছেন গঙ্গাসাগর বকখালি ডেভেলপমেন্ট অথরিটির ভাইস চেয়ারম্যান সন্দীপ পাত্র। এবার দেখার বিষয় কত দ্রুত পদক্ষেপ নেয় প্রশাসন এই ম্যানগ্রোভ নিধন কর্মযজ্ঞ আটকানোর জন্য।”

Related Articles