মাগুরায় নির্যাতিতা শিশুর মৃত্যু, ইউনুস সরকারকে দুষলেন বিনেপি মহাসচিব
BNP secretary general blames Yunus govt over death of child tortured in Magura

Truth of Bengal: ধর্ষণের শিকার হয়ে হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছিল মাত্র ৮ বছরের একটি শিশু। অবশেষে বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা মেডিকেলে তার মৃত্যু হয়। শিশুটির মৃত্যুতে ক্ষোভে ফেটে পড়ে স্থানীয় জনতা। অভিযুক্তদের বাড়িতে ভাঙচুর চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয় তারা। এই ঘটনায় সরকারের ব্যর্থতার অভিযোগ তুলে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, “দেশে আইনের শাসন না থাকায় ধর্ষণের ঘটনা আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। সরকার অপরাধীদের রক্ষা করছে বলেই এমন ঘটনা বারবার ঘটছে।”
৬ মার্চ সকালে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় মাগুরার ওই শিশুকে ফরিদপুর মেডিকেলে ভর্তি করা হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকা মেডিকেলে পাঠানো হয়। চিকিৎসার মাঝেই জানা যায়, শিশুটি তার দিদির শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে গিয়ে পাশবিক নির্যাতনের শিকার হয়। অভিযোগ, বোনের শ্বশুর, ভাসুর ও জামাইবাবু তাকে ধর্ষণ করে এবং তাকে গলা টিপে হত্যারও চেষ্টা চালায়। ভাগ্যক্রমে সে বেঁচে যায়, কিন্তু অবশেষে চিকিৎসার পরও তাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি।
বৃহস্পতিবার সকালে শিশুটির কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়। চিকিৎসকরা সিপিআর দিয়ে তাকে সুস্থ করার চেষ্টা করেন। কিছুক্ষণ স্বাভাবিক থাকলেও দুপুরে ফের কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হলে আর তাকে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়নি। দুপুর ১টার দিকে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়। সন্ধ্যায় নিজ গ্রামে তার দাফন সম্পন্ন হয়। শিশুটির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই উত্তেজিত জনতা অভিযুক্ত লিটু শেখ ও তার ছেলের বাড়িতে হামলা চালায়। শুক্রবার সকালেও তাদের বাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। স্থানীয়রা ঘরবাড়ি গুঁড়িয়ে দেয়, এমনকি গাছপালা পর্যন্ত কেটে ফেলে। পুরো এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
শুক্রবার সকালে বিএনপির নেতারা শিশুটির পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে যান। জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি আফরোজা আব্বাস শিশুটির মায়ের সঙ্গে কথা বলেন এবং ন্যায়বিচারের আশ্বাস দেন। তিনি বলেন, “আমরা এই পরিবারের পাশে আছি। এমন নৃশংস ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই, যাতে ভবিষ্যতে আর কোনো শিশুর এমন পরিণতি না হয়।”
আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল জানিয়েছেন, শিশুটির ময়নাতদন্ত করা হবে এবং আগামী পাঁচ দিনের মধ্যে ডিএনএ রিপোর্ট পাওয়া যাবে। সাত দিনের মধ্যে বিচার প্রক্রিয়া শুরু হবে বলে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
এদিকে, এখনও পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। স্থানীয় প্রশাসন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করছে। তবে সাধারণ মানুষের দাবি, অপরাধীদের দ্রুত গ্রেফতার করে কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করা হোক।