
The Truth of Bengal: বিশ্বকবি বসন্তের আবাহন করেছেন চির রঙিন মন নিয়ে। আমাদের অনুভবে রবি ঠাকুর এবং বসন্ত যেন এক অন্যের পরিপূরক। “রাঙিয়ে দিয়ে যাও” এই গান বাঙালিদের সত্যিই মন রেঙে দেয়। বিশ্বচরাচর এই ফাগুন রঙে প্রেমের জোয়ারেও ভালবাসায় ভরে ওঠে। প্রকৃতি চিরকাল নবীন থাকতে চায়,একেবারে চিরযৌবনা যুবতীর মত।পলাশ, শিমুল, আবিরের রঙে সেজে,আর আমাদের মনটাকে রাঙিয়ে দিয়ে যায়। প্রতিবছর ফাল্গুন মাসের প্রথমে শান্তিনিকেতনের পাঠভবনে বসন্ত ঋতুকে স্বাগত জানাতে পালন করা হয় বসন্ত আবাহন। শনবার সকালে বসন্ত আবাহন উৎসবে পাঠভবনের ছাত্র-ছাত্রীরা মিলিত হয়ে বসন্তের গান, নাচ উপস্থপনা করে শান্তিনিকেতনের আম্রকুঞ্জ জহর বেদিতে।
শান্তিনিকেতন গৃহ থেকে শোভাযাত্রা শুরু হয় “ওরে গৃহবাসী খোলদ্বার খোল লাগলো যে দোল” বৈতালিকের মধ্য দিয়ে। শোভাযাত্রার শেষে মূল অনুষ্ঠান শুরু হয় আম্রকুঞ্জের জহর বেদিতে।শোনা যায় ফাগুন লেগেছে বনে বনে,,, বলা যায়,রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছোট ছেলে শমীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৯০৭ ঋতু উৎসব করেছিলেন। সেটাই ছিল প্রথম বসন্ত উৎসব। শ্ৰী পঞ্চমীতে সেটা পালিত হয়। কারণ এই নিয়ে মতান্তর আছে। পরে মাঘী পূর্ণিমাতে, শ্রী পঞ্চমীতে শান্তিনিকেতনে একাধিকবার বসন্ত উৎসব হয়েছে।
১৯২৫ সালে শ্রী পঞ্চমীতে আম্রকুঞ্জে প্রথম বসন্তোৎসব পালন করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।শান্তিদেব ঘোষের সাক্ষ্য থেকে মনে হয়, সম্ভবত ১৯৩২ থেকেই ‘ওরে গৃহবাসী’ গাইতে গাইতে শোভাযাত্রার চল শুরু হয়েছিল। ১৯৩৪ সালে সেই গানের সঙ্গে জুড়ে গিয়েছিল নাচ। তিরিশের দশক থেকে বসন্ত-উৎসব উপলক্ষে কবিকে বিশেষ ভাষণ দিতেও দেখা যায়। কবির প্রয়াণের পরও বসন্তোৎসবের তাত্পর্য এতটুকু কমেনি।হেরিটিজ বিশ্বভারতীর ঐতিহ্যের সঙ্গে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে থাকা এই বসন্তের আবাহন প্রকৃতিপ্রেমীদের আনন্দের ছন্দে মাতোয়ারা করে তুলেছে বলা যায়।