রাজ্যের খবর

জলে কুমির ডাঙায় বাঘ! রোজগারের আশা কাড়ছে প্রাণ, কি বলছেন স্থানীয়রা

Tiger in water crocodile attack! The hope of earning is killing people, what are the locals saying

The Truth of Bengal: পেটের দায়ে মাছ-কাঁকড়া ধরতে গিয়ে অনেকেরই জীবন গেছে বাঘের পেটে। কারুর দাদার সামনে ভাইকে তুলে নিয়ে গেছে বাঘ, কেউ আবার স্বামী হারা হয়েছেন,শুধুই মানুষ খেকো রয়্যালবেঙ্গলের জন্য। জীবনযন্ত্রণার করুণ কাহিনী আমাদের সামনে তুলে ধরেছেন পাথরপ্রতিমার জি প্লটের বাসিন্দারা। সুন্দরবনের  আদিবাসী মহিলারা রোজগেরে পুরুষদের হারিয়ে এখনও দ্বীর্ঘশ্বাস ফেলেন। প্রশাসন তাঁদের  দিকে  সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়ায় তাঁরা ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াইতে মনোবল ফিরে পাচ্ছে।

সুন্দরবনে জল-জঙ্গলের মাঝে ওঁদের জীবন-জীবিকার ভাগ্য ঘোরাফেরা করে।বরাত জোরে কেউ বেঁচে গেলেও অনেকেই   জঙ্গলের কোর এরিয়ায় ঢুকে পড়লে আর ফিরে আসতে পারেন না। তখন নিথর দেহ ফিরে আসে। সুন্দরবনের মানুষদের  চোখের জলে বিদায় দিতে হয় স্বজনদের। শোক বুকে নিয়ে বাকি জীবনটা কাটিয়ে দিতে হয়। কেউ বাবা,কেউ দাদা আবার কেউ স্বামীকে হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েন। রোজগেরে মানুষটি সরে যাওয়ায় চোখে অন্ধকার দেখার জোগাড় হয় এইসব প্রিয়জন হারানো মানুষদের। সুন্দরবনের পাথরপ্রতিমার জি-প্লটের আদিবাসী মানুষগুলোর কঠিন জীবন সংগ্রাম এখনও দ্বীপ অঞ্চলের অন্দরের কথা তুলে ধরে। এই জি-প্লটের একটি ছোট্ট গ্রাম সত্য দাসপুর।এই গাঁয়ে রয়েছে ৩০৪ টি পরিবার ,জনসংখ্যা প্রায় ২হাজার। পুরুষ-মহিলা নির্বিশেষে সবাই রোজকার লড়াইতে রয়েছেন।মধু বা কাঁকড়া বাজারে বেচেই তাঁরা রোজগারের ঝুলি ভরান। কেন যান মৃত্যুপুরীতে ? বাঘের মুখে পড়ার ভয় কী কাজ করে না?

আগে অনেকে ট্রলারে যেতেন,এখন শরীর সায় না দেওয়ায় মাছ-কাঁকড়া ধরেই ক্ষুধা মেটান।খিদের জ্বালায় জীবনের কথা আর দ্বিতীয়বার ভাবার সুযোগই পান না। ছোট্ট জনপদের করুণ কাহিনীর কথা বুক দুরদুর কণ্ঠে আমাদের সামনে তুলে ধরেন রোজগেরে পুরুষরা। এরমধ্যে গাঁয়ের অনেকেই বাঘের পেটে চলে গেছেন। তবুও মানুষ খেকোদের মুখে  পড়তে হয় এই সত্যদাসপুরের বাসিন্দাদের,এটাই সত্যি এই জল-জঙ্গলে ঘেরা মুলুকের।

কয়েক বছরের মধ্যে ২২ জনকে ধরে  বাঘ এবং কুমিরে ,তার মধ্যে মারা গেছে ১৪ জন, ৩ জন নিখোঁজ আর ৫ জন বাঘের সঙ্গে লড়াই করে কোনমতে ফিরে এসেছে।এইসব অসহায় মানুষগুলোর দিকে কী প্রশাসন সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে  ?তাঁদের জীবনে কী ছোঁয়া লেগেছে মানবিকতার হাত? মাছ-কাঁকড়া ধরার নেশায় ঝুঁকি নিয়েও আদিবাসীরা এই  বিপদ-বলয়ে যান।তাঁদের সচেতন করার কাজ চলছে প্রশাসনের তরফে।আশা,নতুন প্রজন্ম লেখাপড়া শিখে এই জল-জঙ্গলের জীবনযুদ্ধের পথ বদল করে আধুনিক পথে ফিরে আসবে।

Related Articles