সন্তান লাভের আশাতেই স্বামী হারালেন স্ত্রী!

The Truth Of Bengal: প্রায় বছর চারেক আগে ছেলে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যায়। ছেলেহারা হয়ে পূর্ব মেদিনীপুরের চন্ডী পুরের ঘোষ দম্পতি সন্তান লাভের আশাতেই গিয়েছিলেন কটক। চিকিৎসার জন্য যেতে না যেতেই অন্য আরেক বিপদ ঘনিয়ে এল পরিবারে। উড়িষ্যার কটক থেকে ফেরার পথে বাস দুর্ঘটনায় স্বমী মনোজ’কে হারালেন অর্চনা।
কলকাতাতেই থাকতেন মনোজ ও অর্চনা। এখানেই মনোহরির দোকানে কাজ করতেন মনোজ। কিন্তু চার বছর আগেই তাঁর বছর চোদ্দোর ছেলেকে হারিয়ে গ্রামে ফেরেন দুজনে। সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন সন্তান লাভের। যাঁর কারণবশত কটকে চিকিৎসার জন্য গিয়েছিলেন দুজন। সেখান থেকেই ফিরছিলেন। তারপর এই দুর্ঘটনা! গুরুতর আহত হয়েছেন অর্চনা, এবং মৃত্যু হয়েছে স্বামী মনোজের।
সূত্রের খবর ওড়িশার জাজপুরের কাছেই ১৬ নম্বর জাতীয় সড়কের বরাবাটিতে নন্দকুমারীগামী বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। তারপর সেতু থেকে চালক সহ পড়ে যায় বাসটি। এবং এই ঘটনার জেরেই মনোজ ঘোষ সহ আরও বেশকিছু যাত্রীদের মৃত্যুর খবর উঠে আসছে। যাদের নাম ও পরিচয় ইতিমধ্যেই পাওয়া গিয়েছে তাঁরা হলেন, ভূপতিনগরের উড়উড়ির বাসিন্দা উত্তম বাসিন্দা (৪৭), এগরার বাসিন্দা অচিন্ত্য মাইতি (৬১) ও নন্দীগ্রামের খোদামবাড়ির বর্ণালী দাস(৪০)।
উত্তম বাবুর শরীর ঠিক হয়ে যাওয়ার আশা নিয়ে ভুবনেশ্বরে গিয়েছিলেন স্ত্রী নীলিমার সঙ্গেই। তা আর হল কই? চিরতরের জন্য স্বমী হারা হলেন নীলিমাও। তাছাড়া দুর্ঘটনার কবলে পড়ে নিজের হাত ও মেয়ের দাঁত-চোয়াল ভেঙেছে। গুরুতর জখম অবস্থার মধ্যেই তাঁদের’কে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।
কেও বা চিকিৎসার জন্য আবার কেউ নাতির মানসিকের পুজো দিতে গিয়েছিলেন সেইদিন। কে’ই বা জানত এই দুর্ঘটনার কথা? যা তাদের জন্য অপেক্ষা করছিল সেইদিন। জগন্নাথ দেবের কাছে নাতির মানসিক এর জন্য পুজো দিতেই গিয়েছিলেন এগরার দুবদা গ্রামের বাসিন্দা অচিন্ত্য বাবু। মানসিকের পুজো দিয়েছিলেন তাঁরা হৈহৈ করেই। কিন্তু ফেরার পথে ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনা আজ একরাশ হতাশার অবকাশ মাত্র। চিরতরের জন্য বাবাকে হারালেন ছেলে কমল মাইতি। পরিবার গুলির মাথায় ইতিমধ্যেই নেমে এসেছে শোকের ছায়া। শোকস্তব্ধ এলাকার বাসিন্দারাও।