রাজ্যের খবর

ত্রিপলের ছাউনি দেওয়া ঘরে বাস, হীরের দ্যুতি ছড়িয়ে DRDO-তে জুনিয়র বিজ্ঞানী হিসেবে সুযোগ

DRDO Scientist

The Truth of Bengal: ছোটবেলা থেকে স্বপ্ন ছিল দেশের সুরক্ষায় নিজেকে শামিল করার। দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই করে সেই স্বপ্ন এখন সফল। পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়ার সুদীপ মাইতি সুযোগ পেয়েছেন দেশের প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থা ডিআরডিও-তে। পাঁশকুড়া ব্লকের পুরুষোত্তমপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত মহম্মদমুরাদ মাইতিপাড়া এলাকার বাসিন্দা সুদীপ। বৃদ্ধ বাবা গোবিন্দ মাইতি। পেশায় রাজমিস্ত্রি। তিন ছেলে মেয়েকে নিয়ে অভাবের সংসার। তাই, জীবনভর একের পর এক অট্টালিকা নির্মাণের কাজে যুক্ত থাকলেও অভাবে নিজের একখান ঘর তৈরি করা হয়ে ওঠেনি গোবিন্দবাবুর। তবে কঠিন এই লড়াইয়ে পাশে দাঁড়িয়েছিলেন স্ত্রী নীলিমাদেবী।

ছেলেমেয়েদের পড়াশুনোর খরচ জোগাতে তিনি বিড়ি বাঁধতেন। এভাবেই দুই মেয়ের বিয়েও দিয়েছেন। আজও শতচ্ছিন্ন ত্রিপল ঘেরা বাড়িতেই সপরিবারে বসবাস। তাদেরই একমাত্র ছেলে সুদীপ আজ স্বপ্ন উড়ানের পথে। মেধাবী সন্তানের জন্য অসহায় বাবা জায়গা-জমি বিক্রি করে যতটা পেরেছেন পড়াশোনার খরচ জুগিয়ে গিয়েছেন। ছেলে সুদীপ ডিফেন্স রিসার্চ ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন বা DRDO-তে ডাক পেলেন। আজ ছেলের সাফল্যে তাঁর খুশির শেষ নেই। সুদীপের এই কঠিন লড়াইয়ে কিছুটা আর্থিক সাহায্য দিয়ে এগিয়ে এসেছিলেন চিলকা লালচাঁদ হাই স্কুলের শিক্ষক শান্তনু চক্রবর্তী-সহ শুভাকাঙ্ক্ষীরা।

সবাই জানতেই, এমন হিরের দ্যুতি ঠিক ছড়িয়ে পড়বেই। ছোট থেকেই পড়াশোনায় অত্যন্ত মেধাবী সুদীপ। কলকাতার একটি বেসরকারি কলেজ থেকে বিটেক করে এখন আইআইটি গুয়াহাটিতে এমটেক-এ পাঠরত। লক্ষ্য ছিল একটাই। দেশের সুরক্ষার প্রশ্নে ডিআরডিও-তে যোগদান করা। অবশেষে সেই সুযোগ মিলল সুদীপের। ডিআরডিও দেরাদুন থেকে জুনিয়র রিসার্চ ফেলোশিপের জন্য ডাক পেয়েছেন। ত্রিপল ঘেরা ঘর থেকে যাত্রা শুরু। নিজেকে নিয়োজিত করার সুযোগ পেলেন দেশের সুরক্ষায় নতুন কিছু করার। স্বপ্ন পূরণের অদম্য জেদ আর লড়াই দিয়ে একে একে সমস্ত ধাপ পার। অবশেষে সুযোগ মিলল ছোটবেলার দেখা সেই স্বপ্ন ছোঁয়ার।

Related Articles