রাজ্যের খবর

গঙ্গায় ডলফিন বা শুশুক বাঁচাতে বড় উদ্যোগ রাজ্য বন দফতরের

State Forest Department takes major initiative to save dolphins in Ganga

Truth Of Bengal: প্রকৃতির খামখেয়ালীপনা ও মনুষ্য সৃষ্ট উন্নয়নের ফলে প্রকৃতির ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে অনবরত। যার বিরূপ প্রভাব পড়ছে জীবজগতের উপর। পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে না পেরে বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে বহু প্রাণী। এবার সেই প্রাণী বিলুপ্তি রুখতে উদ্যোগ নিয়েছে রাজ্য বনদফতর।

গঙ্গায় মাঝে মধ্যেই দেখা পাওয়া যায় ডলফিন বা শুশুক। যা দেখতে ভিড় করে যান বহু দর্শক। এই প্রাণী ভারতের সরকারি জলজ প্রাণী হিসাবে স্বীকৃতি পেলেও গঙ্গা থেকে এই প্রাণী বর্তমানে প্রায় হারিয়ে যেতে বসেছে। তাই ডলফিন বা শুশুক, প্যাঙ্গোলিন আর ফিশিং ক্যাট যাতে বিলুপ্তির পথে না যায় তার জন্য উদ্যোগ নিচ্ছে রাজ্য বনদফতর। বনদফতরের তরফে চালানো হবে এক সমীক্ষা। সেই সমীক্ষা করার পরেই জানা যাবে এই সমস্ত প্রাণীদের জীবন কতটা বিপন্ন।

আসলে বিশ্ব উষ্ণায়নের জেরে এবং জলবায়ুর এই খামখেয়ালীপনা রাজ্যের বনাঞ্চলে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। বন্যপ্রাণীদের পাশাপাশি বনাঞ্চলেও এর প্রভাব পড়েছে যথেষ্ট। যা রুখতে একটি মেগা প্রকল্পের কাজ শুরু করেছে রাজ্য। আর এই প্রকল্পের কাজের অংশ হিসাবে শুশুক, প্যাঙ্গোলিন ও ফিশিং ক্যাট রক্ষায় বিশেষ নজর দিচ্ছে রাজ্য।

বনদফতরের তরফে জানানো হয়েছে বর্ধমান, হাওড়া, নদিয়া, মুর্শিদাবাদ সহ রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় গঙ্গায় মাঝে মধ্যেই দেখা যায় ডলফিন। তাই সেই সব এলাকায় নজরদারি বাড়ানোর জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। নজর রাখার কথা বলা হয়েছে স্থানীয় বাসিন্দাদের উপরেও। যাতে ডলফিন বা শুশুকের দেখা মেলার পর কেউ যেন তার ক্ষতি না করে। ডলফিনের সংখ্যা বাড়ানোর জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। পাশাপাশি প্যাঙ্গোলিন ও ফিশ ক্যাটের সংখ্যা বাড়াতে কৃত্রিম ভাবে প্রজনন ঘটিয়ে সেই প্রাণীকে ফের নদীর মধ্যে ছেড়ে দেওয়া হবে। বনদফতরের মতে গঙ্গা দূষণের ফলে মারা যাচ্ছে বহু ডলফিন।

গত পাঁচ বছরের মধ্যে বর্ধমানের কানলাতে প্রায় ১০ টির মতো ডলফিনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। মৎস্যজীবীদের মাছ ধরার জালে ডলফিন আটকেও অনেক ডলফিনের মৃত্যু হয়েছে। ডলফিনের মতো বহু প্যাঙ্গোলিনও মারা যাচ্ছে। এই প্রাণী সাধারণত পিঁপড়ে ও উই খেয়ে বেঁচে থাকে তবে নির্বিচারে গাছ কাঁটার ফলে ধীরে ধীরে কমে আসছে প্যাঙ্গোলিনের সংখ্যাও। অন্যদিকে আরও একটি বিলুপ্তপ্রায় প্রাণী হল ফিশিং ক্যাট। এদানিং কালে যেহেতু প্রাকৃতিক জলাশয় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে তাই মেছো বেড়ালের সঙ্গে মানুষের সংঘাতও বাড়ছে। আবার গাড়ি চাপা পড়েও মারা যাচ্ছে এই প্রাণী। সমীক্ষা করে দেখা গেছে কেবল হাওড়াতে ১৬ টির মতো মেছো বেড়ালের মৃত্যু হয়েছে পথ দুর্ঘটনায়। এবার এই সব বিষয়ের প্রতি নজর দেবে রাজ্য বনদফতর।

Related Articles