“অপারেশন সিঁদুরের” পর অনিশ্চয়তার ছায়া! রিষড়ার বিএসএফ জওয়ানের পরিবারে উদ্বেগ
Shadow of uncertainty after “Operation Sindoor”! Concerns in the family of BSF jawan from Rishara

Truth Of Bengal: রাকেশ চক্রবর্তী,হুগলি: পাকিস্তান রেঞ্জার্সের হাতে ধৃত রিষড়ার বিএসএফ জওয়ান পূর্ণম কুমার সাউয়ের মুক্তি নিয়ে চরম অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। ভারতীয় সেনার তরফে পাকিস্তান এবং সীমান্ত লাগোয়া জঙ্গি ঘাঁটিগুলিতে চালানো সাম্প্রতিক অপারেশন ‘সিঁদুর’-এর পর, উদ্বেগ আরও বেড়েছে পূর্ণমের পরিবারের।
১৫ দিন ধরে পাকিস্তানের হেফাজতে থাকা পূর্ণমকে ফিরিয়ে আনার সম্ভাবনা জেগেছিল, যখন পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় ভারতীয় সেনাও এক পাক রেঞ্জার্সকে আটক করে। তখন পরিবারে কিছুটা আশার আলো দেখা গেলেও, সেই আশাকে কার্যত নিভিয়ে দিয়েছে ভারতীয় সেনার জবাবি হামলা।
পূর্ণমের স্ত্রী রজনী সাউ এখন অন্তঃসত্ত্বা। একদিকে শারীরিক অবস্থা, অন্যদিকে স্বামীর বন্দিদশার খবর — দুটো মিলে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন তিনি। কান্নাজড়িত গলায় তিনি বলেন, “এখন তো মনে হচ্ছে ওকে আর ফেরত পাব না। যুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে, পাকিস্তান ওকে আর ছাড়বে না।”
রজনী কিছুদিন আগে নিজেই কলকাতার বিএসএফ হেড কোয়ার্টারে গিয়ে সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের সঙ্গে দেখা করে তাঁর স্বামীর ব্যাপারে অনুরোধ করেন। কিন্তু তাতেও এখনও পর্যন্ত কোনও সুরাহা হয়নি। এরপর তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দ্বারস্থ হতে চান। এই বিষয়ে তাঁকে সহায়তা করছেন তৃণমূল বিধায়ক বিবেক গুপ্তা, যিনি সম্প্রতি পূর্ণমের বাড়িতে গিয়ে পরিবারকে সমবেদনা জানান এবং মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগের ব্যবস্থা করার আশ্বাস দেন।
এই বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন প্রাক্তন সেনাকর্মীদের সংগঠনের সভাপতি মনোজ ব্যানার্জি। তিনি স্পষ্ট ভাষায় বলেন, “পূর্ণম কুমার সাউকে সুস্থ অবস্থায় ভারতের মাটিতে ফিরিয়ে আনতেই হবে। যদি তা না হয়, তাহলে পাকিস্তানকে তার পরিণতি খুব ভালোভাবে ভোগ করতে হবে। ভারত এবার চুপ করে থাকবে না।”
অপারেশন সিঁদুর নিয়ে গোটা দেশ উত্তাল। কিন্তু সেই উত্তাপের মাঝেই একজন সাধারণ পরিবার রিষড়ার ঘরে বসে দিন গুনছে প্রিয়জনের ফেরার। এই অনিশ্চয়তার ঘনঘোরে রজনীর প্রশ্ন—“রাজনীতি, যুদ্ধ, কূটনীতি—সব একপাশে। আমি শুধু চাই, আমার স্বামী যেন সুস্থভাবে ফিরিয়ে আনা হয়। আমার অনাগত সন্তানের যেন বাবাকে পায়।” এই মানবিক আর্তির পাশে দাঁড়াবে কি দেশ? সেই প্রশ্নই এখন রিষড়া থেকে প্রতিধ্বনিত হচ্ছে গোটা বাংলায়।