
The Truth of Bengal: কথায় আছে, ‘ঢেঁকি স্বর্গে গিয়েও ধান ভাঙে।’ কিন্তু সেই ঢেঁকিই তো এখন বিরল। সারা বছর অনাদরে পড়ে থাকলেও মকর সংক্রান্তির দিন পৌষ পার্বণে গুরুত্ব বাড়ে ঢেঁকির। বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ। এই তেরো পার্বণের অন্যতম পৌষ পার্বণ। আর পৌষ পার্বণ মানেই পিঠে-পুলি উৎসব। তবে এখন চাল গুঁড়ো করতে বেশিরভাগ মানুষ যন্ত্রের ওপর ভরসা করে। কারণ ঢেঁকি এখন আর খুব একটা দেখতে পাওয়া যায় না। বিরল হয়ে যাওয়া ঢেঁকি যেখানে যেখানে আছে সেখানে এখন চাল গুঁড়ো করার হিড়িক।
প্রত্যন্ত সুন্দরবনের বাকড়া ডোবরে গৌর মণ্ডলের বাড়িতে দেখা গেল ঢেঁকিতে চাল গুঁড়ো করার পালা চলছে। দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে গ্ৰামের লোকের ভরসা এই ঢেঁকি। রাত-দিন এক করে ঢেঁকিতে চাল গুঁড়ো করতে ব্যস্ত সবাই। কালের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে হারিয়ে যাচ্ছে আবহমান গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী ঢেঁকি। তবুও সুন্দরবনের গৌর মণ্ডলের বাড়িতে বছরের এই বিশেষ দিনে মা-কাকিমাদের ছোঁয়ায় ঢেঁকি যেনো জীবন্ত হয়ে ওঠে। কোচবিহারের আবার অন্যরকম ভাবে চাল গুঁড়ো করতে দেখা গেল।
কোচবিহারের ভবানীগঞ্জ বাজার সংলগ্ন পাওয়ার হাউজ মোড় এলাকায় রাস্তার ধারে সেই চাল গুঁড়ো করা হচ্ছে। অনেকটা হামান দিস্তার আদলে চাল গুঁড়ো হচ্ছে। সেখানে বসে চালের আটা বিক্রি হচ্ছে। বহু মানুষ কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। অনেক পরিশ্রমের পর চাল থেকে আটা তৈরি হয়। প্রতি কেজি সেই আটা বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা দরে। বাজারের গুঁড়ো করা চালের থেকে চোখের সামনে ঢেঁকিতে গুড়ো করা চাল কিনে যাচ্ছেন বহু মানুষ। ক্রেতারা জানাচ্ছেন, ঢেঁকিতে গুড়ো করা চালের মান বাজারের গুঁড়ো করা চালের থেকে অনেক ভাল।