রাজ্যের খবর

দীক্ষার নামে ভন্ডামি! শিষ্যাদের ধর্ষণের অভিযোগ ‘ইউটিউব বাবা’র বিরুদ্ধে, পুজোর পরেই শুনানি

Hypocrisy in the name of initiation! Students' rape allegations against 'YouTube Baba', hearing after Puja

Truth Of Bengal: Barsa Sahoo: সোশ্যাল মিডিয়ায় এক ‘বাবা’র ভিডিও দেখে অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন এক তরুণী। নিজের মায়ের সঙ্গে তার সঙ্গে পরিচয় করতে গিয়েছিলেন ওই তরুণী। তরুণীর ভক্তির সুযোগ নিয়ে তাকে ধর্ষণ করেন স্বঘোষিত ওই বাবা। ধর্ষিতার দাবি, ওই অভিযুক্ত ব্যক্তি তরুণীকে যৌন সম্পর্ক করতে বাধ্য করেছিলেন। এরপর তরুণী পুলিশের দ্বারস্থ হলে কোন লাভ হয়নি। উল্টে পুলিশের তরফ থেকে আসে বিষয়টি মিটিয়ে নেওয়ার প্রস্তাব। ঘটনার বিচার চেয়ে কোটের দ্বারস্থ হন নির্যাতিতা। শুক্রবার হাইকোর্টের প্রশ্ন, পুলিশ অভিযোগ পাওয়ার পরেও কেন কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি? এরপর বিচারপতি হিরণময় ভট্টাচার্য পলিসের কাছে তদন্তের অগ্রগতির রিপোর্ট চান। দুর্গা পুজোর পরে রয়েছে এই মামলার পরবর্তী শুনানি।

তরুণীর দাবি, ছোটবেলা থেকেই তিনি আধ্যাত্মিক। সর্বদাই আধ্যাত্মিকতায় বিশ্বাসী তিনি। সমাজ মাধ্যমে অনেক সাধুর ভিডিও দেখেন তিনি। সেই মতোই সমাজমাধ্যমে অনেক গুরুজীর ভিডিও দেখতে দেখতে হঠাৎ অভিযুক্ত ‘বাবা’র বক্তব্য শোনেন তিনি। তারপর ওই বাবার বক্তব্যে অভিভূত হয়ে তার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। থানায় তরুণীর দায়ক করা অভিযোগ অনুযায়ী জানা যায়, স্বঘোষিত ‘ ওই তরুণীকে সশরীরে হাজির হতে বলেছিলেন। ২০২৩ সালের মে মাসে বীরভূমের সিউড়ির রাজনগরে ওই ‘গুরু’র ডেরায় মাকে সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলেন তরুণী। সেই সময় ‘গুরু’র স্ত্রী তাঁদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেছিলেন বলে অভিযোগ। এরপর ওই ‘গুরু’র সঙ্গে তরুণী যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। সমাজমাধ্যমে ওই ‘গুরু’র প্রচুর ভিডিয়ো থাকার কারনে ভক্তরা তাঁকে ‘ইউটিউব বাবা’ বলে ডাকেন।

তরুণীর অভিযোগ, ‘গুরু’-র সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধের পর তিনি নিজে থেকেই তাদের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেন। নিজের আশ্রমে ওই তরুণীকে রাখতে চান। বাকি জীবন তার দায়িত্ব নেওয়ার কথাও জানান তিনি। ফলে অভিযুক্তের সঙ্গে তরুণীর যোগাযোগ বৃদ্ধি পায়। অভিযোগ, ২০২৩ সালের জুন মাসে দীক্ষা দেওয়ার নাম করে ওই তরুণীকে মুর্শিদাবাদের বেলডাঙায় ডেকে পাঠান তিনি।তাঁকে বিশ্বাস করে তরুণী সব নির্দেশ মেনে নেন। এরপর জোরপূর্বক তরুণীকে ধর্ষণ করেন বলেও অভিযোগ। এরপর, পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রামের একটি জায়গায় সহবাস করেন তাঁরা। ‘গুরু’ এরপর থেকেই তরুণীকে এড়িয়ে যেতে শুরু করেন। এরপর  খারাপ আচরণ করায় তরুণী শারীরিক এবং মানসিক ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন। টানা ২১ দিন ধরে হাসপাতালে তাঁর চিকিৎসা চলে। প্লাস্টিক সার্জারিও করা হয় বলেও খবর।

এরপর তরুণী পূর্ব বর্ধমানের মঙ্গলকোট থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযুক্তের আদি বাড়ি ছিল উত্তরপ্রদেশের বৃন্দাবনে। তরুণীর দাবি, এর আগে অনেক মহিলাকে যৌন সংসর্গে বাধ্য করেছেন ওই গুরু। শুধু তাই নয়, কয়েকজন নির্যাতিতা গর্ভপাত করাতেও বাধ্য হন। এই একই ধরনের মামলা পঞ্জাব এবং উত্তরপ্রদেশের মথুরাতেও তাঁর বিরুদ্ধে করা হয়েছে। থানায় অভিযোগ করার পর বিষয়টি মিটিয়ে নিতে চান অভিযুক্ত। তবে নির্যাতিতা তা মানতে রাজি হননি। শুক্রবার মামলাটি কলকাতা হাই কোর্টে ওঠে। এরপর বিচারপতি হিরণময় ভট্টাচার্য পলিসের কাছে তদন্তের অগ্রগতির রিপোর্ট চান। দুর্গা পুজোর পরে রয়েছে এই মামলার পরবর্তী শুনানি।

Related Articles